• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন

  বাকৃবি প্রতিনিধি

১৩ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:১৫
গবেষক
জিনোম সিকোয়েন্সিং কাজে সংশ্লিষ্টরা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

প্রথমবারের মতো বিশ্বখ্যাত ছোট জাতের ছাগল ব্ল্যাক বেঙ্গলের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) রিসার্স সিস্টেমের (বাউরেস) অর্থায়নে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও বাংলাদেশ প্রাণী সম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বি.এল.আর.আই) একদল গবেষক যৌথভাবে ওই সাফল্য অর্জন করে।

মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর দেড়টায় পশুপালন অনুষদের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সাফল্যর ঘোষণা দেন বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত ভিসি প্রফেসর ড. মো. জসিমউদ্দিন খান।

প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. এ. এম. ইয়াহিয়া খন্দকারের নেতৃত্বে গবেষণা কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। দলের অন্যান্য গবেষকবৃন্দ হচ্ছেন- বাকৃবির প্রফেসর ড. মো. বজলুর রহমান মোল্ল্যা, বাকৃবির প্রফেসর ড. মো. সামছুল আলম ভুঞা, বিএলআরআইয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আব্দুল জলিল, ড. গৌতম কুমার দেব, মো. পণির চৌধুরী ও নূরে হাছিন দিশা।

জিনোম হচ্ছে কোনো প্রজাতি বা জীবের মোট নিউক্লিওটাইডের সমষ্টি। সহজ কথায় জিনোম হচ্ছে কোনো জীবের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। জীবের অঙ্গসংস্থান, জন্ম, বৃদ্ধি, প্রজনন এবং পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াসহ সকল জৈবিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় এর জিনোমে সংরক্ষিত নির্দেশনা দ্বারা। পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্সিং হচ্ছে কোন জীবের জিনোমে সমস্ত নিউক্লিওটাইড সমূহ কীভাবে বিন্যস্ত রয়েছে তা নিরূপন করা। একটি জীবের জিনোমে সর্বমোট জিনের সংখ্যা, বৈশিষ্ট্য এবং তাদের কাজ পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স থেকেই জানা যায়।

বাংলাদেশে মোট ছাগলের ৯০ ভাগই ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের। এ জাতের ছাগল প্রতি প্রসবে একাধিক বাচ্চা প্রদান করে, দ্রুত প্রজননশীল, চামড়া উন্নত মানের এবং উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া উপযোগী। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস স্বাদে, গন্ধে ও রসালতায় অনন্য। বাঙালির কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সাথে ছাগলের মাংস ওতপ্রোতভাবে আদিকাল থেকে জড়িত হয়ে আছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে এর অবদান অপরিসীম। বিশেষ করে গ্রামীণ দুস্থ মহিলা, ভূমিহীন পরিবারের জীবন ও জীবিকায় ছাগল একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার মেট্রিক টন ছাগলের মাংস উৎপাদিত হয় যা মোট উৎপাদিত গবাদিপশুর মাংসের প্রায় ২৫ ভাগ।

গবেষকবৃন্দ অ্যাসেম্বলকৃত ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জিনোমে প্রায় ২ দশমিক ৯ গিগা বেজ নিউক্লিওটাইড পেয়েছে। যার মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোম সাইজ ১৬, ৬৪০টি নিউক্লিউটাইড যাতে ৩৭টি জিন রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ সিকোয়েন্স অ্যানালাইসিস করে ২৬ লক্ষ, ৫ হাজার ৩০০টি সিঙ্গেল নিউক্লিউটাইড পলিমরফিজম (এসএনপি) পাওয়া গেছে। বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল জিনোমে জিনের সংখ্যা ও গঠন জানার কাজ অব্যাহত রয়েছে।

প্রধান গবেষক ড.এ.এম. ইয়াহিয়া খন্দকার বলেন, বাংলাদেশে আমরাই প্রথম ব্ল্যাক বেঙ্গলের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছি। এর মাধ্যমে এখন ব্ল্যাক বেঙ্গলের খাদ্যাভাস, শারিরীক গঠন, চামড়া ও প্রজননসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গবেষণার দ্বার উম্মোচিত হলো। ভবিষ্যতে কেউ গবেষণা করতে চাইলে এই জিনোম সিকোয়েন্সিং অনেক কাজে লাগবে।

গবেষক ড. মো. বজলুর রহমান মোল্ল্যা বলেন, বাংলাদেশি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের একটি পূর্ণাঙ্গ জিনোম রেফারেন্স তৈরি করেছি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের একটি পূর্ণাঙ্গ রেফারেন্স জিনোম তৈরি হলো। এতে করে ডিএনএ আবিষ্কার ও মার্কারগুলোর মাধ্যমে ছাগলের ওজন বৃদ্ধির হার, দুধ উৎপাদন, বাচ্চা উৎপাদন, রোগ প্রতিরোধ ও মাংসের গঠন সংক্রান্ত জিন আবিষ্কার করা সহজ হবে। ফলে সহজেই ছাগলের মোট জিনের সংখ্যা, গঠন ও কার্যাবলী নিরুপণ করা যাবে।

আপনার ক্যাম্পাসের নানা ঘটনা, আয়োজন/ অসন্তোষ সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড