সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় বেরোবিতে তদন্ত কমিটি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) দুই সাংবাদিককে মারধরের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) মারধরের শিকার দৈনিক সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ আল আমিন হোসাইন এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও দক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক পৃথকভাবে এ অভিযোগ পত্র দায়ের করেন। তাদের অভিযোগ দায়েরের পর একই দাবিতে প্রক্টরকে স্মারকলিপি প্রদান করেছে সাংবাদিক সমিতি।

অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, গত বছরের (২০১৮) সেপ্টেম্বর মাসে শহীদ মুখতার ইলাহী হলে আবাসিকতার জন্য আবেদন করলে হল প্রশাসন আল আমিন ও সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল ইসলাম বকুলকে ৬০৩ (ঈখ) নং কক্ষে আবাসিকতা প্রদান করেন। এরপর সেই আসনে তারা উঠতে গিয়ে দেখেন সেখানে অন্য কেউ দখল করে আছে। এরপর আল আমিন মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি, ২০১৯) বাংলাদেশ প্রতিদিনের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি সৌম্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া ও সংশ্লিষ্ট হল সভাপতি হাসান আলীর সাথে সাক্ষাৎ করতে যান এবং তাদের সহযোগিতা চান।

ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ তাদেরকে হলের অন্য একটি কক্ষ দেখিয়ে সেখানে উঠতে বলে। তাদের সাথে সাক্ষাৎ শেষ করে হলের তৃতীয় তলায় আসলে বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সৌম্য সরকারকে অতর্কিতভাবে মারধর করতে করতে সিঁড়িতে ফেলে দেয় ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের (৪র্থ ব্যাচ) শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদ-উল-ইসলাম জয়। সৌম্য সরকারকে ফেলে দিয়ে মাহমুদ-উল-ইসলাম জয় আল আমিনের উপরও অতর্কিত হামলা চালায়। তিনি আল আমিনকে তৃতীয় তলা থেকে মারতে মারতে হলের নীচ তলায় নিয়ে আসে। এ সময় আল আমিন চিৎকার করলে মাহমুদ-উল-ইসলাম জয়ের সহযোগী মার্কেটিং বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাসেল রানা (৭ম ব্যাচ) ও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের (৯ম ব্যাচ) শিক্ষার্থী মাহফুজ আহমেদসহ কয়েকজন (যাদেরকে চিনতে পারেনি) আল আমিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা টিপে ধরে তার মুখে, গলায়, চোখে ও মাথায় এলোপাথাড়ি ভাবে আঘাত করতে থাকে। পরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে হামলাকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করে।

এদিকে, এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট ফেরদৌস রহমানকে তদন্ত কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে। আর সহকারী প্রক্টর সদরুল ইসলামকে সদস্য সচিব ও ওই হলের সহকারী প্রভোস্ট রশিদুল ইসলামকে সদস্য করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রদান করতে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পত্র পেয়েছি। একটি তদন্ত কমিটি গঠনও হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি মৌখিকভাবে শুনেছি এবং অভিযোগ পত্রও পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।