মোহাম্মদ রানা
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকি ১ দিন। নির্বাচনি প্রচারণা শেষে এখন চলছে নির্বাচন গ্রহণের প্রস্তুতি। এবারের নির্বাচনে প্রায় ১ কোটি তরুণ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এই তরুণদের বড় অংশ জুড়ে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নির্বাচন নিয়ে তাদের রয়েছে আলাদা আশা আকাঙ্ক্ষা এবং চিন্তা ভাবনা। দেশ পরিচালনায় কেমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, তরুণরা কেমন নেতৃত্ব চান এসবই বর্তমান সময়ের আলোচ্য বিষয়। দৈনিক অধিকারের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে এবার চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্বাচনি ভাবনা ও তাদের মতামত তুলে ধরা হলো।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথোপকথন :
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনিয়া সুলতানার মতে, 'বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে আওয়ামী লীগ দলটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ৬৯, ৭১, ৯০, ২০০৬ কিংবা ০৮, প্রতিটি সময় আওয়ামী লীগ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে আবির্ভূত হয়েছিল।
তাসনিয়া সুলতানা
কিন্তু এখন পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ অন্য কোনো দলকে নির্বাচনি প্রচারণা চালাতে দিচ্ছে না। আবার আওয়ামী লীগের অনেক শিক্ষিত অগ্রজ নেতাকর্মী এই ফ্যাসিজমকে সমর্থন করছেন। যারা এমন করছেন তারা নিজ দলের ইতিহাস আর অস্তিত্বকেই প্রত্যাখ্যান করেন। যদি নিজেদের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র আত্মবিশ্বাস থেকে থাকে, তাহলে আমার অনুরোধ, সাধারণ জনগণকেই নির্ধারণ করতে দেন তাদের শাসক কে হবেন'।
ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী ইফতিয়াজ নূর নিশান বলেন, 'বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মত ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে যাচ্ছি। সারাদেশের প্রায় আড়াই কোটি নতুন ভোটারের মতো আমার মাঝেও দারুণ উচ্ছ্বাস কাজ করছে। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি, মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে এদেশের কোটি তরুণের ন্যায় আমিও করবো না কোন আপোষ। আমার রায় তাদের পক্ষে যাবে, যারা মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন তথা সার্বভৌম ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে বিশ্বাসী।
ইফতিয়াজ নূর নিশান
তিনি বলেন, 'সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সেই সাথে আমাদের আকাঙ্ক্ষা গ্রামীণ জনপদ থেকে শহরাঞ্চল সব জায়গায় উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে। আরেকটি কথা, শুধু নির্বাচন কালীন নয় নির্বাচন পরবর্তী সময়েও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ সমাজের স্বপ্রণোদিত ও মূল্যায়ন যোগ্য অংশগ্রহণ থাকুক এই কামনা করি।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী অনিক বড়ুয়া বলেন, 'নির্বাচন হল সিদ্ধান্ত গ্রহণের এমন একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে জনগণ প্রশাসনিক কাজের জন্য একজন প্রতিনিধিকে বেছে নেয়। তরুণ হিসেবে যদি নির্বাচন নিয়ে বলতে চাই তাহলে প্রথমে চাইবো আসন্ন নির্বাচন হোক সকল দলের অংশগ্রহণে প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রী নির্বাচন। দ্বিতীয়ত হল, নির্বাচনকে শুধু ক্ষমতার লড়াই নয়, দেশ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবেও দেখা উচিত। এটা সকল দলের জন্যই। যেই দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন উন্নয়নের ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে এবং দেশ যেনো তাঁর নিজ গতিতে এগিয়ে যায়।
অনিক বড়ুয়া
ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী মার্সেল অনিক হালদার জানান, নির্বাচন গণতন্ত্র চর্চার সর্বোচ্চ উদাহরণ। একই সাথে গণতান্ত্রিক একটি সরকার সকলের কাম্য। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নকামী একটি সরকার খুবই জরুরি। তাই জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নতুন সরকারকে সচেতন হতে হবে। এই মুহূর্তে জনতা বান্ধব একটি সরকার নির্বাচিত করতে ভোটাররা সচেষ্ট। একি সাথে দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের মূল ধারা যেন অর্থনৈতিক মুক্তি হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
মার্সেল অনিক হালদার
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড