ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ঈশা খাঁ ও ক্ষণিকা বাসে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন করা হয়।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আন্দোলন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমরা ছাত্ররা যখন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন করেছি আমরা তো কখনো বাসের কাঁচ ভাঙিনি, মানুষের মুখে মবিল বা কালি মেখে দেইনি। শ্রমিকদের যদি স্বার্থে আঘাত লাগে তারা আন্দোলন করতে পারে কিন্তু সেখানে কেন সাধারণ মানুষের মুখে কালি মেখে দিতে হবে? কেন গাড়িতে কালি মেখে দিতে হবে? কেন গাড়ির ওপর ভাঙচুর করতে হবে। এটি কোনো আন্দোলন নয়। এটি একটি নৈরাজ্য ও উসকানিমূলক আন্দোলন। আমরা জানি, এ পরিবহন সেক্টরকে কারা উসকিয়ে দেয়। অনেকে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য, সরকারকে একটি মেসেজ দেওয়ার জন্য তারা এ শ্রমিকদের রাস্তায় নামায়। যাতে সরকার তাদের স্বার্থ রক্ষা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তাঘাটে যেসব যানবাহন চলে তার ফিফটি পার্সেন্ট ফিটনেসবিহীন। ফোরটি পার্সেন্ট লাইসেন্সবিহীন। এই কারণে নতুন আইনে তারা যখন বুঝছে যে তাদের ব্যবসায় লস হবে তখন তারা এ আন্দোলনের সৃষ্টি করেছে। আন্দোলনের নামে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বাসে হামলা করেছে। এটি একটি নৈরাজ্য। সেখানে আমরা ভিডিওতে দেখেছি, একজন পুলিশ সেখানে ভিডিও করছেন। তিনি সেখানে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন অথচ তার দায়িত্ব ছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রক্ষা করা। তাই আমরা পরিবহন সম্পাদককে বলব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি মামলা না করে তিনি যেন ছাত্রদের পক্ষে বাদী হয়ে মামলা করেন আর যেন এই ঘটনা আর কখনো না ঘটে। আর যেন কেউ এ রকম দুঃসাহস না দেখাতে পারে।’
পরিবহন সম্পাদক শামস ঈ নোমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হামলা করা মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের ওপর হামলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং যারা এই হামলা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, এই হামলায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ অতিদ্রুত গ্রহণ করুন।’
এছাড়া মানববন্ধনে ডাকসুর সদস্য তিলোত্তমা শিকদার বলেন, ‘আমরা আপনাদের কথা দিয়েছিলাম আপনাদের সুখে দুঃখে প্রয়োজনে আপনাদের পাশে থাকব। আজকে যে বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি। আমাদের সে বিষয়ে একত্রিত হওয়ার কথা ছিল না। আজকে আমরা দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে এখানে একত্রিত হয়েছি। এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, বাসে হামলা মানে বাংলাদেশের সৃষ্টির পিছনে হামলা। আজকে আমরা আমাদের শান্তিপ্রিয় মানববন্ধনের মাধ্যমে ওই সকল শ্রমিকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই এ ধরনের ঘটনার স্পর্ধা আর কখনো যেন না হয়। এই ঘটনার ন্যায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের দাবি অব্যাহত রাখব। যদি আমরা এই ন্যায় বিচার না পাই আমরা রাজপথে নামব। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কোনো শিক্ষার্থীদের গায়ে কোনো দাগ লাগতে দিব না।’
এ দিকে মানববন্ধনের পর ডাকসু নেতৃবৃন্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে হামলায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হামলায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমি গত কালকে বলেছি আজকেও বলছি যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আমরা যেখানে ঘটনা ঘটেছে ওই থানায় মামলা করব।’
প্রসঙ্গত, বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে যাত্রীবাহী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঈশা খাঁ ও ক্ষণিকা বাস আসার সময় টঙ্গীতে ক্ষণিকা বাস ও সাইনবোর্ডে ঈশা খাঁ বাসে হামলা করে শ্রমিকরা। এ সময় শ্রমিকরা ঈশা খাঁ ও ক্ষণিকা বাসে ভাঙচুর করে এবং ঈশা খাঁ বাসের ড্রাইভারকে বাস থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
ওডি/এসএসকে
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড