অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
২০১৯-২০ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংককে ৩ হাজার ১০৭ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। গত অর্থবছর এ খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলো ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ২ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা এবং অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণ থেকে ৪০২ কোটি টাকা আদায় করতে হবে বলেও নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর সাথে পৃথকভাবে সম্পাদিত ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির আওতায় এ পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল ২০১৮-১৯ অর্থবছরে খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। এছাড়া দু’একটি ব্যাংক ছাড়া বেশিরভাগ ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ ‘চলতি মানের নিচে’ বা সন্তোষজনক নয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছর ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। যার ভেতর শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৮০ কোটি টাকা এবং অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণ থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৫৫ কোটি টাকা। অথচ ব্যাংকগুলো ১ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা ও প্রায় ১৭৮ কোটি টাকা আদায় করেছে।
২০১৯-২০ অর্থবছর সোনালী ব্যাংককে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা (শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ১০০০ কোটি টাকা ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ২০০ কোটি টাকা) খেলাপি ঋণ আদায় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে। গত অর্থবছর তাদের খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। ার তারা আদায় করেছে ৭১০ কোটি টাকা।
জনতা ব্যাংককে ৮৫০ কোটি টাকা (শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ৮০০ কোটি টাকা ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ৫০ কোটি টাকা) খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। গত অর্থবছর তাদের খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮০ কোটি টাকা। আর ব্যাংকটি আদায় করেছে ৫৯৪ কোটি টাকা। যার মধ্যে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে মাত্র ২৭ কোটি টাকা আদায় করেছে।
অগ্রণী ব্যাংককে ৪৮০ কোটি টাকা (শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ৪০০ কোটি টাকা ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ৮০ কোটি টাকা) খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। ২০১৮-১৯ অর্থবপছর তাদের খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৫০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি আদায় করেছে ৩০৯ কোটি টাকা।
রূপালী ব্যাংককে শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ২৫০ কোটি টাকা ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ৩৫ কোটি টাকা অর্থাৎ মোট ২৮৫ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। গত অর্থবছর তাদের মোট খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। ব্যাংকটি আদায় করেছে ১৭১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
২০১৯-২০ অর্থবছর বেসিক ব্যাংককে ১৫৭ কোটি টাকা (শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ১৫৫ কোটি টাকা ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ২ কোটি টাকা) আদায় করতে হবে। এর আগের বছর ব্যাংকটির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫০ কোটি টাকা। আর ব্যাংকটি আদায় করতে পেরেছে ১৩৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
এই অর্থবছর বিডিবিএল ব্যাংককে ১৩৫ কোটি টাকা (শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ১০০ কোটি টাকা ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ৩৫ কোটি টাকা) খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। ব্যাংকটির গত অর্থবছর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২০ কোটি টাকা। অথচ ব্যাংকটি আদায় করেছে ৯৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, আমরা কয়েক বছর ধরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির আওতায় রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলোর পারফরমেন্স মূল্যায়ন করে থাকি। এ মূল্যায়ন প্রতি তিন মাস পর পর করা হয়েছে। এবার ব্যাংকগুলোকে যে টার্গেট দেয়া হয়েছে, আমরা আগামী মাসে তার মূল্যায়ন করব।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড