• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৪১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গান-বাজনার উচ্চ শব্দে বিঘ্নিত হচ্ছে বশেমুরবিপ্রবির পড়াশোনার পরিবেশ

  বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি

১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:৩০
বশেমুরবিপ্রবির

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বিভিন্ন বিভাগ, সামাজিক সংগঠন, ক্লাব ও বন্ধু সার্কেলদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, পিকনিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উচ্চশব্দে বক্সে গানবাজনো এখন একটি দৈনন্দিন বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরী ও হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ মারাত্মক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

এ ছাড়াও নামাজের সময় উচ্চশব্দে বক্সে গান বাজানোর কারণে বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর আশপাশে অবস্থানরত মসজিদের মুসল্লীদের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থী ও মসজিদের মুসল্লীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।

এই বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাদীম হোসেন বলেন,"বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত একাডেমিক ভবনের ভেতরে কোনো না কোনো অনুষ্ঠান হয়ে-ই চলছে। তার মধ্যে কিছু কিছু প্রোগ্রামে তো একাডেমিক কার্যক্রম চলা অবস্থায় হাই-ভোল্টেজে গান বাজানো হয়। অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের ভাইভা-পরীক্ষা চালু থাকে। এই শব্দ দূষণের ফলে তারা ভালোমতো ভাইবা ও পরীক্ষা শেষ করতে পারে না। এছাড়াও এই উচ্চ- শব্দে লাইব্রেরিতে যারা পড়াশোনা করে তাদেরও পড়াশোনাতেও বিগ্ন ঘটে। "

তিনি আরও বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠান হবে এটা একটা স্বাভাবিক বিষয়। এক্ষেত্রে, উপরোক্ত পরিস্থিতি বিবেচনায় যেহেতু আমাদের অডিটোরিয়াম নেই তাই যদি নিয়ন্ত্রিত আওয়াজে এবং একটা নির্দিষ্ট সময়ে (বিশেষ করে সন্ধ্যা পরে) প্রোগ্রাম -গুলো শুরু করা হয় তাহলে কিছু-টা হলেও এই সমস্যা লাঘব হতে পারে।"

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী ওমর শরীফ বলেন, "যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা গবেষণা, থিসিস ,পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত সেখানে আমাদের ক্যাম্পাসে প্রতিটিদিন কনসার্ট চলে। ডিসেম্বর মাস যেখানে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে পরীক্ষা চলে সেখানে রাত ২ টা ৩ টা পর্যন্ত এসব প্রোগ্রাম চলে । আর এগুলো একাডেমিক ভবনে বিকাল থেকে শুরু হয় যখন ক্লাস চলতে থাকে। শুধু তাই নয় এই প্রোগামের কাছেই মেয়েদের ২টা ও ছেলেদের ৩টা হল অবস্থিত। যেখানে উচ্চ শব্দের জন্য হলে থাকা দায়। তাছাড়া নামাজের সময় উচ্চ শব্দে গান বাজনা চলতে থাকে যা কোনো ভাবেই চলতে পারে না। প্রশাসন এই বিষয় গুলো মাথায় রেখে অনুমতি দেওয়া উচিত এবং তা বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা কড়া নজর দেওয়া উচিত।"

অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রূপালী খাতুন বলেন,"প্রায় প্রতিদিনই পিকনিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান হচ্ছে, এতে আমরা যারা হলে থাকি তাদের পড়াশোনা, ঘুম ও কনসেন্ট্রেশন এর ব্যাপক সমস্যা হয়। সাধারণত অনুষ্ঠানগুলো সন্ধ্যা থেকে রাত ১-২ টা পর্যন্ত চলে। যেহেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিধি কম এজন্য একেবারে জনশূন্য স্থানে এসকল অনুষ্ঠান করা সম্ভব না। তাই একটা নির্দিষ্ট সময়ে, পরিমিত ও সহনশীল আওয়াজে যদি এই গান-বাজনা বা অনুষ্ঠানগুলো পরিচালনা করা যায়, আশাকরি আমাদের পড়াশোনার পরিবেশে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।"

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রক্টর ড.মোঃ কামরুজ্জামান বলেন,"প্রতিদিন বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট এর প্রোগ্রাম থাকে।আমি একাডেমিক কাউন্সিলে তুলেছি সেখানে কোনো সুরাহা হয়নি। চেয়ারম্যানরা কোনো দায়িত্ব নিতে চাই না। নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হলে কেও মানে না। কাল আমরা এটা নিয়ে কথা বলবো,অনেকের সাথে এটা নিয়ে কথা হয়েছে।"

বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন,"আমরা অনেকবার প্রক্টরসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের এ বিষয়ে বলেছি কিন্তু শিক্ষার্থী শুনতে চায় না।"

সুনির্দিষ্ট নিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন," নিয়ম তো আমরা বলছি উচ্চ-শব্দে গান বাজানো যাবে না, যেখানে সেখানে পিকনিক করতে গিয়ে পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না এবং কিছু করলে অবশিষ্ট রাখা যাবে না। এখন তোমরা ছোট নেই, বড় হয়েছো। তোমাদেরকে কিছু বিষয় বুঝতে হবে, এটা তোমাদের প্রতিষ্ঠান, তোমাদের জন্য আমরা আছি। কিন্তু তোমরা জায়গাগুলো অপরিষ্কার করে ফেলো, উচ্চস্বরে মাইক বাজাও। এটা একদিন দুইদিন হতে পারে কিন্তু, পুরো শীতকাল ধরে এটা চলতে থাকে। তোমরা যেটা করো এটা নিয়ম না।"

আপনার ক্যাম্পাসের নানা ঘটনা, আয়োজন/ অসন্তোষ সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড