অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
দিন দিন বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আমাদের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হচ্ছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় বহুজাতিক কোম্পানিগুলো দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে।
সম্প্রতি নিক্কেই এশিয়ান রিভিওয়ের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় একটি অত্যন্ত কৌশলগত স্থানে বাংলাদেশ অবস্থান করছে। এর ১৬ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বয়সই ২৫ বছরের কম। তাই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে শক্তিশালী ক্রমবর্ধমান বাজার হিসেবে দেখছে।
এদিকে ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ইউএনসিটিএডি)থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ ৬৮ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ৩ দশমিক ৬১ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। যা ২০১১ সালের চেয়ে তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি।
তাছাড়া সম্প্রতি জাপান টোবাকো বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিগারেট নির্মাতা আকিজ গ্রুপের কোম্পানি ঢাকা টোবাকোকে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিমইয়ে কিনে নিয়েছে। ফলে আমাদের দেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। আর চীনের সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্চও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ২৫ শতাংশ স্টেক কিনেছে। এটি বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের একটি অংশ। এছাড়া মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী কোম্পানি বিকাশের ২০ শতাংশ শেয়ার কিনেছে চীনের আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিংয়ের কোম্পানি আলিপে।
নিক্কেই এশিয়ান রিভিউকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বাংলাদেশ শাখার প্রতিনিধি র্যাগনার গুডমুন্ডসন বলেন, বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ বাড়াতে চলমান সংস্কারের গুরুত্বের পাশাপাশি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে। তিনি আশা করছেন, গত বছরের তুলনায় জুনের শেষ নাগাদ চলতি অর্থবছরের এফডিআই ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে মেট্রোরেল, সেতু, টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যান্য প্রকল্প নির্মাণ করছে। এতে শত শত কোটি মার্কিন ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ রয়েছে। এর অধিকাংশই চীন ও জাপান থেকে এসেছে বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
দেশজুড়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির কারণেই দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ প্রকাশ করছেন। আর এভাবেই বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই জাপানের সুমিতোতো, নিপ্পন স্টিল, সোজিৎজ, শিনওয়া ও মারুহিসার মতো কোম্পানিগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
বাংলাদেশে ইকোনোমিক জোনস অথোরিটি (বেজা) জানায়, সোজিৎজ একাই বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি বেসরকারি বন্দর ও শিল্প পার্ক নির্মাণে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ১৭.৯ বিলিয়ান বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সুযোগ সুবিধার দেশ। আপনারা এর মূল্যায়ন করতে পারেন।
এদিকে ইউএনসিটিএডির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে,দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এফডিআইয়ের ক্ষেত্রে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। তৈরি পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের চেয়ে এফডিআইয়ে পিছিয়ে আছে। তবে বাংলাদেশ মিয়ানমার, ইথিওপিয়া ও কম্বোডিয়ার চেয়ে এগিয়ে আছে।মিয়ানমারের এফডিআই ৩.৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ইথিওপিয়ার ৩.৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও কম্বোডিয়ার ৩.১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড