বাকৃবি প্রতিনিধি
একটা সময়ে বাংলাদেশের রান্নায় বাদাম তেল, সরিষার তেল, ঘি'র প্রচলন ছিল। সময়ের পরিবর্তনে এবং বিভিন্ন কারণে এ সবের ব্যবহার হ্রাস পেয়েছে। এদের স্থান অনেকটাই দখল করে নিতে সক্ষম হয়েছে পাম ওয়েল। বিশ্বের অনেক দেশেই পাম ওয়েল খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। সরকারি উদ্যোগে পাম গাছ থেকে তেল পাওয়ার জন্য ২০ লক্ষ পাম ওয়েল চারা রোপণ করা হয়েছিল দেশে।
এছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগেও সিলেট, দিনাজপুর, পার্বত্য অঞ্চলে লাগানো হয় প্রচুর পামগাছ। কিন্তু যন্ত্রের অভাবে গাছ থেকে তেল প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব হচ্ছিল না। এর মূল কারণ বিদেশ থেকে আমদানিকৃত মেশিনের চড়া দাম। একজন ছোট কৃষকের একার পক্ষে এই কেনা কোনোভাবেই সম্ভব না। আবার দেশের বাহির থেকে কোনো মেশিন কেনা হলেও তা বাংলাদেশের কৃষকের উপযোগী ছিল না।
এসব বিষয়কে মাথায় রেখে পাম ওয়েল প্রক্রিয়াজাতকরণে মেশিন উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আওয়াল।
মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদের প্রিশিসন ল্যাবে কর্মশালায় প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় এসব তথ্য জানান ওই উদ্ভাবক।
উদ্ভাবক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আওয়াল বলেন, সহজে যেন কৃষকরা এটি ব্যবহার করতে পারে সেটির দিকে নজর ছিল। পাম ওয়েলের ব্যাঞ্চ কাটা থেকে ক্রুড ওয়েল তৈরি করতে যত কম সময় লাগে, ততই তেলের উৎপাদন বেশি হয়। কিন্তু বাংলাদেশে সময় উপযোগী মেশিনের অভাবে এটি করা যাচ্ছিল না। এতে কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন এমনকি এটি চাষের আগ্রহও হারিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে মেশিনটি আবিষ্কার হওয়ায় নতুনভাবে এ সুযোগ তৈরি হলো। এখন থেকে ছোট ছোট খামারীরা এটি ব্যবহার করে সুফল পাবেন।
সারাদেশে এটি পৌঁছাতে পারলে বাহির থেকে পাম ওয়েল আমদানি তো বন্ধ হবেই এমনকি বিদেশেও রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিত্যক্ত সমুদ্র অঞ্চলে ও পার্বত্য অঞ্চলের পরিত্যক্ত জমিতে পাম গাছ রোপণ করা গেলে পাম ওয়েলের চাহিদা মেটানো সম্ভব। এক্ষেত্রে বেকারের কর্মসংস্থানও হবে বলে মনে করেন এই উদ্ভাবক।
কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খান মো. হাসানুজ্জামানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ড. এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার। কর্মশালার শেষে একটি মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, অয়েল পাম ফলকে প্রক্রিয়াজাত করে দু’ধরণের তেল পাওয়া যায়। ফলটির মাংসল অংশ (মেসোকার্প) থেকে পাম তেল আহরণ করা হয়, আর বীজ বা শাঁস থেকে পাওয়া যায় পাম কার্ণেল তেল। প্রতিটি ফল থেকে ৯ ভাগ পাম তেল ও ১ ভাগ পাম কার্ণেল তেল পাওয়া যায়।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড