নিজস্ব প্রতিবেদক
জামালপুর জেলা শহর হতে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে মেলান্দহে দেশের একমাত্র ফিশারিজ অনার্স কলেজ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজ। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯ বছর যাবত পরিচালিত হয়ে আসছে। ২০০৬ সালে বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকা অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী কলেজ মাঠে জনসভায় মায়ের নামে এই কলেজটিকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রতিশ্রুতি দেন।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা এবং গভর্নিং বডির সভাপতি মির্জা আজম, এমপি মহোদয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ২৫ মে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজের স্থলে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে বিশেষায়িত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন প্রদান করে প্রতিষ্ঠায় নীতিগত সদয় সম্মতি প্রদান ও পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ ক্রমে অনুরোধ করেন।
৩০ জানুয়ারি ২০১৭ সালে মন্ত্রী পরিষদ সভায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারীজ কলেজকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয়। পরবর্তীতে ২০ নভেম্বর ২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয় ও ২৮ নভেম্বর ২০১৭ সালে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। তবে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকল্পে প্রণীত আইনে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজকে রূপান্তরের বিষয়ে কোনো নীতিমালা উল্লেখ ছিল না।
ফিশারিজ কলেজ কর্তৃপক্ষ ২০১৭-১৮ সেশনের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে কলেজটিকে প্রক্রিয়াধীন ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ বলে উল্লেখ করেন। ফিশারিজ টেকনিক্যাল সাবজেক্ট হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে এখানে নুন্যতম জিপিএ ৯.০০ (চতুর্থ বিষয় ব্যতীত) ভর্তি হয়েও ডিগ্রী হবে কী না এমন হতাশায় দিন পার করছেন।
ফিশারিজ কলেজের শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা আন্দোলনের ফলে গেল বছর ২১ জুন ২০১৮ তারিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও আণবিক জীববিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. নিরঞ্জন কুমার সানাকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনি দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে যোগদান করেননি। ২ নভেম্বর ময়মনসিংহের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য প্রকল্পের সঙ্গে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে ১৪ নভেম্বর ২০১৮ একই বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওলজি অ্যান্ড মাইনিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদকে নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়।
ভিসি নিয়োগ পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক যাবতীয় কার্যক্রম চালু হলেও উক্ত ফিশারিজ কলেজের শিক্ষার্থী-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত নেই। অতীতে যে সকল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়েছে, সে সবে শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অন্তর্ভুক্ত হতে পেরেছেন। এই অবস্থায় উক্ত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত ও ৩৮৪ জন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অপরপক্ষে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশ্বাসে যেসব শিক্ষকরা বিসিএসের মতো সরকারী চাকরি ছেড়ে কিংবা বিদেশ ছেড়ে দেশে এসে এখন চাকরি নিয়ে তাদেরও অনিশ্চয়তায় সময় কাটছে।
নানা নাটকীয়তার পর ২০১৮-১৯ সেশনে ঐ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিশারিজ ব্যতীত অন্যান্য তিনটি অনুষদের অধীনে গণিত, সিএসই, ম্যানেজমেন্ট ও সমাজকর্ম বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সার্কুলার দেওয়া হয়। জানা গেছে, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১৭ এর প্রস্তাবনায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজের নাম না থাকায় কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা যাচ্ছেন না। অপরদিকে, ঐ কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবনের ৩য় তলা ভাড়ায় নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড