চীন প্রতিনিধি
চীনের চিয়াংশি প্রদেশের নানছাং শহরে অবস্থিত চিয়াংশি ইউনিভার্সিটি অব ফিন্যান্স অ্যান্ড ইকোনমিক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বছরের আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসবের থিম ছিল "ক্যাম্পাসে পুনর্মিলন"। উৎসবে বাংলাদেশি স্টলে এসে প্রশংসা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
গত শনিবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে বাছিয়াও গার্ডেনের উত্তর অঞ্চলের রাইজিং স্কয়ারে এই আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন পিএইচডি গবেষক মোহাম্মদ ছাইয়েদুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মরোক্কান শিক্ষার্থী ইমানে আফকির ইউনী এবং চাইনিজ শিক্ষার্থী লিয়াং চিয়ানইয়াং এর যৌথ উপস্থাপনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ডক্টর তং হুই।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, রাষ্ট্রদূত অ্যান্ডারসন এন. মাদুবাইক, নাইজেরিয়া কনস্যুলেট জেনারেল, সাংহাই এবং কনস্যুলার শিক্ষা অফিসের পরিচালক মিস জয়নব জয় মনডু। এছাড়াও অনুষ্ঠানে চীনা, বিদেশী শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসবে বাংলাদেশি একটি স্টল ছিল। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি স্টলে খিচুরি, পিঠা, পাকোরা, সমুচা, চিকেন রোল, পায়েস, মিষ্টি, হাঁসের মাংস ভুনা সহ
অন্যান্য খাবার প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও রয়েল বেঙ্গল টাইগার, জাতীয় ফুল-ফল-পাখি এবং দর্শনীয় স্থান এর ছবি প্রদর্শন করা হয়। বাংলাদেশি স্টলে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল জাতীয় পতাকা অঙ্কন এবং বাংলাদেশি ফ্রেমে ছবি তুলা।
প্রেসিডেন্ট ডক্টর তং হুই তার বক্তব্যে বলেন, স্কুলের আন্তর্জাতিক ছাত্রদের কার্যক্রমের অত্যন্ত প্রশংসা করে। যারা মহামারী চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের সাথে একে অপরকে সহায়তা করেছিল এবং মহামারী প্রতিরোধে এক সঙ্গে কাজ করেছিল তিনি তাদেরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানে আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসবের ভূমিকার উপর জোর দিয়েছে চীন এবং বিদেশী দেশগুলির মধ্যে বিভিন্ন সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য বিনিময়ে বদ্ধপরিকর।
রাষ্ট্রদূত অ্যান্ডারসন এন. মাইদুবাইক তার বক্তব্যে বলেন, চীন-আফ্রিকা বন্ধুত্বের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং চীন-আফ্রিকা বিনিময় ও সহযোগিতা আরও গভীরতর হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে, আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসবের অধিবেশনটি চীন-আফ্রিকান সহযোগিতা এবং উন্মুক্ততার একটি সুন্দর প্রতীক। তিনি আশা করেন যে সমস্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, বিশেষত আফ্রিকান শিক্ষার্থীরা চীন-আফ্রিকা বন্ধুত্ব আরও বিকাশের জন্য চীনে অধ্যয়নকালে তাদের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে কঠোর অধ্যয়ন করবে এবং অবদান রাখবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মো. আকবর হোসেন একটি চীনে গানের পারফরম্যান্সে অংশগ্রহণ করেন। আয়োজনে সহযোগিতায় ছিলেন মো. ওলিউদ্দিন, মো. মাহমুদুর রহমান রোকন, মো. হাচিবুল হক, আরিফ আহম্মেদ, ফাহিম সৈয়দ মোহাম্মদ, ফারহানা জামান রজনী, শাহরিয়ার বিন সারওয়ার, তৌহিদুল আনাম রুহান, মো. খালিদ হোসেন (শাকিল), তানভীর ইসলাম, মো. মামুন, মো. নাদিমুল আকরাম, মোঃ রুমন হোসেন সহ আরেও অনেকে।
বিভিন্ন দেশ থেকে আগত শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে নিজ দেশের নৃতাত্ত্বিক কারুশিল্প, গেম ক্রিয়াকলাপ এবং বিশেষ রান্নার মাধ্যমে দেশের সংস্কৃতি এবং স্থানীয় রীতিনীতি প্রদর্শন করে। সাংস্কৃতিক উৎসবে স্কয়ারের উভয় পাশে বিদেশি স্টল সহ একটি চীন সংস্কৃতি প্রদর্শনী স্টল ছিল। এছাড়া বাছিয়াও গার্ডেনের উত্তর অঞ্চলের রাইজিং স্কয়ারে চিত্র প্রদর্শনী করা হয়েছিল।
উৎসবে বাংলাদেশ, চীন, মরোক্কো, বেনিন, তানজানিয়া, নাইজেরিয়া, নিরক্ষীয় গিনি, গিনি, ঘানা, নামিবিয়া, লাইবেরিয়া, জিম্বাবুয়ে, কঙ্গো, ইথিওপিয়াসহ ১৪টি দেশ অংশগ্রহণ করে। ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক এই সাংস্কৃতিক উৎসবে দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তাছাড়া প্রায় ৫০ হাজার লোক অনলাইনের মাধ্যমে এই মনোরম সাংস্কৃতিক উৎসব উপভোগ করে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড