কুবি প্রতিনিধি
স্বতন্ত্র সংযোগ কিংবা জেনারেটরের ব্যবস্থা না থাকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলাকালীন থমকে থাকে অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম। একই সঙ্গে বিঘ্নিত হয় শিক্ষকদের গবেষণা এবং অ্যাকাডেমিক কাজও।
তবে বিষয়গুলো নিয়ে একাধিকবার পত্রিকার পাতায় খবর প্রকাশিত হলেও শুধু আশ্বাস ছাড়া কোন সমাধান করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় যে সংযোগ লাইনের আওতাধীন তা একাধারে কুমিল্লা বার্ড, পলিটেকনিক, ক্যাডেট কলেজ, টিটিসিসহ কাটবাড়ী অঞ্চলের প্রায় সবগুলো প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটায়। এতে বিভিন্ন সময়ে সামান্য ঝড়বৃষ্টি কিংবা লোডশেডিংয়ের কারণে দীর্ঘ ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। আবার মাঝেমধ্যেই লাইন মেরামতের অজুহাতে সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সংযোগ বন্ধ থাকে।
এ দিকে, শিক্ষকদের অভিযোগ, গবেষণার কাজে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে প্রায়ই রাত জেগে বিভাগে বসে কাজ করতে হয়। আর শিক্ষার্থীদের দাবি, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বিভিন্ন সময়েই পড়তে হয় নানা ভোগান্তিতে। এর মধ্যে পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় দিনের বেলায় মাত্রাতিরিক্ত গরমের প্রকোপ এবং রাতের বেলায় তৈরি হওয়া ক্যাম্পাসের ভুতুড়ে পরিবেশে বহিরাগত মাদকসেবী ও বখাটেদের আনাগোনায় নিরাপত্তাহীনতায় থাকে তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতিকালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) রয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলাকালীন নিজস্ব জেনারেটরের ব্যবস্থা। এছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলাকালীন বিভাগগুলোতে রয়েছে জেনারেটর সুবিধা এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সাপ্লাইয়ের জন্য রয়েছে দুইটি সংযোগ লাইন। এছাড়াও নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থাকলেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই কোনো বিকল্প ব্যবস্থা।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থী তাসনিম রহমান আসিফ জানান, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, বিষয়টি শিক্ষার্থী হিসাবে লজ্জাজনক। দিনের বেলায় তীব্র গরম আবার রাতের বেলায় নির্জন ক্যাম্পাসে সীমানা প্রাচীর না থাকায় বহিরাগতদের উৎপাত উদ্যোগের কারণ। সংযোগ নিরবিচ্ছিন্ন করার দাবিতে আমরা আগেও কথা বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের নিরব প্রশাসন সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ করেনি। একটাই দাবি দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা হোক।’
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি রশিদুল ইসলাম শেখ দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পরিসরে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে এমন বাজে অবস্থা কোনভাবেই কাম্য নয়। যারা প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন এটা তাদের ব্যর্থতা। শুধুমাত্র ডাবল ফেইজের সংযোগ নিলেই এই সমস্যার সমাধান বহু আগে সম্ভব ছিল। দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি রয়েছে। কিন্তু আমরা এখনও নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হচ্ছি।’
আরও পড়ুন : স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত কাল
এসব অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. আবু তাহের দৈনিক অধিকারকে জানান, ‘নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে হলে আলাদা সাবস্টেশন প্রয়োজন। কিন্তু নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়াতে আমরা তা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এতদিন ছিল অর্থ সংকট। তবে নতুন প্রকল্পে আমাদের আলাদা সাবস্টেশন রয়েছে। সে পর্যন্ত ধীরে ধীরে পুরো ক্যাম্পাসকে জেনারেটর সুবিধার আওতাভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড