• রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

‘প্রশাসনিক ভবনের নাকের ডগায় বসে বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান’

  জাবি প্রতিনিধি

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:১৮
অনশন

“প্রশাসনিক ভবনের নাকের ডগায় বসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অসম্মান করা হয়েছে,” বলে দাবি করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের প্রাঙ্গনে আমরন অনশনরত ছাত্রলীগের দুই নেতার সাথে সংহতি প্রকাশ করতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

জাবির মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আর্দশের শিক্ষক পরিষদের অন্যতম এই সংগঠক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ব্যঙ্গচিত্র আঁকার ঘটনায় জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড মো. নূরুল আলমের ঘটনা পরবর্তী ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “প্রশাসনিক ভবনের নাকের ডগায় বসে যে অসম্মান করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ওনি (জাবি উপাচার্য) শৈথিল্য দেখিয়েছেন অবশ্যই, আমি একটা ভিডিও চিত্র দেখেছি যেখানে উপাচার্য ছাত্রলীগের ছেলেদের সাক্ষাতের সময়ে তাদের উদ্দেশ্য করে বলছেন, কবে ঘটেছে? তারপরে একই ভিডিওতে এক পর্যায়ে তিনি (জাবি উপাচার্য) বলছেন, সালাম-বরকত হলে আমি ছবিটা দেখেছি। এরপর আবার বললেন পাশ দিয়ে গেলাম এবং ছবিটা দেখেছিলাম। ওনি (জাবি উপাচার্য) এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় অভিভাবক এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশক্রমে ও মাননীয় আচার্যের অনুমোদনক্রমে তার নিয়োগ হয়েছে কিন্তু তিনি শৈথিল্য দেখিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয়েছে প্রায় ১৪-১৬ ঘন্টা হয়ে গেলেও উপাচার্য তার পক্ষ থেকে উপাচার্যদ্বয়, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রার এর সাথে কথা বলেন নি। উনি কেন এত হালকা ভাবে নিলেন বিষয়টি। জাতির পিতার অবমাননা করা হলো এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যঙ্গচিত্র আঁকা হল।। কিন্তু ওনি (জাবি উপাচার্য) এটাকে গুরুত্ব দেন নি।”

এছাড়াও তিনি এই ঘটনার কুশীলবদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আর্দশের শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, “প্রশাসনের নাকের ডগায় সারারাত ধরে কাজ হলো কিন্তু প্রশাসনের কেউ জানে না বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য নয়।”

প্রশাসন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি হতাশাও প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে অন্য গ্রাফিতি অঙ্কনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তিসহ তিন দফা দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন পালন করছেন দুই ছাত্রলীগ নেতা।

গত বৃহস্পতিবার(১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক ছাত্রলীগ নেতা অনশন শুরু করেন। পরে সন্ধ্যায় একই দাবিতে আরেক ছাত্রলীগ নেতা অনশনে যোগ দেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।

অনশনরত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম এবং বাংলা বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম।

তাদের দাবিগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননাকারীদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় আইনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং আট দিন পার হলেও জড়িতদের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা তদন্ত করতে হবে।

অনশনের বিষয়ে এনামুল হক এনাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছবি মুছে ফেলার পর নয়দিন পার হয়েছে, তবে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। অনেক চাপাচাপির পর তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। যেখানে ব্যঙ্গচিত্র আঁকার পর একটি সংগঠন অহংকারবোধ থেকে বিবৃতি দিয়েছে, আবার তাদের অফিসিয়াল পেইজ থেকে প্রচারও করেছে। তাহলে তদন্ত কমিটি কিসের জন্য! অপরাধীদের ছাড় দেওয়ার জন্য নাটক করা হচ্ছে।’

রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছবি আঁকার জন্য অনেক জায়গা আছে, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি কেন টার্গেট করা হলো? নতুন ব্যঙ্গচিত্র দেখলেই বোঝা যাবে, এটা যৌক্তিক কোন চিত্র নয়। যারাই এটা করেছে, তারা অন্য এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে।’

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি প্রতিকৃতি আঁকা ছিলো। তবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণকাণ্ডের পর গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের নেতাকর্মীরা। পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি গ্রাফিতিটি মুছে দেওয়া হয়। এখন সেখানে আবারো বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতি আঁকা হচ্ছে।

এ ঘটনায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফীকে আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলা বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার শামীম আহমেদ ও চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজউদ্দীন। এছাড়া কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন-২) এ বি এম আজিজুর রহমানকে সদস্য-সচিব করা হয়েছে।

আপনার ক্যাম্পাসের নানা ঘটনা, আয়োজন/ অসন্তোষ সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড