নিজস্ব প্রতিবেদক
নজরুল-প্রেমীদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে উদযাপিত হলো বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪ তম জন্মবার্ষিকী। আজ মঙ্গলবার (৩০ মে) সোনারগাঁও ইউনিভার্সির গ্রিন রোড ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য প্রফেসর শামীম আরা হাসানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আবুল বাশার। অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক হিসেবে কাজী নজরুল ইসলামের বর্ণাঢ্য জীবনী তুলে ধরেন নজরুল বিশেষজ্ঞ ও বাশঁরির সভাপতি ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি সাবেক ট্রেজারার ও ব্যবসায় প্রশাসনের প্রফেসর মো: আল-আমিন মোল্লা, কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এম এ মাবুদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম পর্বের আলোচনা অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক বাশঁরির সভাপতি ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান তার বক্তব্যে বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুলের স্বাধীনতার চিন্তা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৯২৯ সালে বাঙালিদের উপস্থিতিতে ড. মো: শহীদুল্লাহ ও অন্যান্যরা নজরুলকে জাতীয় কবি ঘোষণা করেন। নজরুল বাঙালি জাতির সত্ত্বা ধারণ করেছিলেন। তিনি তড়িৎ গতিতে অল্প সময়ে কবিতা ও গান লিখতেন। নজরুল ভীতু বাঙালিকে বিদ্রোহী কবিতার মাধ্যমে মাথা উচুঁ করে দাঁড়ানোর সাহস যোগান। বিদ্রোহী কবিতা সমসময় মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। তিনি কবিতার মাধ্যমে মানুষের বিজয় কেতন উড়িয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রকাশ্যে স্বাধীনতা চাওয়ার জন্য নজরুলকে জেলে যেতে হয়েছিল। নজরুল বাঙালি জাতির স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা। জয় বাংলা স্লোগানের মাধ্যমে তিনি সমগ্র বাঙালি জাতিকে একতাবদ্ধ করেন। আর তাই সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে নজরুলের অবদান অনস্বীকার্য।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আবুল বাশার নজরুলের জীবনী উপস্থিতিদের মাঝে তুলে ধরে বলেন, বাংলা সাহিত্য জগতে নজরুলের আবির্ভাব এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। তিনি ছোট গল্প, কবিতা, গান, গজল ও প্রবন্ধ রচনা করে গেছেন। কবিতাকে তিনি যুদ্ধের হাতিয়ারে পরিণত করেন।
উপাচার্য কবির গুণগুলোকে নিজেদের জীবনে প্রতিফলিত করার আহ্বান করেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর শামীম আরা হাসান মুখ্য আলোচককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, নজরুল এমন একজন মানুষ যার জীবনের সাথে জড়িত ঘটনাকে তিনি রূপ দিয়েছিলেন তার সাহিত্যকর্মে। নজরুলের লেখনিতে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধীতা ছিল।
নজরুল সাম্যবাদের অগ্রদূত হিসেবে আখ্যায়িত করেন প্রফেসর শামীম আরা হাসান।
বিশেষ অতিথি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন ট্রেজারার ও ব্যবসায় প্রশাসনের প্রফেসর মো: আল-আমিন মোল্লা বলেন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান সমুজ্জ্বল। কাজী নজরুল ইসলাম শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক। যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত।
বিশেষ অতিথি কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এম এ মাবুদ বলেন, নজরুল বাংলা সাহিত্যের একজন বিস্ময়কর প্রতিভা ছিলেন। তিনি একাধারে কবি, সাহিত্যিক, গান লিখতেন, গাইতেন ও সুর দিতেন। নজরুল সাহিত্যের সব শাখায় বিচরণ করে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে তিনি আরও সমৃদ্ধ করে গেছেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক মো: মাসুদ রানা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলা বিভাগের প্রভাষক তাসলিমা বেগম।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি বাশঁরির সভাপতি ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামানের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আবুল বাশার। এছাড়া অনুষ্ঠানে ‘জাতীয় জীবনে বিদ্রোহী কবি নজরুলের কবিতার প্রভাব’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণকারী শতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ জনকে সার্টিফিকেট এবং প্রথম ৩ জনকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। রচনা প্রতিযোগীতায় প্রথম ইয়ানুর ঝুমকি, দ্বিতীয় নুসরাত জাহান বৃষ্টি এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন তানজিদা খানম মিল্কি।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে নজরুলের রচিত কবিতা আবৃতি ও গান পরিবেশনা ছাড়াও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড