• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কার্ড আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করলে সঙ্কটে পড়বে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো 

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

১৪ জুলাই ২০১৯, ১২:০৭
কার্ড আমদানি
(ছবি: সংগৃহীত)

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে দেশীয় উৎপাদকরা শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন। এটি করা হলে দেশে সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে বলে মনে করছেন তারা। আর এই ভ্যাট প্রত্যাহার করে নিলে এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিত ও সুদক্ষ কয়েক হাজার কর্মী বেকার হয়ে যাবে বিশেষ নারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।শুধু তাই নয়, সরকারও প্রতিবছর শতকোটি টাকা রাজস্ব হারাবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে কয়েক বছর ধরে নতুন পণ্য হিসেবে এটিএম কার্ড, চিপ বেসড ভিসা কার্ড, মাস্টারকার্ডসহ বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল লেনদেনের স্মার্ট কার্ড উৎপাদন হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত দেশের ব্যাংকগুলোকে এই কার্ড সরবরাহ করে আসছে। ফলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণ হচ্ছে। তবে শুরুর গল্পটা এমন ছিল না। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠানগুলো অনিশ্চয়তা থাকার পরেও বিপুল বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠান থেকে মোবাইল ফোনের সিমকার্ড তৈরি হচ্ছে। দেশীয় এসব প্রতিষ্ঠান থেকেই বর্তমানে চাহিদার শতভাগ সিমকার্ড সরবরাহ করা হচ্ছে। সাথে সাথে এসব আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও লাভ করেছে পণ্যের মান ও নিরাপত্তা।

সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে দেশে ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ডিজিটাল লেনদেনে প্রায় দেড় কোটি কার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে। আর দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এসব কার্ডের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ উৎপাদন করছে। আর চাহিদার বাকি অংশ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। বর্তমানে এই দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই বৈশ্বিক পর্যায়ে জনপ্রিয় ও হ্যাকিং প্রতিরোধী চিপ বেসড কার্ড উৎপাদন করছে; যা মাস্টারকার্ড, ভিসা কার্ডে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু নিরাপত্তার অযুহাত দেখিয়ে কিছু ব্যাংক কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী বিদেশ থেকেই উচ্চ মূল্যে কার্ড আমদানি করতে বেশি আগ্রহী। যার অন্যতম কারণ হচ্ছে আন্ডার ইনভয়েস করে শুল্ক ফাঁকি ও ওভার ইনভয়েস করে অর্থ পাচার।

জানা গেছে, সম্প্রতি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর ব্যাংকিং খাতের জন্য আমদানি হওয়া এটিএম, আইডিএম, সিএসএম, সিডিএম, সিআরএম, এসটিএম ও আইডিএমসহ ডিজিটাল ব্যাংকিং প্রযুক্তি পণ্য সরবরাহকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে। তারা চীন, হংকং, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে আমদানি করা এটিএম ও সিআরএম মেশিনের ক্রয়মূল্য কম দেখানোর অভিযোগও খতিয়ে দেখছে। এজন্য শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করার জন্য ২০০৮ সালে আমদানিকৃত সিমকার্ডের ওপর ট্যারিফ ভ্যালু নির্ধারণ করায় এ খাতে বিনিয়োগকারীরা উৎসাহী হয়। শূন্য থেকে যাত্রা শুরু করে তখন উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়ায় সাতটিতে। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের সব ব্যাংকে ব্যবহৃত সব ধরনের ব্যাংক কার্ড উৎপাদনের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কারখানা স্থাপন করে। সরকার দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে আরও উৎসাহী করতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে আমদানিকৃত কার্ডের ওপর ২-২.৫০ ডলার ন্যূনতম মূল্য সংযোজন করে। মূলত কম মূল্য দেখিয়ে আমদানি করা কার্ডের শুল্ক ফাঁকি রোধ করার জন্যই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পাশাপাশি দেশীয় শিল্পের বিকাশ বাড়াতে আরও সরকার প্রায় এক হাজার পণ্যের ওপর মিনিমাম ভ্যালু নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু এখন এনবিআর আমদানি করা কার্ডের ওপর মিনিমাম ভ্যালু বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।

সিল্কওয়েজ কার্ড অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেডের এমডি শেখ ফরিদ আহমেদ এ প্রসঙ্গে বলেন, গুটিকয়েক সুবিধাভোগী আমদানিকারকের চাপের মুখে সরকার এই এসআরওটি প্রত্যাহারের চেষ্টা করছে। আর এনবিআর আমদানিকৃত কার্ডের ওপর মিনিমাম ভ্যালু আরোপের এসআরওটি প্রত্যাহার করে নিলে দেশীয় কার্ড উৎপাদকরা অস্তিত্ব সংকটে পড়ে যাবে। শুধু তাই নয়, সরকারও প্রতিবছর প্রায় শতকোটি টাকার রাজস্ব হারাবে।

ওডি/টিএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড