• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মাছ রপ্তানিতে আয় কমেছে ৫৬ কোটি টাকা

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

১৩ জুলাই ২০১৯, ১৩:৫২
মাছ রপ্তানি
মাছ রপ্তানিতে বাংলাদেশ (ছবি: সংগৃহীত)

বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করছে। আর রপ্তানির শীর্ষে এ জায়গা দখল করে নিয়েছে চিংড়ি মাছ। পাশাপাশি কই, শিং, টাকি, রুপচাঁদা, আইড়, বোয়াল, মলা, কাচকি, বাতাসি, ভেটকি, পাবদা ইত্যাদি মাছও রপ্তানি হচ্ছে।

তবে দিন দিন দেশ থেকে এই মাছ রপ্তানির পরিমাণ জমে যাচ্ছে। পাঁচ বছর আগের তুলনায় এ খাতে রপ্তানি আয় কমছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করে ৪ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা ৩১ লাখ টাকা (৫০ কোটি ৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার) আয় করেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই আয় ছিল ৪ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে আয় কমেছে ৫৬ কোটি টাকা।

গত ৩০ জুন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাসের দিন সরকারি দলের কিশোরগঞ্জের সাংসদ মো. আফজাল হোসেনের লিখিত প্রশ্নের জবাবে মৎস্য খাতের রপ্তানি আয়ের পাঁচ বছরের তথ্য দেন।

তিনি জানান, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে রপ্তানি আয় ছিল ৪ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪ হাজার ২৮২ কোটি টাকা এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা রপ্তানি আয় হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আশরাফ আলী খান রপ্তানি কমার কারণ সরাসরি কোনো কারণ জানান নি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাছ রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য নতুন নতুন বাজার খোঁজা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবেই ইতোমধ্যে তার নেতৃত্বে একটি দল রাশিয়া যাবে।

ঐদিন মন্ত্রী সংসদকে জানান, বাংলাদেশের মৎস্য ও মৎস্যপণ্যের প্রধান আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর পাশাপাশি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, রাশিয়া ইত্যাদি । এছাড়া ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, মরক্কো, লেবানন, কানাডা, মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, জর্ডান, ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশেও রপ্তানি করা হয়। আর প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ ও মিয়ানমারে মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানি করা হয়।

পাঁচ বছরে মাছ রাপ্তানর পরিমাণ কমেছে (ছবি সংগৃহীত)

সংসদে উপস্থাপিত প্রতিমন্ত্রীর তথ্যে আরও জানা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৮৩ হাজার ৫২৪ টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করেছিল। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৭৫ হাজার ৩৩৭ টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬৮ হাজার ৩০৫ টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬৮ হাজার ৯৩৫ টন এবং ২০১৮–১৯ অর্থবছরের ১১ মাসে ৬৮ হাজার ৬৫৫ টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। সে হিসাবে দিন দিন এই রপ্তানির পরিমাণ কমেছে।

সংসদে প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান আরও জানান, মৎস্য খাতের মোট রপ্তানির মধ্যে চিংড়ির পরিমাণই বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১১ মাসে যে ৬৮ হাজার ৬৫৫ টন মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানি হয়েছে, তার মধ্যে ৩১ হাজার ১৫৮ টনই চিংড়ি। এ সময় রপ্তানি করা ৩ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকার মধ্যে চিংড়ির মাধ্যমে আয় হয়েছে ২ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। আর বাকি ৩৫ হাজার ১৪৮ টন রপ্তানির মাধ্যমে আয় হয়েছে ৮৯৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

প্রতিমন্ত্রীর তথ্যে আরও উঠে এসেছে, ২০১৭–১৮ অর্থবছরে দেশে ৪২ লাখ ২০ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৪২ লাখ ৭৭ হাজার টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। আর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মতে, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) মৎস্য খাতের অবদান এখন ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, বিশ্বে প্রাকৃতিক উৎসের মাছে বাংলাদেশ এখন তৃতীয় স্থানে আছে। আর প্রথম স্থানে আছে চীন ও দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত।

বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারক সমিতির (বিএফএফইএ) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আশরাফ হোসেন বলেন, সরকারের সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে দিন দিন এই খাতে রপ্তানি কমে যাচ্ছে। উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘পোনাকে মাছ হতে না দিলে উৎপাদন বাড়বে কীভাবে? আর উৎপাদন না বাড়লে রপ্তানি হবে কীভাবে? অন্যদিকে মাছ ধরার ট্রলার (একধরনের নৌকা) ব্যবস্থাপনাও ঠিক নেই। যেমন গভীর সমুদ্র থেকে মাছ ধরার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে অনেক, কিন্তু লাইসেন্সধারীদের মাছ ধরতে দেওয়া হচ্ছে না।

ওডি/টিএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড