• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গাইড বইয়ে আসক্ত প্রাথমিকের ৩৭ শতাংশ শিক্ষক!

  শিক্ষা ডেস্ক

১৪ অক্টোবর ২০১৯, ১৩:৪০
গাইড বইয়ে নির্ভরতা (ছবি: প্রতীকী)

বাজার থেকে কেনা গাইড বইয়ের উপর নির্ভর করে পাঠদান করেন দেশের প্রায় ৩৭ শতাংশ শিক্ষক। মাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনায় (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি) এই হার বেশি। ২২ দশমিক ৪ ভাগ শিক্ষক প্রশ্নপত্র তৈরি করতে পারেন না। ১৪ দশমিক ৪ ভাগ শিক্ষক সরাসরি শিক্ষক সমিতি বা খোলাবাজার থেকে প্রশ্ন কিনে পরীক্ষা নেন। গণসাক্ষরতা অভিযান পরিচালিত 'এডুকেশন ওয়াচ ২০১৮-২০১৯'-এর প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

রোববার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর এলজিইডি ভবনে অনুষ্ঠিত প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে গণসাক্ষরতা অভিযান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার শিক্ষার্থীদের নিজ খরচায় পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করে আসছে। তা সত্ত্বেও শিক্ষকদের গাইড বই ব্যবহার এবং অর্থের বিনিময়ে প্রাইভেট পড়ানোর প্রবণতা কমেনি। ২২ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষক গৃহশিক্ষকতায় (বাসায় কোচিং) জড়িত।

জানা যায়, সরকারি বিদ্যালয়ের ১৭ দশমিক ১ শতাংশ, বেসরকারি বিদ্যালয়ের ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ, স্কুল ও কলেজ ২৪ দশমিক ২ শতাংশ, দাখিল মাদ্রাসার ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ, উচ্চতর মাদ্রাসার ২০ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত। এসব শিক্ষকদের মধ্যে গণিতের শিক্ষকরা রয়েছে শীর্ষে, ইংরেজি শিক্ষকরা ঠিক পরই। এর পরই আছেন বিজ্ঞান বিষয়গুলোর শিক্ষকরা।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আয় সবচেয়ে বেশি। তাদের আয় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আয়ের প্রায় দ্বিগুণ। এদের মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের একাংশের গড় আয় এমপিওভুক্ত নন এমন শিক্ষকদের আয়ের প্রায় সাড়ে ৩ গুণ। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বার্ষিক গড় আয় ৫ লাখ ৩৭ হাজার। আর এমপিওভুক্ত শিক্ষকের ২ লাখ ৮৬ হাজার। এ ছাড়া এমপিওবিহীন শিক্ষকের ১ লাখ ৪১ হাজার।

জরিপে ৫ শতাংশ শিক্ষকের দাবি, তারা সব সময়ই অভাবী ছিলেন। ২০ শতাংশের বেশি শিক্ষকের দাবি, তারা মাঝে মাঝে অভাবে ছিলেন। প্রায় ৩৫ শতাংশের দাবি কোনোমতে সংসার চলছে। তবে ৪০ শতাংশ শিক্ষক জানিয়েছেন, বছরের সব খরচ মিটিয়ে তাদের কিছু টাকা উদ্বৃত্ত ছিল।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানভেদে শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অবকাঠামো ও অন্যান্য সুবিধা-সংক্রান্ত যেসব পার্থক্য রয়েছে সেগুলো দূর করতে হবে। প্রতিষ্ঠানভেদে শিক্ষকদের একই পদ্ধতিতে নিয়োগ, চাকরি ও অবসরকালীন আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধার ক্ষেত্রে সমতা বিধান করতে হবে।

প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাতের একটি উপযোগী মাত্রা নিশ্চিত করতে হবে। গত পাঁচ বছরে শিক্ষার্থী সংখ্যা এবং শিক্ষকদের জন্য অনুমোদিত পদসংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদাভাবে তথ্য বিশ্নেষণ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে গণসাক্ষরতা অভিযানের সহসভাপতি ড. মনজুর আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বিশেষ অতিথি ছিলেন- সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, প্রধানমন্ত্রীর এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ।

উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, 'মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কিছু টেক্সট বই নিয়ে আমি নিজেই পরীক্ষা করে দেখেছি। সেখানে গণিতসহ বিজ্ঞান ও অন্য বিভাগের কিছু বইয়ে যে ধরনের বিষয়গুলো রয়েছে, তা একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে ৫ থেকে ৭ শতাংশের বেশি সমাধান করা সম্ভব নয়। এ জন্য তাদের পুরোপুরিভাবেই শিক্ষকের ওপর নির্ভর করতে হয়। অনেকেই এই সুযোগে আলাদাভাবে শিক্ষার্থীদের পড়ানো এবং সহায়ক গ্রন্থগুলো তাদের বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু করে।'

আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠানের সীমাবদ্ধতা আছে, তবে আন্তরিকতা থাকলে শিক্ষকরা আরও ভালোভাবে শিক্ষা দিতে পারবেন। সরকার প্রণীত বইগুলোর ওজন খুব বেশি নয়। অতিরিক্ত বইগুলো দেওয়া হয় শিক্ষক এবং স্কুলের অথরিটি থেকে।'

অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষাবিদ, শিক্ষক নেতৃবন্দসহ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ওডি/জেআই

আপনার ক্যাম্পাসের নানা ঘটনা, আয়োজন/ অসন্তোষ সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড