• বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ৮ চৈত্র ১৪২৯  |   ২১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মাদক সংশ্লিষ্টে কুবির পাহাড়ে আগুন

প্রশাসনের বাক্যবাণে জর্জরিত সাংবাদিক

  কুবি প্রতিনিধি

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৫৩
মাদক সংশ্লিষ্টে কুবির পাহাড়ে আগুন
আগুনে পুড়ছে কুবির পাহাড় (ছবি : অধিকার)

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পাহাড়ে আগুন লাগার ঘটনার সংবাদ প্রকাশের জন্য প্রক্টরের মন্তব্য জানতে গেলে সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়ে তাকে বাক্যবাণে জর্জরিত করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের বিরুদ্ধে। গত সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় লালন চত্বরে আগুন লাগার ঘটনায় মন্তব্য জানতে চাইলে খোলা কাগজের কুবি প্রতিনিধি মো. হাছিবুল ইসলাম সবুজকে হেনস্তা করেন তারা।

জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় লালন চত্বরে আগুন দেখতে পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা। পাহাড়ে আগুন লেগে বিভিন্ন অংশের গাছপালা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দীর্ঘক্ষণ আগুন জ্বলে কালো বর্ণ ধারণ করেছে আশপাশের গাছপালা। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে না পারলেও শিক্ষার্থীরা বলছেন, মাদকসেবীদের গাঁজার আগুন থেকেই এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শেখ মাহবুব বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় আগুন লাগার ঘটনাটি আমি দেখেছি। সম্ভবত গাঁজা থেকেই চার দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল আগুন। পাহাড়ের ওই অংশটিতেই মাদকসেবীরা বেশি যাতায়াত করে। বহিরাগতদের আনাগোনাও বেশি সেখানে। প্রায়সময়ই পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও প্রশাসন এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয় না। যে কোনো সময় বড় কোনো দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে।

এ দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ভিডিয়ো ফুটেজ মুঠোফোনে ধারণ করেন খোলা কাগজের কুবি প্রতিনিধি মো. হাছিবুল ইসলাম সবুজ। এরপর এ বিষয়ে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি জানেন না ও আগুন লাগার বিষয়টি স্বাভাবিক দাবি করে নিরাপত্তাকর্মী পাঠাচ্ছেন বলে জানান।

যদিও কিছুক্ষণ পর পুনরায় প্রতিবেদককে কল দিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন তিনি। পরে তাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। সেখানে ছাই দেখতে পেয়ে অগ্নিকাণ্ডকে আগের কোনো সময়ের ঘটনা দাবি করেন তারা।

প্রতিবেদক নিজের কাছে ভিডিয়ো ফুটেজ সংরক্ষিত আছে দাবি করলে তার ওপর চড়াও হয়ে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আপনি আগুনের (আগুন লাগার পর) কাছে থাকলেন না কেন? আগুন কি হাত দিয়ে (আগুন) নিভিয়েছেন? আগুন লাগলে মাটি ঠাণ্ডা কেন?

একই সময়ে সাথে থাকা সহকারী প্রক্টর কাজী এম আনিছুল ইসলাম প্রতিবেদকের উদ্দেশ্যে বলেন, এটা যে আজকের ঘটনা তার প্রমাণ দেখান। এখান থেকে ধোঁয়া উড়ছে না কেন? ঘটনাস্থলে কি আপনি এসেছিলেন?

পরে ভিডিয়ো ফুটেজ দেখানো হলে তিনি প্রতিবেদককে পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ভিডিয়োটি যে আজকের সেটির কী প্রমাণ আছে আপনার কাছে?

ভুক্তভোগী প্রতিবেদক হাছিবুল ইসলাম সবুজ বলেন, অগ্নিকাণ্ড দেখেই আমি ভিডিয়ো ফুটেজ নিয়ে প্রক্টরকে ফোন দেই। শুরুতে তিনি স্বাভাবিক ব্যবহার করলেও পরবর্তীকালে আমার সাথে রূঢ় আচরণ করেন। অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি মিথ্যা দাবি করে আমাকে হেনস্তা করেন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।

কিন্তু প্রতিবেদকের ওপর চড়াও হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সহকারী প্রক্টর কাজী এম আনিছুল ইসলাম। তিনি বলেন, আগুন অবশ্যই লেগেছে। তবে আমার ধারণা এটা অনেক আগের। যাচাই-বাছাই (বিষয়টি) করার জন্য তথ্য জানতে চেয়েছি। আগুন লাগার ক্ষেত্রে প্রতিবেদকের শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকা উচিত ছিল। সে ঘটনাস্থল থেকে চলে গেল কেন?

একইভাবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমি কোনো সাংবাদিক হেনস্তা করিনি।

এর আগেও বিভিন্ন সময়ে কুবির পাহাড়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ২০২০ সালের ১৪ মার্চ কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার পাশের পাহাড়ে আগুন লাগলে পরিচ্ছন্নতার জন্য আগুন দেওয়া হয়েছে দাবি করে কর্তৃপক্ষ। ২০২১ সালের ১৮ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পাশের একটি পাহাড়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তখন বহিরাগত মাদকসেবীদের দ্বারা এই অগ্নিকাণ্ড ঘটার ধারণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২০২২ সালের অগ্নিকাণ্ডেও প্রশাসন একই কথা বলেছিল। যদিও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি কর্তৃপক্ষকে।

আপনার ক্যাম্পাসের নানা ঘটনা, আয়োজন/ অসন্তোষ সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড