জয়নুল হক
বিগত সময়ে সেশনজটের জালে আবদ্ধ ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রায় অধিকাংশ বিভাগই। সেই জট থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগে বেশ। এরপর কয়েকবছর জট ছাড়াই অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতেই এগিয়েছে। কিন্তু পুরোনো ঐতিহ্য ধরে রাখার ব্যাপারে আমাদের আলাদা পরিচয় রয়েছে! আর সেই সূত্রে আবারও জবিতে সেশনজটের হানা!
এবার তীব্র সেশনজটে পড়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) নাট্যকলা বিভাগ। চার বছরের অনার্স কোর্স ৬ বছরেও শেষ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দ্বিগুণ সময়েও শিক্ষাজীবন শেষ না করতে পারায় তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া হাজারো শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণের পথে সেশনজট যেন একটা দেয়ালের মতো। প্রতি এক মাসের জট মানেই স্বপ্ন পূরণে একটা ধাপ পিছিয়ে থাকা। সেশনজট মানে হতাশা এবং অপার সম্ভবনাকে যেন জোর করে মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা। এমনই হতাশা ব্যক্ত করলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) নাট্যকলা বিভাগের প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
সরেজমিনে জানা যায়, ডিপার্টমেন্টের ২য় ব্যাচ ২০১৪-১৫ সেশনের এর শিক্ষার্থীরা এখনও ৫ম সেমিস্টারেই আটকে আছেন! যেখানে তাদের এখন ৮ম সেমিস্টারে থাকার কথা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বার বার তাগিদ দিয়েও কোনো কাজ না হওয়ায় সর্বশেষ গতকাল উপাচার্যের সাথে দেখা করে নাট্যকলা ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীর। সমস্ত ঘটনা জানার পর উপাচার্যের তাৎক্ষণিক নির্দেশে বিভাগের চেয়ারম্যান ফরম পূরণের তারিখ ঘোষণা করেন।
এ দিকে ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চরম হতাশায় তাদের দিন কাটছে। একজন অভিযোগ করে বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম যেন দ্রুত বের হতে পারি। এখন মনে হচ্ছে জাতীয়তে ভর্তি হলেই ভালো হতো!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক শিক্ষার্থী জানান, চেয়ারম্যানের গাফিলতির কারনে আমরা প্রতি সেমিস্টারেই হয়রানির শিকার হচ্ছি। এ দিকে পরীক্ষার ফরম পূরণ এর তারিখ দিলেও আগের সেমিস্টারের রেজাল্ট দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে এক শিক্ষার্থী জানান, কোনো বিষয়ে আমদের ইম্প্রুভ দেওয়া লাগবে কি না তা কীভাবে বুঝব ভেবে পাচ্ছি না। সেশনজটের কারণে কিছু শিক্ষার্থী তাদের ভর্তিও বাতিল করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
১ম ব্যাচের অন্য এক শিক্ষার্থী জানান, সেশনজট আসলেই শিক্ষার্থী হিসেবে বাড়তি মানসিক চাপ। তারপরও কিছুটা চাপ কম মনে হতো যদি ডিপার্টমেন্টে থেকে কিছু শিখতে পারতাম।
ঐ শিক্ষার্থী আরও বলেন আগের চেয়ারম্যান ছাড়া আর কেউ রেজাল্ট শিট তৈরি করতে পারত না। এমনকি নতুন চেয়ারম্যানও রেজাল্ট শিট তৈরি করতে পারেন না। এটাও সেশনজটের অন্যতম কারণ।
নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন খান কবির বলেন, 'ভিসি স্যার এই বিষয়ে অবহিত আছেন। তিনি আমাদেরকে এ নিয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশ মতো আমরা নভেম্বরে মধ্যে সকল পরীক্ষা শেষ করব। এখন এর বেশি কিছু বলতে পারব না'।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমি চেয়ারম্যানকে দ্রুত অ্যাকাডেমিক মিটিং করার নির্দেশ দিয়েছি। এছাড়াও কোন রেজাল্ট কবে দিবে এটা আমাকে এবং ছাত্রদেরকেও নোটিশ দিয়ে জানাতে বলেছি।
উপাচার্য আরও বলেন, অনেকে ডিপার্টমেন্টে আছে যারা ৩ বছর ৮ মাসেও রেজাল্ট দিয়ে দেয়। এটা দেখার দায়িত্ব ডিপার্টমেন্টে চেয়ারম্যানের। তার সদিচ্ছার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড