• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জাককানইবির নিয়োগ পরীক্ষায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ!

  জাককানইবি প্রতিনিধি

০৪ জানুয়ারি ২০২০, ২০:২২
জাককানইবি
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (ছবি : সংগৃহীত)

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষায় অস্বচ্ছতা ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

২০১৯ সালের মে মাসে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে ২০ পদের বিপরীতে ৩৫ জনকে নিয়োগ প্রদানের তথ্য পাওয়া গেছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৭ মাস পর গেল ২৭ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করে চিঠি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যেখানে সেকশন অফিসারের ২টি পদ স্থগিত রাখা হয়।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, উক্ত পদে আবেদনকারীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা থেকে শুরু করে শিক্ষক নেতা ও রাজনৈতিক নেতার মতো প্রভাবশালীদের প্রার্থী রয়েছে। ফলে নিয়োগ নিয়ে বিপাকে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এর ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই কর্তৃপক্ষ বুধবার (১ জানুয়ারি) মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের তারিখ প্রকাশ করে। পরীক্ষা নেওয়া পদগুলোর মধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ), সহকারী প্রকৌশলী (ইনস্ট্রুমেন্ট) এবং অডিটর পদে প্রত্যাশিত প্রার্থী উপস্থিত না থাকায় অংশ নেওয়া অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের অনুত্তীর্ণ দেখানো হয়।

অডিট অফিসার পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের পরিচিত ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদানে আর্থিক লেনদেনের খবরও পাওয়া গেছে। এছাড়া কম্পিউটার অপারেটর পদে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরও মৌখিক পরীক্ষার দিন নতুন করে ২৭ নম্বর রোল ধারীকে যুক্ত করা হয়। উপাচার্যের হস্তক্ষেপেই এই কাজ করা হয়েছে বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফল প্রকাশে একটু ভুল হয়েছে তাই সংশোধন করা হয়েছে। ভুল হলে প্রশাসন যে কোনো মুহূর্তে সংশোধন করতে পারে। আর আমরা সেটিই করেছি।

অন্যদিকে অডিট অফিসার পদে ৫০ নম্বর রোলধারী প্রার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের ভাই হিসেবে পরিচিত। পরীক্ষায় উক্ত শিক্ষক (সোহেল রানা) থাকবেনা বললেও ওই প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে শিক্ষক সোহেল রানা বলেন, ৫০ নম্বর রোলধারী আমার কোনো ভাই নয় আর আমি মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে থাকব না।

৫০ নম্বর রোলধারী প্রার্থী শফিকুল ইসলাম পরীক্ষার দিন সকালে মুঠোফোনে জানান, তিনি আজকের (১ জানুয়ারি) পরীক্ষা সম্পর্কে জানেনই না আর সোহেল রানা স্যার তার পরিচিত কেউ নয়। কিন্তু ফোনে কথা বলার দুই ঘণ্টা পর তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে দেখা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা বলেন, এবারের নিয়োগ পরীক্ষা লোক দেখানো ছিল। এই নিয়োগ উপাচার্যের পূর্ব নির্ধারিত ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা, শিক্ষক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে কয়েক কোটি টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন।

নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘প্রশাসনের সকল সিদ্ধান্ত উপাচার্য স্যারের নির্দেশ অনুযায়ী হচ্ছে। যারা লিখিত পরীক্ষায় চান্স পেয়েছে বেশিরভাগই ময়মনসিংহ অঞ্চলের, তাছাড়া আগে থেকেই ফোনে জানানো হয়েছে তাদের। যা হচ্ছে নিয়মের মধ্য দিয়েই হচ্ছে।’

নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে ড. হুমায়ুন বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমি অবগত নই। উপাচার্য স্যার সকল তথ্য দিতে পারবেন। আমার দেখা অনুযায়ী সকল কিছু নিয়মমাফিক হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, লিখিত পরীক্ষার ফলে তিনটি পদের কেউ উত্তীর্ণ হয়নি উল্লেখ থাকলেও বিজ্ঞপ্তিতে উত্তীর্ণ হতে কত নম্বর পেতে হবে তা উল্লেখ ছিল না।

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড