মামুন সোহাগ, জিটিসি প্রতিনিধি
কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ওয়্যারলেস প্রধান ফটক এরপর ফুটওভার ব্রিজের একপাশ। ব্রিজের নিজে প্রস্রাবের গন্ধে নাক সিটকে হাটতে হয়। হাটতে হাটতে জুতার নিচে কর্দমাক্ত কিছু লেপ্টে যায়। নিয়মিত প্রস্রাব করার ফলে আর পানি বের হতে না পেরে জমাট বেধে যায়।
এই দৃশ্য রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ (জিটিসি) সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজের নিচে। ব্রিজের উপরে চলে শিক্ষার্থীদের আড্ডা আর নিচে চলে প্রস্রাব! চোখে এই দৃশ্য দেখা যতটা বিশ্রী তার থেকেও বেশি বিব্রতকর।
সরেজমিনে, রাস্তা পারাপারের জন্য কেউ এই পদচারী সেতু ব্যবহার করেন না। তবে নির্জনতা ছিলো না সেখানে। শিক্ষার্থীরা জোড়ায় জোড়ায় বসে গল্পে মেতেছেন। আড্ডায় আড্ডায় কেউ কাটিয়ে দিচ্ছেন কয়েক ঘণ্টা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, ‘পুরো কলেজ খুঁজে এমন নিরিবিলি পরিবেশ পাবো না। তাই এখানে এসে বসি যতটুকু সময় পাই।’
ফুটওভার ব্রিজ থেকে নিচে নামতেই চোখ যায় ব্রিজের পিলারের আড়ালের থাকা অংশে। ফাইল হাতে একজন মধ্যবয়সী লোক প্রস্রাব করছেন। এটা প্রস্রাবের জায়গা কিনা জিজ্ঞাসা করার প্রতিউত্তরে তিনি বলেন, ‘বাবারে প্রস্রাব সিরিয়াস বিষয়। তাই এখানে ফাঁকা পেয়ে দাঁড়িয়েছি!’
তিতুমীর কলেজের তৃতীয় বর্ষের আব্দুর রাজ্জাক নামে এক শিক্ষার্থী প্রতিবেদককে বলেন, ‘যখন আমি ফুটওভার ব্রিজের পাশ দিয়ে হেটে যাই তখন আমার খুব খারাপ লাগে, যে এই জায়গাটা এত দুর্গন্ধ! আমরা একটা সাইনবোর্ড দিয়ে সকলকে মূত্রত্যাগ না করার আহ্বান জানাতে পারি।’
তিনি আরও জানান, ‘সেদিন কলেজের ক্লাস শেষে গেটের বাইরে দাড়িয়ে ছিলাম। চোখ যায় ফুটওভার ব্রিজের নিচে। দেখতে থাকি লোকজন আসছে, দাঁড়াচ্ছে, শিক্ষাপীঠের দেয়াল ঘেঁষে থাকা এই জায়গায় প্রস্রাব করে চলে যাচ্ছে। ৩০ মিনিটে ১৪ জন লোক এখানে প্রস্রাব করতে এসেছে। দুই জনকে থামাতে গেছি। মারমুখী হয়ে চলে এসেছি। কারণ আমি একা ছিলাম।’
গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন ক্যাম্পাস-তিতুমীরের নূর মোহাম্মদ সুমন বলেন, ‘আমরা এটি নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। যেহেতু ফুটওভার ব্রিজটা তিতুমীর কলেজ এরিয়ার বাহিরে, মেইন রোডে তাই এটা সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত। সেজন্য কলেজ অধ্যক্ষ আমাদের অনুমতি দিলে আমরা এই জায়গাটা পরিষ্কার করতে পারবো।’
শাহাদাত নিশাদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ঢাকা শহরে রাস্তাঘাটের পাশে টয়লেট খুবই সামান্য। নামমাত্র যতগুলো আছে সেখানেও প্রস্রাব করতে ৫-১০ টাকা করে নেওয়া হয়। যা নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা।’
এর আগে তিতুমীর কলেজ সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজ নিয়ে জাতীয় দৈনিক অধিকারে বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এতে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে অনীহা, জেব্রা ক্রসিং সংকট সহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়।
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড