• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

টিকিট-বিড়ম্বনা কমিয়ে আনতে ব্যবস্থা নিন

  অধিকার ডেস্ক    ২০ মে ২০১৯, ১৯:৩২

ঈদ এলেই যে জিনিসটা নিয়ে আমাদের সবচাইতে বেশি ঝঞ্ঝাট পোহাতে হয়, সেটি হলো বাস ও ট্রেনের টিকিট। প্রতি ইদের মতো এবারও ইতোমধ্যেই ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাস ও ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রয়ের ঘোষণা দেয়া হয়েছে৷ বাসের টিকিট বিক্রি শুরুও হয়ে গেছে গত শুক্রবার থেকে৷ ২২ মে থেকে পাওয়া যাবে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট।

বাসের টিকিট বিক্রয়ের শুরুর দিন থেকেই নানা অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। ভোর থেকেই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষকে টিকিট সংগ্রহ করতে দেখা যাচ্ছে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরেও কাঙ্ক্ষিত টিকিট না পাওয়া এবং টিকিটের দাম স্বাভাবিকের চাইতে বেশি রাখার খবর গণমাধ্যমগুলোতে আসতে শুরু করেছে। এ বছর যেহেতু চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৫ জুন বাংলাদেশে ঈদ হবার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই ২, ৩ ও ৪ জুনের টিকিটের চাহিদা বেশি৷ একই দিনে টিকিটের চাহিদা অত্যধিক হওয়ায় তা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ। যেহেতু সবসময়ই ঈদের আগের তিন দিনেই টিকিটের ওপর চাপ বেশি থাকে, তাই এ সময়ে যানবাহনের সংকট সৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক৷ তারপরেও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বপূর্ণ ব্যবস্থাপনা এবং যাত্রীসেবার ব্যাপারে পরিবহন মালিকদের যথেষ্ট আন্তরিকতা বজায় থাকলে ঘরমুখো মানুষের এ চাহিদা পূরণের মাধ্যমে সংকট-উত্তরণ অসম্ভব হবার কথা নয়।

প্রতি বছরই এ রকম সময়টাতে সরকারের পক্ষ থেকে নানান পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়৷ কিন্তু প্রকৃত বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায় খুবই কম। তাই এর তেমন কোনো সুফল পাওয়া যায় না। একই সাথে, এ সময়ের পরিবহন-সংকটের সুযোগ নেয় কিছু অসাধু পরিবহন-ব্যবসায়ী, লিপ্ত হয় অনৈতিক বাণিজ্যে৷ তাই সব মিলিয়ে, প্রতি বছরই টিকিটের অতিরিক্ত দাম, হয়রানি ও কালোবাজারির মতো অভিযোগ উত্থাপিত হতে দেখা যায়।

এসব ব্যাপারে সরকারের তৎসংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো নিশ্চয় ওয়াকিবহাল৷ এসবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়৷ কিন্তু এত কিছু করেও যাত্রীদের জন্য পুরোপুরি সুফল বয়ে আনা সম্ভব হয় না। এ বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়নের মধ্যখানে ফাঁকিটা কোথায় সেটা খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা হাতে নিতে হবে৷ এবং এ ক্ষেত্রে যাত্রীদের হয়রানি হ্রাসে সকল প্রকার অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।

টিকিট বিক্রয় সংক্রান্ত যে কোনো ধরনের অনিয়ম রোধে কঠোর তদারকির বিকল্প নেই। সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এ ব্যাপারে তৎপর হতে হবে। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ সময়গুলোতে পরিবহনখাতে যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধি ও ভাড়ার হার সাধারণের নাগালের মধ্যে রাখাসহ নানাভাবে জনসাধারণের ভোগান্তি কমাতে পরিবহন-মালিকদের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে হবে। পরিবহন-ব্যবসায়ের সাথে জড়িতদের সকল প্রকার অনৈতিক প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ঈদে ঘরমুখো মানুষদের নিরাপদ যাত্রা এবং সিডিউল-জটিলতা কমিয়ে সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও ভোগান্তিহীন পরিবহন-ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে মালিকপক্ষকে দায়িত্বশীল, কর্তব্যপরায়ণ ও আন্তরিক অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। সেই সাথে, কেবল ঘোষণায় নয়, প্রকৃত বাস্তবে সরকারের নির্দেশনা মেনে টিকিট বিক্রয়ের কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কি না, তা মনিটরিংয়ের মাধ্যমে যাত্রীসেবা নিশ্চিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়া এবং ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরে আসা পর্যন্ত মানুষের যাত্রা যেন নির্বিঘ্ন হয়, যে কোনো মূল্যে এটি নিশ্চিত করা হবে— এটাই প্রত্যাশা।

ওডি/আরএডি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড