• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মশার কামড়ে অতিষ্ঠ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা

  মো. রাকিবুল হাসান তামিম, ডিসি প্রতিনিধি

১০ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৫৬
ঢাকা কলেজ
মশার ভয়াবহ উপদ্রব (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ভরদুপুরে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস চলছে। সেই ক্লাসে শিক্ষার্থীদের বেঞ্চের পাশেই জ্বলছে মশার কয়েল! আবার অনেক জ্বলন্ত মশার কয়েলের ওপর আবার বসে আছে মশা। এমন দৃশ্য ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের নিকট এখন স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। দিনের বেলায় মশার অত্যাচারে শ্রেণি কক্ষের পাঠদানে যথাযথভাবে মনোনিবেশ করতে পারছেন না তারা।

আর আবাসিক হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ আরও চরমে। দিনে দুপুরে মশারি টাঙিয়ে পড়াশোনা করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। আর সন্ধ্যা নামতেই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা পোহাতে হচ্ছে কলেজের আন্তর্জাতিক হল, পশ্চিম হল, আক্তারুজ্জামান ইলিয়াছ হল এবং উত্তর হলের শিক্ষার্থীদের। বাকি দক্ষিণ এবং দক্ষিণায়ন হলেও মশার উপদ্রবের অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের। এককথায় মশার উপদ্রবে দিশেহারা অবস্থা কলেজটির শিক্ষার্থীদের।

মশার কামড়ের কারণে শান্তিমতো ঘুম কিংবা পড়াশোনা কোনোটাই করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। আর হঠাৎ করে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় তারা আক্রান্ত হচ্ছেন মশাবাহিত নানা রোগে। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা থেকে শুরু করে হলে অবস্থান করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবাসিক হলের ঝোপঝাড়, স্যাঁতস্যাঁতে জায়গা পরিষ্কার না করা, ময়লা-আবর্জনা ঠিকমতো অপসারণ না করা এবং দুর্বল পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার ফলেই হলগুলোতে মশার উপদ্রব বাড়ছে।

সম্প্রতি কলেজের সম্মান শ্রেণিতে অধ্যয়নরত আবাসিক শিক্ষার্থী জুয়েল মৃধা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করেন। যা দেখলে মশার ভয়াবহ উপদ্রবের ব্যাপারে খানিকটা হলেও আঁচ করা যায়।

তবে মশার এত উপদ্রব থাকা সত্ত্বেও মশা নিধনে বা মশার বংশ বিস্তার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কোনো ভ্রুক্ষেপ বা উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মশক নিধনে এখন পর্যন্ত কলেজ প্রশাসন কোনো স্প্রে বা ঔষধ ছিটায়নি। নেই কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ।

প্রশাসনের আস্থা সিটি কর্পোরেশন ওপর। কিন্তু প্রশাসনের আস্থার সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কর্মীদের কখনো ২-৩ সপ্তাহ পর পর একবার বা মাসে একবার ফগিং মেশিন নিয়ে কিছু সময়ের জন্য আবাসিক হলগুলোর সম্মুখ অংশে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। যার ফলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখেও পড়তে হয় সিটি কর্পোরেশনের লোকজনকে।

সন্ধ্যার পর কলেজের টেনিস গ্রাউন্ড, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, হলের খেলার মাঠ, রিডিং রুমসহ হলের আশেপাশে দাঁড়ানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাসুদ হাসান ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, হলে দিন, রাত কোনো সময় অবস্থান করা যাচ্ছে না। বড় বড় মশা সমানতালে কামড়ে যাচ্ছে। না করতে পারছি পড়াশোনা না পারছি শান্তিতে ঘুমাতে। এভাবে আর কয়েকদিন চলতে থাকলে ডেঙ্গুজ্বরের কবলে পড়ব।

দক্ষিণায়ন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তারেক আজিজ সুমন বলেন, দিন কী রাত মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি। প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। সিটি কর্পোরেশনের লোকজন নিয়মিত ঔষধ দেয় না। আবার কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এখনো মশা নিধনের কোনো ঔষধ স্প্রে করেনি। প্রশাসন কি আমাদের কষ্ট বুঝে না?

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক অধ্যাপক ড. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার দৈনিক অধিকারকে বলেন, কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মশা নিধনে আলাদাভাবে ঔষধ স্প্রে করার মতো বাজেট নেই। তবে আমরা সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার চেষ্টা করছি। এছাড়াও মশার বংশ বিস্তার রোধ করতে কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে কথা বলতে স্থানীয় ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জসিম উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড