বাকৃবি প্রতিনিধি
গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, হাঁস, মুরগি, কবুতর প্রতিটি প্রাণিসম্পদের অংশ হলেও অতিপরিচিত গরু, ছাগল এবং মুরগি। ভেড়া ছোট নিরীহ প্রাণী। ভেড়ার মাংস তুলনামূলকভাবে নরম, রসালো ও গন্ধহীন এবং মাংসের আঁশ চিকন বলে সহজে হজম হয়। ভেড়ার মাংস অন্যান্য মাংসের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় এটি পুষ্টির দিক থেকে যেকোনো মাংসের চেয়ে ভালো। ছাগলের চেয়েও বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ভেড়ার মাংস। ভেড়ার মাংস জনপ্রিয়করণ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।
সোমবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অনুষদীয় সম্মেলন কক্ষে পপুলারাইজিং শিপ মিট (মাটন) ইন বাংলাদেশ (Popularizing Sheep Meat (Mutton) in Bangladesh) শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ভেড়ার ওপর গবেষণা করে গবেষকদল এ তথ্য পেয়েছেন। পশুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. এহসানুর রহমানের নেতৃত্বে সহকারী গবেষক ছিলেন সহকারী অধ্যাপক হাসান মোহাম্মদ মোর্শেদ।
প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. এহসানুর রহমান বলেন, অনেক সময় বাজারে ভেড়ার মাংস ছাগলের মাংস হিসেবে বিক্রি হয়। ভেড়ার মাংসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সাধারণ জনগণের ধারণা নেই বলেই আজ তা সম্ভব হচ্ছে। বাজারে ভেড়ার মাংসের দাম কম যার কারণে মাংস বিক্রেতারা প্রায়ই ভেড়ার মাংস ছাগলের মাংস বলে বিক্রি করে। অথচ তারা কম দামে খামারির কাছ থেকে ভেড়া কেনে। এ ক্ষেত্রে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর লাভবান হয় মধ্যসত্ত্ব ভোগীরা। সাধারণ জনগণের মাঝে যদি এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা যায় তাহলে ছাগলের মাংস বলে আর ভেড়ার মাংস বিক্রি করতে হবে না বরং ছাগলের মাংসের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে। সেই সাথে আমাদের জনগণের প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণে বড় অবদান রাখবে।
সহকারী গবেষক হাসান মোহাম্মদ মোর্শেদ বলেন, ভেড়া পালনে খাদ্য খরচ কম। ভেড়া একটি তৃণভোজী স্তন্যপায়ী প্রাণী। ভেড়া সাধারণত চরে খেতে পছন্দ করে এবং ছাগল যেখানে শুধু ঘাস আর গাছের ডগা খায় সেখানে ভেড়া সবকিছু খায় এমনকি শুকনা খড় থেকে শুরু করে গরুর খাদ্যের উচ্ছিষ্টাংশ পর্যন্ত খায়।
আমাদের দেশে চরে খাওয়ার মত পর্যাপ্ত চারণভূমি এবং খাদ্য নাই। তাই বয়স এবং উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে প্রতিদিন ২৫০-৪০০ গ্রাম করে দানাদার খাবার দেওয়া যেতে পারে। চাল, গম, ভুট্টা ভাঙ্গা, গমের ভুসি, চালের কুড়া, ডালের ভুসি, সরিষার খৈল, লবণ, ভিটামিন-মিনারেল প্রিমিক্স দানাদার খাবারের উপকরণ হতে পারে।
পশুপালন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন- ইউজিসির সাবেক অধ্যাপক ড. এস এম বুলবুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক খন্দকার, পশু প্রজনন এবং কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, ভেড়া সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে পছন্দ করে। ভেড়ার অভিযোজন ক্ষমতা ছাগলের চেয়ে বেশি তাই যে কোনো প্রতিকূল পরিবেশে খাপ খেয়ে চলতে পারে। ভেড়া অত্যন্ত নিম্নমানের খাদ্য গ্রহণ করে উন্নতমানের প্রোটিনে পরিণত করে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যেমন অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ডে মাংসের পাশাপাশি প্রধানত উলের জন্য ভেড়া পালন করা হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় ৩৩.৩৫ লক্ষ ভেড়া রয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড