উজ্জ্বল ক্যারিয়ার গড়ুন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে
শিক্ষা ডেস্ক
সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর পরই অধিকাংশ বাবা-মা ঠিক করে ফেলেন ভবিষ্যতে সন্তান কী নিয়ে ক্যারিয়ার গড়বে। মেয়ে হলে ডাক্তার, আর ছেলে হলে ইঞ্জিনিয়ার। বর্তমানে ডাক্তারি পেশায় মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরা যেমন ভালো করছে ঠিক তেমনি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ছেলেদের সাথে তাল মিলিয়ে মেয়েরাও অনেকটা এগিয়ে। এখন ছেলে হলে ইঞ্জিনিয়ার, মেয়ে হলে ডাক্তার বাবা-মায়ের বেঁধে দেওয়া সেই স্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসছে অনেকেই।
এখন অধিকাংশ ছেলে-মেয়েই বাল্যকাল থেকে স্বপ্ন বুনেন বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবেন। আবার অনেকে আছেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেছেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়বেন।
যারা বাল্যকাল থেকে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন এবং যারা হঠাৎ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য বেশি আগ্রহী। ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়গুলোর মধ্যে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতি শিক্ষার্থীদের অধিক দুর্বলতা কাজ করে বলে জানিয়েছেন ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে দেশ এবং দেশের বাইরে এ বিষয়টির অনেক চাহিদা রয়েছে।
দিন দিন এ বিষয়টির চাহিদা যেমন বাড়ছে তেমনি সমান তালে বাড়ছে চাকরির সুযোগ। এ বিষয়ে পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থী আইবিএম, মাইক্রোসফট ও গুগলের মতো বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন। সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমসহ বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই সিএসই পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন পড়ছে। এছাড়া, সরকারি বহু প্রতিষ্ঠানে আইটি সেল খোলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার সুযোগ। এক পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে দেশের সাড়ে ১৩ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে একটি বড় অংশ হচ্ছেন সিএসই পড়ুয়া শিক্ষার্থী। এসব বিবেচনা করলে দেখা যায় সিএসইতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বর্তমানে যেমন বাড়ছে, তেমনি ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।
যারা দীর্ঘদিন ধরে কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখেছেন আর নতুন করে যারা এ বিষয়ে পড়ার জন্য মনস্থির করেছেন তাদের জানা প্রয়োজন দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ বিষয়টির শিক্ষার মান কেমন। সিএসই বিষয়টির শিক্ষার মানের কথা যদি বলা যায়, তাহলে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। এছাড়া, চুয়েট, কুয়েট, রুয়েট আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ের শিক্ষার মানও কোনো অংশে কম নয়।
তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যদি কম খরচে এবং শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে সিএসই বিষয়ে পড়তে চান তাহলে বেছে নিতে পারেন রাজধানীর অন্যতম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি। ঢাকার গ্রিন রোডে প্রতিষ্ঠানটির মূল ক্যাম্পাস। দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি। বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত।
সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ফ্যাকাল্টির অধীন কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিষয়টি।
জানা যায়, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদের সুন্দর ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা রেখে সি, সি++, জাভা প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষতা, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস, ওয়েব প্রোগ্রামিং, ডাটা স্ট্রাকচার, অ্যালগরিদম, ডাটাবেজ ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোর প্রতি বেশি জোর দেওয়া হয়। কারণ এসব বিষয়ে ভালো দখল থাকলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে যেন ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ড. এম. এ. মাবুদ বলেন, এই বিভাগে যেসব স্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক রয়েছেন তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ। বিভাগের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের প্রতি অনেক যত্নশীল। এখানে বুয়েটসহ দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা ক্লাস নেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক ল্যাব সুবিধা।
সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে সিএসইতে কেন পড়বেন শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একাধিক শিক্ষক জানান, প্রথমত : এক ঝাঁক দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা বিভাগটি পরিচালিত। এ বিভাগের কোর্স কারিকুলাম আন্তর্জাতিক মানের যেটি সম্পূর্ণ বুয়েটের আদলে তৈরি। দ্বিতীয়ত : শিক্ষার্থীদের প্রফেশনাল ফিল্ডের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এখানে ‘এসইউ আইসিটি অ্যান্ড ক্যারিয়ার ক্লাব’ ও ‘এসইউ প্রোগ্রামিং ক্লাব’ নামে দুইটি ক্লাবও রয়েছে। এর মধ্যে এসইউ প্রোগ্রামিং ক্লাবের মাধ্যমে সারাবছর শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিং ডেভেলপমেন্টের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অন্যদিকে, এসইউ আইসিটি অ্যান্ড ক্যারিয়ার ক্লাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্যারিয়ারভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়া, প্রত্যেক সেমিস্টারে বাধ্যতামূলক অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন এবং বিভিন্ন ধরনের ওয়ার্কশপ ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। তৃতীয়ত : দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য স্পেশাল কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও করা হয়।
দেশের বাইরে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী সরকারি স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন উল্লেখ করে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ জানান, ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনেক শিক্ষার্থী সরকারি স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য জাপান, সুইডেন, জার্মানি পাড়ি দিয়েছেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দরিদ্র মেধাবী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য সিএসই বিভাগে শতভাগ স্কলারশিপের সুযোগ রয়েছে বলে জানান তারা।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা খাতে বিপুল অর্থ ব্যয় করে থাকে। ২০১৮ সালে গবেষণা খাতে ব্যয়ের দিক থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চতুর্থ স্থান অর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে করপোরেট জবে যোগ্য করে গড়ে তুলতে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে হাতে-কলমে শিক্ষা দিয়ে থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে রয়েছে- ক্যারিয়ার গোলস, পাবলিক স্পিকিং, সিভি ও রিজিউম রাইটিং, জব ইন্টারভিউ, কোয়ানটেটিভ অ্যানালাইসিস ও অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটি, আইকিউ, লেখার দক্ষতা ও লিখিত পরীক্ষা, কাস্টমার সার্ভিস স্কিল এবং ডেমো ইন্টারভিউ ও অ্যাসেসমেন্ট ইত্যাদি। এছাড়া আরও রয়েছে বিষয় সংশ্লিষ্ট পাঠ্যবইয়ে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার, অত্যাধুনিক ক্লাসরুম, ডিবেটিং ক্লাব, কালচারাল ক্লাব ও স্পোর্টস ক্লাব।
সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়নের ক্ষেত্রে চতুর্থ বিষয় ব্যাতিত আপনার যদি এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৫ থাকে তবে আপনি ১০০ ভাগ ওয়েভার পাবেন। যদি ৪.৮০ স্কোর থাকে তবে আপনি ওয়েভার পাবেন ৫০ ভাগ। এভাবে ক্রমান্নয়ে ৩.৫ পর্যন্ত আপনি ওয়েভার পেতে পারেন। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব (http://www.su.edu.bd/) ওয়েবসাইটে।
সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির সেশন : এখানে স্প্রিং (জানুয়ারি-এপ্রিল), সামার (মে-আগস্ট) ও ফল (সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর) এ তিনটি সেশনে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়।
যোগাযোগ :
ক্যাম্পাস-১ : ১৪৭/১, গ্রিন রোড, তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫। ফোন : ৪৮১১২২৪৭ মোবাইল : ০১৯৫৫৫২৯৭১৫, ০১৯৫৫৫২৯৭১৬, ০১৯৫৫৫২৯৭১৭, ০১৯৫৫৫২৯৭২০, ০১৯৫৫৫২৯৭০৯
ক্যাম্পাস-২ : জেএ -১৪৬ ওয়ার্লেস গেট, মহাখালি ঢাকা। মোবাইল : ০১৯৫৫৫২৯৭০২, ০১৯৫৫৫২৯৭০৮, ০১৯৫৫৫২৯৭২২, ০১৯৫৫৫২৯৭২১
