ঢাবি উপাচার্যের অদ্ভুত কাণ্ড!

কয়েকদিন আগেই পরিষ্কার রাস্তায় ময়লা ফেলে তা পরিষ্কার করতে গিয়ে বিতর্কিত হয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। এবার এই বিতর্কের তালিকায় নাম লেখালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

পরিচ্ছন্ন রাস্তায় ময়লা ফেলে সেটি আবার পরিষ্কার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লিন ক্যাম্পাস উইকের উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার (৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহকে ‘ক্লিন ক্যাম্পাস উইক’ হিসেবে পালন করা হবে। এর অংশ হিসেবেই আজকের এই কর্মসূচি।

স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিদিন ভোরেই সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা রাস্তা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করে থাকে। এরপর গাড়িতে করে ময়লা অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ঢাবি প্রশাসনের আজকের কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীসহ সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, ডাকসুর এজিএস মো. সাদ্দাম হোসেনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ডাকসুর নেতারা, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্টরা।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১১টায় উপাচার্যের উদ্বোধনের আগে সেখানে ময়লা ছিটিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা। এরপর ঘটা করে সে ময়লা পরিষ্কার করে ক্লিন ক্যাম্পাস উইকের উদ্বোধন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘যেখানে কোনো দিন সকালে ময়লা পড়ে থাকতে দেখি না, সিটি কর্পোরেশন ভোরেই পরিষ্কার করে, সেখানে ময়লা ফেলে ময়লা পরিষ্কার লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও যদি মন্ত্রী কিংবা মেয়রের মতো লোক দেখানো কাজে হাঁটে তাহলে এটা হতাশার। ময়লা না ফেলেও ক্লিন ক্যাম্পাস উইকের উদ্বোধন করা যেত।’

কর্মসূচি উদ্বোধন কালে ঢাবি উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, ‘একটি সুন্দর, স্বাস্থ্যসম্মত, পরিচ্ছন্ন ও নান্দনিক ক্যাম্পাস নির্মাণের লক্ষ্যে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ‘ক্লিন ক্যাম্পাস উইক’ শীর্ষক পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ডাকসুর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানের ফলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আমাদের মনস্তাত্ত্বিক জগতের একটি পরিবর্তন হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার একটি বার্তা ও সংস্কৃতি শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টিভঙ্গিতে থাকতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে। ডেঙ্গুসহ যেকোনো রোগ প্রতিরোধে নিজ নিজ এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবার প্রতি আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।’

ওডি/এমএ