• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

অকেজো অবস্থায় মেডিকেল যন্ত্রাংশ; দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

  জাককানইবি প্রতিনিধি, সরকার আব্দুল্লাহ্ তুহিন

১৪ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:৫৬
জাককানইবি
জাককানইবির মেডিকেল সেন্টার ‘ব্যথার দান’ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) মেডিকেল সেন্টার ‘ব্যথার দান’ এ অব্যবহৃত অবস্থায় অকেজো হয়ে আছে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মেডিকেল যন্ত্রাংশ! পর্যাপ্ত জনবল ও সঠিক পরিচর্যার অভাবে যন্ত্রাংশ ব্যবহার করতে না পারায় কাঙ্ক্ষিত সেবা পেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেন্টারে পর্যাপ্ত পরিমাণ ও প্রয়োজনীয় ওষুধ থাকে না, স্বল্পতার জন্য সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায় না, অপরিষ্কার, একইসঙ্গে মহিলা ডাক্তার বৃদ্ধির ব্যাপারে অভিযোগ করেন তারা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মেয়াদ শেষে নষ্ট হয়েছে ২৫ হাজার টাকার ল্যাবরেটরি সংশ্লিষ্ট ওষুধ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মেডিকেল সেন্টারের যন্ত্রপাতি ক্রয়বাবদ ব্যয় হয়েছে ৭ লাখ ৩৮ হাজার ৯২১ টাকা। পরবর্তী সময়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মেডিকেল যন্ত্রপাতি ক্রয় বাবদ ব্যয় করা হয় ৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। দুই মেয়াদে মোট ১৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকার ক্রয় করা যন্ত্রাংশগুলো ব্যবহার ছাড়া অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

বার্ষিক ওষুধ ব্যয় বাবদ বরাদ্দ রয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মেডিকেল সেন্টার দপ্তরের দাবি অনুযায়ী এটি প্রয়োজনের তুলনায় কম। প্রতিমাসে গড়ে ২৫ হাজার টাকার ওষুধ ক্রয় করা হয় বলে জানান সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। চারজন ডাক্তারসহ ১০ জন জনবল নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। নেই পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নার্স, ফার্মাসিস্ট ও ল্যাব পরিচালনার জন্যে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং ল্যাব পরীক্ষার জন্য প্যাথলজিক্যাল ডাক্তার। প্রথমবার ক্রয় করা যন্ত্রাংশ ব্যবহার না করলেও দ্বিতীয় মেয়াদে পুনরায় ক্রয় করা হয়েছে মেডিকেল যন্ত্রাংশ। সকল যন্ত্রাংশ অব্যবহৃত হয়ে অকেজো হয়ে যাচ্ছে।

ছবি

অব্যবহৃত অবস্থায় অকেজো হয়ে আছে মেডিকেল যন্ত্রাংশ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

মেডিকেল প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিষ্কার করতে নেই কোনো নিজস্ব পরিচ্ছন্নতা কর্মী। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশেই চলছে এর কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রায় অর্ধাংশ ছাত্রীদের জন্য মেডিকেলে নেই নারী নার্স। নারী ডাক্তারও রয়েছে মাত্র একজন। ৭ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছে মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি প্রদান, বিক্ষোভ করলেও এখন পর্যন্ত সংযোজন হয়নি নতুন অ্যাম্বুলেন্স।

মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ল্যাব পরিচালনার জন্যে টেকনিশিয়ান, ওষুধ প্রদানের জন্যে ফার্মাসিস্ট, সার্বক্ষণিক রোগীর পরিচর্যার জন্য নার্স প্রয়োজন এবং মেডিকেলের অন্যতম শর্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। তাই একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মীও আমাদের প্রয়োজন। এই সুবিধাগুলো পেলেই ভালো মানের চিকিৎসা প্রদান সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ছাড়া ল্যাব পরিচালনা অসম্ভব আর ল্যাবের যন্ত্রাংশ ব্যবহার না হলে নষ্ট হতেই পারে। ইতোমধ্যে মেয়াদ উর্ত্তীণ হয়ে ২৫ হাজার টাকার ল্যাবে ব্যবহার করার ওষুধ নষ্ট হয়েছে। ১৪ লাখ ৭৩ হাজার ৯২১ টাকার যে যন্ত্রাংশ ক্রয় করা হয়েছে, এসব ব্যবহার করার জন্য যা প্রয়োজন তা আমরা পাচ্ছি না। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও নতুন করে আরও দুই জন ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হলে ভালোভাবে মেডিকেল সেন্টার পরিচালনা সম্ভব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ও চাহিদা বিবেচনায় রেখে নিয়োগ ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। তবে ১৪ লক্ষাধিক টাকা এভাবে নষ্ট হওয়া অনুচিত। মেডিকেল সেন্টার থেকে দেওয়া চাহিদাপত্র অনুযায়ী তা বরাদ্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাই চাহিদা পাঠানোর সময় এই বিষয়টি অবগত হয়ে চাহিদা পাঠানো উচিত ছিল দপ্তরটির। প্রশাসন দ্রুতই এই সমস্যা সমাধান করবে।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড