বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
তীব্র আবাসন সংকটে ভুগছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রাবাসের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচের বাইরেও গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, বশেমুরবিপ্রবির ১২ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে পাঁচটি হলে মাত্র ১ হাজার ৫০০ সিট রয়েছে।
ফলে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে বাধ্য হয়ে মেসে থাকতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের এই দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছেন বাড়িওয়ালারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দেশের যে কোনো জেলা শহরের তুলনায় গোপালগঞ্জে বাড়িভাড়া অনেক বেশি। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলেও বাড়িওয়ালারা তা মানছেন না। নীতিমালা অনুযায়ী দুই বছর পর ভাড়া বৃদ্ধির কথা থাকলেও গোপালগঞ্জে প্রতিবছর বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি পায়।
গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার বাড়িভাড়ার তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায় তিনজন থাকতে পারে এমন একটি কক্ষের ন্যূনতম ভাড়া প্রায় ৪ হাজার ৫০০ টাকা। দুইজনের একটি কক্ষের ভাড়া ন্যূনতম প্রায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা। একজন থাকার উপযোগী একটি কক্ষের ভাড়া প্রায় ৩ হাজার টাকা। এই উচ্চমূল্যের বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ইফতারুল হক শাহীন দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘একটি সিটের ভাড়া হিসেবে প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হয়। এই ভাড়া পরিশোধের জন্যই দিনের একটি বড় অংশ টিউশনিতে ব্যয় করতে হচ্ছে। ফলে পড়ালেখায় সঠিকভাবে মনোযোগ দিতে পারছি না।’
সরেজমিনে, বেশিরভাগ বাসাই নির্মাণাধীন অবস্থায় রয়েছে। সেখানে প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত না করেই বাসা ভাড়া দেওয়া হয়। এছাড়া, বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের এক বছরের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে হয়। যে কারণে সমস্যা হলেও বাসা ছাড়া সম্ভব হয় না।
এ বিষয়ে এক বাড়িওয়ালা জানান, ‘বাড়িভাড়ার টাকায় আমার পুরো পরিবার চলে। দ্রব্যমূল্যের দাম প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাড়া বাড়াতে হচ্ছে।’
বাড়িভাড়ার চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় বাড়িভাড়া নিয়ে বছরের মাঝামাঝি সময় ছেড়ে দেয়। তখন ভাড়াটিয়া পাওয়া যায় না তাই আমরা চুক্তি করি।’
বশেমুরবিপ্রবির মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম বলেন, ‘পড়ালেখায় সঠিকভাবে মনোনিবেশ করার জন্য একটি সুন্দর পরিবেশের প্রয়োজন হয়। কিন্তু যারা বিভিন্ন মেসে থাকে তারা বেশিরভাগই এই পরিবেশ পায় না। সেই সঙ্গে উচ্চ বাসা ভাড়া পূরণের জন্য তাদের আর্থিকভাবেও সমস্যার মুখোমুখী হতে হয়। যা মানসিক চাপ সৃষ্টি করে এবং হতাশাগ্রস্ত করে তোলে।’
বশেমুরবিপ্রবির ছাত্র কল্যাণ পরিচালক কাজী মসিউর রহমান বলেন, ‘আবাসন সমস্যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রধান সমস্যা। রাতারাতি এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। নতুন হল নির্মাণের পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থী সংখ্যাও কমাতে হবে। আগামী বছর থেকে প্রথম বর্ষে প্রতি বিভাগের আসন সংখ্যা ৪০ এ কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
ওডি/এসএমএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড