নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ছাত্রদের একমাত্র আবাসিক হল ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হল দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের জের ধরে হল বন্ধ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে করে দিন দিন বেড়েই চলছে আবাসন সংকট।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ৫টি হল। যার একটি কাজ এখনও শেষ হয়নি। চালু রয়েছে শুধু মেয়েদের দুটি হল।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি নোবিপ্রবির ২য় সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ও আচার্য আব্দুল হামিদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল উদ্বোধন করেন। নতুন হল উদ্বোধন হবার পর শিক্ষার্থীদের মাঝে আশার সঞ্চার হয়। কিন্তু উদ্বোধনের পর নানামুখী জটিলতায় শিক্ষার্থীদের হলে উঠাতে বিলম্ব হয়। অবশেষে ৭ মাস পর গত ২৩ সেপ্টেম্বর ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত আব্দুল মালেক উকিল হল থেকে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রীদের স্থানান্তরিত করা হয়। তাছাড়া ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সঙ্গে শুরু হওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রী হলের কাজ এখনও শেষ হয়নি। আর কবে নাগাদ শেষ হবে তারও কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছে না প্রশাসন।
ছাত্রলীগের সংঘর্ষে ছাত্রদের একমাত্র হলটি বন্ধ হয়ে ছাত্ররা এখন চরম দুর্ভোগে। হলের শিক্ষার্থীদের থাকতে হচ্ছে বন্ধুবান্ধবের মেসে। হলটি কবে চালু হবে এ ব্যাপারে প্রশাসন থেকে এখনও কিছুই জানানো হয়নি। তার ওপর হল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের আসতে হয় শহর থেকে। শিক্ষার্থী অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় বাদুড়ঝোলা হয়ে যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থীদের। এতে করে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র সারোয়ার জাহান আরাফাত বলেন, ‘আমরা যারা হলে ছিলাম হঠাৎ করে হল বন্ধ হওয়াতে নিরুপায় হয়ে চড়া দামে বাসা ভাড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে। সংঘর্ষের ঘটনায় হল বন্ধের দীর্ঘ দুই মাস পার হলেও ছেলেদের হল এখনও চালু হয়নি।’
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন বলেন, ‘একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল একজন ছাত্রের জীবনের রং বদলাতে সাহায্য করে। বিশ্বমননের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। কিন্তু নোবিপ্রবির ছাত্রদের জন্য সেরকম ইচ্ছা করাটাও বোকামি। একমাত্র ছাত্রদের হলটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার কারণে ছাত্রদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। যদিও অন্য একটি হল চালুর ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কার্যক্রম চলছে, যেটা অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে সেটির কার্যক্রম ধীর গতিতে না করে দ্রুত শেষ করা উচিত। এতে ছাত্রদের আবাসিক সমস্যা সামাধান করাটা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর দাবি।
তবে সদ্য নিয়োগকৃত ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের নতুন প্রভোস্ট ড. মো. আনিসুজ্জামানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ‘ইউজিসি ও অ্যাডুকেশন মিনিস্ট্রির অনুমোদন নিয়ে হল মেরামতের জন্য বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং অতি দ্রুত হল মেরামতের কাজ শুরু হবে। মেরামত শেষে ছাত্রদের হলটিতে উঠানো হবে।’
এ দিকে আবদুল মালেক উকিল হল ফাঁকা হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেখানে ছাত্রদের উঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। গত ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ২৩ অক্টোবর থেকে আবেদন শুরু হয়ে ৭ নভেম্বর আবেদনের সময় শেষ হয়।
আবদুল মালেক উকিল হলের প্রভোস্ট ড. ফিরোজ আহমেদ এ ব্যাপারে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৪০০টি আবেদন জমা পড়েছে। হলে মোট সিট ৪৫০টি। ছাত্রদের ভাইভা নিয়ে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ মাসের শেষে ছাত্ররা হলে উঠতে পারবে। এ সপ্তাহে ভাইভা নেওয়া শুরু হবে।
ওডি/এসএসকে
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড