জাবি প্রতিনিধি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ (সাভার, আশুলিয়া) আসনে লড়ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মো. ইদ্রিস আলী। নির্বাচনে অংশগ্রহণের পূর্বে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ভোটারদের উদ্দেশে কিছু কথা বলেছেন তিনি। তার এসব কথা তুলে ধরা হলো দৈনিক অধিকারের পাঠকদের জন্য...
‘প্রিয় ভোটার ভাই-বোনেরা আপনারা নিশ্চয়ই আপনাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালোই আছেন। আপনাদের নিশ্চয়ই সন্তান বা ছোট ভাইবোন আছেন। জীবনে কখনো নিজ পরিবারের চাইতে আমাদের মতো নেতাদের বড় মনে করবেন না। মনে রাখবেন আপনার পরিবার আপনার সুখের জায়গা। পরিবারের কথা বাদ দিয়ে কোনো নেতার জন্য মারামারি, হানাহানি করে নিজের জীবন ও পরিবারকে অনিশ্চয়তায় ফেলবেন না। আপনার অনুপস্থিতিতে আপনার প্রিয় সন্তানদের কেউ দেখবে না। কেউ দেখেও না। রাস্তায়, রাস্তায় খেয়ে না খেয়ে দিন পার করবে।
আপনার স্ত্রীর হয়তো ঈদে একটা নতুন জামা কিনে দেওয়ার পয়সাটুকুও থাকবে না সন্তানদের জন্য! আমাদের মতো প্রার্থীদের জন্য অন্যের মাথায় আঘাত করে নিজেকে বীর মনে করছেন? এটা বোকামি! কখনো ভাবছেন কি? একটা মানুষের জীবন পৃথিবী থেকে চলে গেল আপনার কারণেই। যেদিন বোধহয় হবে সেদিন আর ফেরাতে পারবেন জীবনটা,পারবেন না! পারবেন ফেরাতে? বাবা ডাক দিলে তার প্রতুত্তরের আদর মাখা শব্দটি ‘জ্বী বাবা বলো’ বলতে! আপনাদের স্ত্রীদের সবাই সন্দেহের চোখে দেখবে। না হয় সুযোগের সন্ধানে থাকবে। আপনার রেখে যাওয়া বন্ধু নামক সুযোগ সন্ধানীরা।
আপনার মায়ের ওষুধ কেনার লোকটি কেউ থাকবে না। আপনারা আমাদের মতো সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের দেখানো আশ্বাস বাস্তবতায় না এলে বিশ্বাস করবেন না। এ সময়ে আমরা জনগণকে অনেক কলা, মুলা আশ্বাস দেখায় আমাদের স্বার্থের জন্য। নিজের পছন্দের দলের প্রার্থীর জন্য কাজ করবেন সমস্যা নেই। তবে নিজ সন্তান, পরিবারের ওপর কাউকে বসাবেন না। পরিবার ছাড়া কেউই আপনার আপন না। প্রযুক্তি আমাদের হাতের মুঠোয় সবকিছু জানার সুযোগ এখন সহজ। তাই গুঁজবে গা ভাসিয়ে, না জেনে মারামরি, হানাহানি করবেন না।
ধরুন, আপনি একজনকে আঘাত করলেন। চোখ বুঝে চিন্তা করেন তো লোকটির সন্তানদের কথা! নির্বাচনে আমি বা আমার মতো প্রার্থীরা আপনাদের কলা মুলা, চুলা, সবি দেখাব আমাদের ভোটের স্বার্থে। আপনারা গণতান্ত্রিকভাবে সমর্থন ও কাজ করতে পারেন যাকে ভালো লাগে তার জন্য। তবে প্লিজ নিজের পায়ে কুড়াল মারবেন না।
বিপদে পড়লে নেতাদের খুঁজে পাবেন না নেতাদেরই দৌড়ের শেষ থাকে না জনগণকে আর কী করে দেবে! সময় এখন স্বচ্ছতার, প্রযুক্তির। কোনো অপরাধ ঢেকে রাখা যাবে না সুতরাং কোনো নেতার প্রলোভনে কেনো অন্যায় কাজ করবেন না। অন্যায় করলে শাস্তি হবেই। পরকালে না একালেই হয়। অপরাধকারী নিজেই নিজের শাস্তি হিসেব করে মিলিয়ে নেয়। আপনার নৈতিক ও স্বাভাবিক কাজগুলোই দেশকে এগিয়ে নেওয়ার হাতিয়ার। আপনি জেলে, কুমার, চাষি, দোকানি, প্রবাসী, চাকরিজীবী সবার কাজটাই দেশের কাজ।
আমি এখন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এখন আমার ভোট দরকার। আমি ভোটের জন্য আপনাদের পা ধরা, মাথায় হাত বুলানো, মাথায় টুপি পরে ধার্মিক সাজা, এতিমখানায় খাবার খাওয়া, নিরিহ কোনো পথচারী ভিক্ষুককে চাকরি দেওয়া এসবই আমার সাময়িক ভোটারদের মনোরঞ্জনের চেষ্টা। যাকে আপনার ভালো লাগে পৃথিবী উল্টে গেলেও তাকেই ভোট দেবেন। আর যাকে ভালো লাগে না এক পৃথিবীর সবকিছু দিলেও ভোট দেবেন না। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ যাই করুন ভেবে চিন্তে করুন।’
প্রসঙ্গত, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এন.ডি.এম) এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (০২১) গণঐক্য নামে একজোট হয়ে হারিকেন প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন ইদ্রিস আলী।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড