জাককানইবি প্রতিনিধি
নিরাপত্তা চেয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) বারো (১২) সাংবাদিক ত্রিশাল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদকর্মীদের অনুসন্ধানে জালিয়াত চক্রের সদস্য স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির রহমানের ফাঁস হওয়া ৭ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ডে চক্রের মূল হোতা হিসেবে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শফিক খানের নাম উঠে আসে। যা নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে জাককানইবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নিহার সরকার অংকুরকে ভর্তি জালিয়াতিতে অভিযুক্ত শফিক খান মুঠোফোনে হুমকি প্রদান করে। সাংবাদিকতা কাকে বলে দেখিয়ে দেবারও হুমকিও দেয়। প্রেসক্লাবের পেইজে ও গ্রুপে কেন তার ছবি সহ নিউজ করা হয়েছে তা নিয়ে হুমকি প্রদান করে শফিক এবং দ্রুত সংবাদ ডিলিট না করলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
যার প্রেক্ষিতে রবিবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা ৩ টায় ত্রিশাল থানায় সাধারণ ডায়েরি ও নিরাপত্তা চেয়ে পৃথক দুইটি আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ সংবাদকর্মী। তন্মধ্যে একটি জাককানইবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক দেশ রূপান্তর এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নিহার সরকার অংকুর, নিজে যার জিডি নম্বর-৩৭০ এবং অপরটি প্রেসক্লাব এর সকল সংবাদকর্মীদের পক্ষে দপ্তর সম্পাদক আশিক আরেফীন, যার জিডি নম্বর-৩৬৯।
বারো সংবাদকর্মীরা হলেন- জাককানইবি প্রেসক্লাবের সভাপতি সরকার আবদুল্লাহ তুহিন (দৈনিক অধিকার), নিহার সরকার অংকুর (দৈনিক দেশ রূপান্তর), মো. ওয়াহিদুল ইসলাম (বাংলা ট্রিবিউন), ফজলুল হক পাভেল (দৈনিক আমাদের নতুন সময়), সিফাত শাহারিয়ার প্রিয়ান (ডিবিএন নিউজ), তিতলি দাস (দৈনিক খোলা কাগজ), আশিক আরেফীন (পিবিএ এজেন্সি), বায়েজিদ হাসান (দৈনিক আজকের খবর), ফারজানা সকাল (দৈনিক সংবাদ), হাবিবুল্লাহ আল মারুফ (দৈনিক আমার সংবাদ, দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস), আজিজুল হাকিম পাভেল (দৈনিক সমাচার), আশিকুর রহমান সৈকত (দৈনিক সময়ের আলো)।
নিরাপত্তা চেয়ে সাংবাদিকদের সাধারণ ডায়েরির গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ত্রিশাল থানার অফিসার ইনচার্জ আজিজুর রহমান।
এর আগে সকালে সংবাদকর্মীদের একটি প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে সাক্ষাত করেন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই সংবাদকর্মীরা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করেছে আর তাদের যে বা যারা হুমকি দেয় তাদের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রক্টরকে নির্দেশ দিয়েছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, ‘সম্প্রতি প্রক্সি দিতে আসা আটক হওয়া শিক্ষার্থীর বক্তব্য ও সাংবাদিককে হুমকি দেয়ার বিষয় গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ উক্ত বিভাগে (কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ) একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ত্রিশাল থানার ওসির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে তিনি সংবাদকর্মীদের ডায়েরি গ্রহণ করেছেন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের নিয়ম অনুযায়ীও যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।’
অন্যদিকে গেল ৫ ডিসেম্বর আটক হওয়া জালিয়াতি করে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী সহ অজ্ঞাত ৩ জনের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা দায়ের করেছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির রহমান (রোল-১৮১২৩৮৩৯) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক(সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার পূর্বে এক শিক্ষার্থীকে প্রক্সি প্রক্রিয়ায় ভর্তি করিয়ে দিবে -এমন একটি চুক্তি করার কথোপকথন রেকর্ড আকারে ফাঁস হয়। ৭ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের ওই অডিও রেকর্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শফিক খানের সংশ্লিষ্টতার কথা উঠে এসেছে। ফাঁস হওয়া রেকর্ডে বলা হয়েছে শফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উক্ত জালিয়াত চক্রের প্রধান সিন্ডিকেট।
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড