• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অশিক্ষা মৎস্য চাষ ব্যবস্থাকে কলুষিত করছে : মৎস্য প্রতিমন্ত্রী

  বাকৃবি প্রতিনিধি

১৮ জানুয়ারি ২০২০, ২১:১৩
বাকৃবি
বক্তব্য রাখছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ( ছবি : দৈনিক অধিকার)

মৎস্য চাষে অশিক্ষা আমাদের মাছ চাষ ব্যবস্থাকে কলুষিত করছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ডেনিস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলোপমেন্ট এজেন্সির (ড্যানিডা) অর্থায়নে ব্যাংফিস আয়োজিত সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তেলাপিয়া এবং পাঙ্গাশ মাছ সাধারণ মানুষের প্রোটিন। মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে মাছের খাবারের দাম কমাতে হবে। মৎস্য চাষে অশিক্ষা কলুষিত করছে আমাদের মাছ চাষ ব্যবস্থা। আমার মাছ আমিই খাব এটা ভেবে আমাদের উৎপাদন করতে হবে তাহলে মাছের গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে এবং দামও আশানুরূপ হারে বাড়বে।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘আপগ্রেডিং পাঙ্গাশ এন্ড তেলাপিয়া ভ্যালু চেইন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ফাইনাল স্টকহোল্ডার কনফারেন্সের মূল বক্তব্য প্রদান করেন ইউএসআইডির ‘ফিড দ্যা ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর ফিস’ এর বাংলাদেশের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর ড. এম. গোলাম হোসাইন।

তিনি জানান, ‘বর্তমানে দেশে ৫ লক্ষ টন পাঙ্গাশ ও ৪ লক্ষ টন তেলাপিয়া উৎপাদন হচ্ছে। দেশের মোট মাছ উৎপাদনের শতকরা ১০ ভাগ তেলাপিয়া ও শতকরা ১৩ ভাগ পাঙ্গাশ থেকে আসে। মাছের উৎপাদন বাড়ার সাথে সাথে কমে যাচ্ছে এর দাম। বর্তমানে দেশে মাছ উৎপাদন প্রায় ৪৩ লক্ষ মেট্রিক টন যা আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনের অতিরিক্ত। পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়ার দাম বাড়ানোর জন্য মূল্য ক্রমের উন্নয়ন, রপ্তানিযোগ্য করা এবং উৎপাদনের সঠিক ও আধুনিক মানোন্নয়ন ঘটাতে হবে। প্রজাতি ২টির সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে সুস্বাদু ও পুষ্টিমান ঠিক রেখে তা আমরা বিদেশে রপ্তানি করার পাশাপাশি দেশেই চাহিদা সৃষ্টি করতে পারি। চিংড়ির পরেই প্রজাতি দুটির বিদেশে রপ্তানির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।’

এ সম্মেলনে ব্যাংফিস প্রকল্পের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন এবং পরিচালনা বিভাগের ডিন অধ্যাপক বদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বাকৃবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. জসিমউদ্দিন খান, বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ মৎস্য বিভাগের মহাপরিচালক কাজী সামস আফরোজ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এবং ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোলজি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ব্যাংফিসের প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. ম্যাক্স নেইলসেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ডেনমার্কের সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন অধ্যাপক সহ বাকৃবি ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে ব্যাংফিসের ওয়াক প্যাকেজ-৩ এর টিম লিডার ও কৃষি অর্থসংস্থান বিভাগের অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান খান বলেন, ‘পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়া মাছের মাধ্যমে বিশ্বের মাছের বাজারে অবদান রাখার জন্য এই প্রোজেক্ট শুরু করা হয়। বিগত ২ দশকে পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়া মাছের হলুদাভ রং ও দূষণকারী পদার্থ বহনের জন্য চাহিদা খুবই কমে গিয়েছে। তাই মাছের হলুদাভ রং কমানো এবং স্বাদ বাড়ানোর জন্য এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল।’

সম্মেলনে ৫ বছর মেয়াদী এই প্রকল্পের ৩টি ওয়ার্ক প্যাকেজের অর্জিত সাফল্য ও অগ্রগতির ওপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিটি প্যাকেজেই বেশকিছু আশাব্যঞ্জক ফলাফল পাওয়া গেছে, যা পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়া মাছ চাষ, মাছ বিপন্ন ও রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। উৎপাদন ও খামারের ঘনত্ব, মাছের উৎপাদনশীলতা ও মুনাফাকে প্রভাবিত করে। খাবারের ও পানির গুণাগুণ, বিশেষায়িত উৎপাদন উপকরণে মাছের গুণাবলী, দাম ও চাহিদার ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।

আরও পড়ুন : দুধের ঘাটতি মেটাবে ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প

বাংলাদেশে পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়া মাছের চাষ পদ্ধতির আধুনিকায়ন করা, মাছের উৎপাদন খরচ কমানো, মোট উৎপাদন বৃদ্ধি, অরুচিকর গন্ধ দূর করে রুচিকর সুগন্ধযুক্ত সুস্বাদু, লাভবান ও রপ্তানিযোগ্য করতে ডেনিস ইন্টারন্যাশন্যাল ডেভেলোপমেন্ট এজেন্সির (ড্যানিডা) অর্থায়নে ব্যাংফিস এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

উল্লেখ্য, এর পূর্বে এ বিষয়ে আরও তিনটি কর্মশালা আয়োজন করা হয় এবং এ প্রকল্পের আওতায় স্নাতকোত্তর ও পিএইডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

ওডি/এমআরকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড