হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
বিশেষ একধরনের ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) একদল গবেষক। এসব ব্যাকটেরিয়া কীটনাশক খেয়ে জীবন ধারণ করতে পারে এবং জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশকের পরিমাণ ৭০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ কমাতে পারে।
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আজিজুল হকের নেতৃত্বে ব্যাকটেরিয়াগুলোর জীবনরহস্য উন্মোচিত হয়। বিভাগের শিক্ষক ও পিএইচডি ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা গবেষণাটি করেন।
গবেষকরা জানান, ব্যাকটেরিয়াগুলো কীটনাশক খেয়ে জীবন ধারণ করতে পারে এবং জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশকের পরিমাণ ৭০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ কমাতে পারে। বিভাগের গবেষণাগারে ৮০টি ব্যাকটেরিয়া নিয়ে দুই বছর ধরে চলছে গবেষণা। এখন পর্যন্ত ৬টি ব্যাকটেরিয়ার জীবনরহস্য উন্মোচিত হয়েছে। সনাক্তকৃত ব্যাকটেরিয়াগুলো হলো- এনটারোব্যাকটার, অ্যাসিনেটোব্যাকটর, সেরাটিয়া, মরগানেল্যা, ক্লেবসিয়েলা আই সিট্রোব্যাকটার।
কীটনাশকের পরিবর্তে এই ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করলে একদিকে ফসলের উৎপাদন বাড়বে, অন্যদিকে জমির উর্বরতাও থাকবে দীর্ঘদিন। ব্যাকটেরিয়াগুলো টমেটো, ধান ও বেগুনগাছসহ অন্যান্য ফসলে স্প্রে করলে গাছের দেহে সেগুলো প্রবেশ করে এবং মিথোজীবী সহাবস্থানের মাধ্যমে বাতাস থেকে উদ্ভিদের শরীরে নাইট্রোজেন ফসফরাস ও ফসফেট সংবন্ধন করতে পারে। এতে ফসল উৎপাদনে সার কম লাগে ৮০ শতাংশ, মাত্র ২০ শতাংশ সার প্রয়োগে ফসল ফলানো যাবে।
গবেষক দলের প্রধান ড. মো. আজিজুল হক জানান, ফসলে প্রয়োগকৃত কীটনাশকের একটি অংশ খাবারে থেকে যায় যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এই ধারণাকে কেন্দ্র করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে ১টি গবেষণা প্রস্তাবনা পাঠানো হয় এবং পরবর্তীকালে প্রকল্পটি নির্বাচিত হয়।
আরও পড়ুন : সিন্ডিকেটের চাপে ফের ভিক্ষাবৃত্তিতে পথশিশু আকাশ-চাঁদনি
দুই বছরের গবেষণায় ছয়টি ব্যাকটেরিয়াকে সনাক্ত করা হয়েছে। উদ্ভিদে বিদ্যমান কীটনাশক খেয়ে জীবন ধারণ করে এসব ব্যাকটেরিয়া। ব্যাকটেরিয়াগুলো পুষ্টি জোগাতেও উদ্ভিদকে সহায়তা করে। সম্প্রতি এই ব্যাকটেরিয়ার জিনোম সিকোয়েন্সগুলো ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (এনসিবিআই) ইউএসএ থেকে ভ্যালিডেটে করে একসেশন নম্বর দিয়েছে।
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. ইয়াছিন প্রধান বলেন, ‘গবেষণাগারে আমরা ছয়টি ব্যাকটেরিয়ার পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য উন্মোচন করতে পেরেছি। ব্যাকটেরিয়াগুলো গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ভবিষ্যতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানো সম্ভব হবে। বর্তমানে আমরা গবেষণাটি মাঠ পর্যায়ে করছি। বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আজিজুল হক গবেষণাটিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।'
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড