• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শিবির সন্দেহে রাবি শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে ছাত্রলীগ নেতার চাঁদাবাজি !

  রাবি প্রতিনিধি

০৯ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:২৫
রাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (ছবি : সংগৃহীত)

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে শিবির দাবি করে আটকে রেখে পরিবারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একজন সহসম্পাদক ও একজন শিক্ষার্থী জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম ওমর ফারুক। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলায়।

অন্যদিকে অভিযুক্তরা হলেন- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক শাফিউর রহমান। শাফিউর ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের বাসিন্দা আর নাঈম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচণ্ডী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ওমর ফারুক মেহেরচণ্ডীতে এক মেসে থাকতেন। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে মেস থেকে ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে নিয়ে আসেন নাঈম। হলের ১৯১ নম্বর কক্ষে থাকেন ছাত্রলীগ নেতা শাফি। ফারুককে শাফির কক্ষে তিন ঘণ্টা জিম্মি করে তার পরিবারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করে।

ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ওই জড়িত দুই জনকে চিহ্নিত করেন এবং ভুক্তভোগীকে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

ভুক্তভোগী ওমর ফারুক বলেন, ‘গত দুই দিন থেকে নাঈম ভাই আমাকে এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করাবে বলেছিল। তার সঙ্গে গেলে সে আমাকে সোহরাওয়ার্দী হলের ১৯১ নম্বর কক্ষে শাফির কাছে নিয়ে যায়। এ সময় তারা আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ঢুকে আমি শিবির করি বলে দাবি করে। আমি অস্বীকার করলে তারা আমাকে চড়-থাপ্পড় ও লোহার পাইপ দিয়ে মারতে থাকে। পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলে তারা সিনিয়র নেতাদের কিছু জানাবে না বলে জানায়। পরে তারা আমার পরিবারের কাছে ফোন করে টাকা চাইলে আমার বড় ভাই বিকাশের মাধ্যমে বিশ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। টাকা পেয়ে তারা আমাকে ছেড়ে দেয় এবং বিষয়টি কাউকে জানালে আমাকে দেখে নেবে বলে হুমকিও দেয়। পরে আমি বিষয়টি আমার জেলা সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমানকে জানাই। ঘটনাটি জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু তাদের কাছ থেকে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।’

এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে শাফি বলেন, ‘ফারুকের গতিবিধি ও আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় আমরা তাকে শিবির সন্দেহে আটক করি। তবে টাকা নেওয়ার সঙ্গে আমি জড়িত নই। টাকা নাঈম নিয়েছে।’ নাঈমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

রাবি ঠাকুরগাঁও জেলা সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি প্রক্টরকে বিষয়টি জানাই। কিন্তু সন্ধ্যা পেরিয়ে মধ্যরাত হয়ে গেলেও প্রক্টর কোনো ব্যবস্থা নেননি।’

প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছে দাবি করলেও সেখানে কোনো পুলিশ যায়নি বলে জানা যায়। প্রক্টর বলেন, ঘটনা শোনার পর আমি পুলিশকে জানিয়েছি। পরে শুনেছি ছাত্রলীগ বিষয়টি সমাধান করেছে।’

জানতে চাইলে গোলাম কিবরিয়া ও ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা হলে গিয়েছিলাম। টাকা আদায়ের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত হতে পেরেছি। জড়িত দুইজনের মধ্যে যার কাছে টাকা সে পলাতক। আমরা একজনকে ধরেছি। তার মাধ্যমে ফারুককে টাকা ফিরিয়ে দেব এবং ফারুকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’ তারা বলেন, ‘এ ধরনের অপরাধের জন্য আমরা শাফিকে শোকজ করেছি এবং আগামী সাতদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলেছি।’

আপনার ক্যাম্পাসের নানা ঘটনা, আয়োজন/ অসন্তোষ সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড