মোঃ রাফিকুর রহমান লালু, রাজশাহী:
প্রকাশ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে রাবির এক ছাত্রের বিরুদ্ধে । এ সময় ছাত্র উপদেষ্টা ও পুলিশের উপস্থিতিতেই অভিযুক্তের দুই সহযোগী ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে ধারালো অস্ত্রের হামলায় ভুক্তভোগীর তিন সহপাঠী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মমতাজউদ্দিন একাডেমিক ভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দেয়া ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগে এসব জানা যায়।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাজমা খাতুন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্ত রাকিব আল হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং এ্যান্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী। মতিহার হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পারভেজ ও নবাব আব্দুল লতিফ হল ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেনের নেতৃত্বে ভুক্তভোগীর বন্ধুদের ওপর হামলা করা হয়। ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক এম. তারেক নুর এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পূর্বপরিচয়ের জের ধরে গত (২৬ জুলাই) মঙ্গলবার রাতে হলে ফেরার পথে মমতাজউদ্দিন কলাভবনের সামনে রাকিব ভুক্তভোগী নাজমার পথ রোধ করে। এসময় থামতে না চাইলে রাকিব তাকে টানাহ্যাঁচড়া করে তার জামা ছিঁড়ে যায়। পরে রাকিব তাকে থাপ্পড় মারে। ঘটনাটি জানতে পেরে নাজমার বন্ধুরাসহ ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নুর ও মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এ সময় তাদের উপস্থিতিতেই রাকিবের সহযোগী ছাত্রলীগ নেতা পারভেজ হোসেন ও আরিফ হোসেনের নেতৃত্বে ভুক্তভোগী নাজমার সহপাঠীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
অভিযুক্ত রাকিব আল হাসান বলেন, নাজমার সঙ্গে আমার এক বছরের সম্পর্ক ছিল। গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে মমতাজউদ্দিন ভবনের সামনের তাবুতে বান্ধবীসহ অ্যাপ্লিক্যান্টের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এ সময় নাজমা এসে আমার বান্ধবীর পরিচয় জানতে চাইলে তার সঙ্গে আমার বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে নাজমা আমাকে থাপ্পড় মারে। তখন আমিও তাকে একটা থাপ্পড় মারি। এ সময় রাস্তার বিপরীত দিক থেকে নাজমার চার-পাঁচজন বন্ধু এসে আমাকে চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারে। পরে ছাত্র উপদেষ্টা স্যারকে কল দিলে তাৎক্ষণিক তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর আশেপাশে থাকা আমার বন্ধুরা স্যারের সঙ্গে কথা বলতে আসলে নাজমার বন্ধুরা আমাদের ওপর আবার আক্রমণ করে।
মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পারভেজ হোসেন বলেন, আমি এই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না। কেউ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমার নাম বলেছে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন বলেন, আমার বন্ধুকে মারধরের করা হচ্ছে বিষয়টি জানতে পেরে আমরা আমাদের বিভাগের অনেকে ঘটনাস্থলে আসি। আমরা সেখানে আসার পর কাউকে কোনো প্রকার মারধর করিনি।
ছাত্র উপদেষ্টা এম. তারেক নূর বলেন, খবর পেয়ে মতিহার থানার ওসিসহ আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাজমা খাতুনকে শান্ত করে তার হলে পাঠিয়ে দিই। এরপর অন্যান্য ছেলেরা যারা ছিল, তাদের নিয়ে আমার দফতরে দিকে রওনা দিই। এসময় ছাত্রলীগ নেতা পারভেজ হোসেন ও আরিফ হোসেনের নেতৃত্বে নাজমার বন্ধুদের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়। বিষয়টি নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক: মো. তাজবীর হোসাইন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড