অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
গেল ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানি খাতে বাংলদেশের অবস্থান বেশ স্বস্তিদায়ক ছিল। এ সময়ে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি গত কয়েক বছরের মধ্যে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও ছিল আগের বছরগুলোর চেয়ে বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬৬৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ একবছরে রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। তাছাড়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪ শতাংশ বেশি। অথচ এর আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রপ্তানি কমেছিল তিন শতাংশ।
তবে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে অর্থাৎ জুনে রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতে ছন্দপতন হয়েছে। এই মাসে রপ্তানি না বেড়ে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় সোয়া পাঁচ শতাংশ কমে গেছে। এ সময়ে ৩৬০ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ২৭৮ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের পণ্য। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি কমেছে প্রায় ২৩ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গার্মেন্টস খাত থেকে রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশের বেশি এসেছে। আর গত অর্থবছরের তুলনায় গার্মেন্টস রপ্তানি বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১১ শতাংশ। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ গার্মেন্টস কারখানার নিরাপত্তায় অগ্রগতি হয়েছে। আর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুফল পাওয়া গেছে। পাশাপাশি চীন থেকে সরে আসা অর্ডারের একটি অংশ বাংলাদেশও পেয়েছে। ফলে তা গার্মেন্টসের রপ্তানি বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে বলে রপ্তানিকারকরা মনে করছেন।
রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, প্রধানত দুটি কারণে আমাদের গার্মেন্টস পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশ গত ছয় বছরে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের সহযোগিতায় কারখানা ভবনের কাঠামো, অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তায় ব্যাপক কাজ হয়েছে। এই ছয় বছরে বাংলাদেশের গার্মেন্টসের বড়ো ধরনের দুর্ঘটনা কিংবা ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ফলে আমাদের কারখানা যে নিরাপদ— বিদেশি ক্রেতাদের কাছে এই বার্তা গিয়েছে। পাশাপাশি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে চীন থেকে গার্মেন্টসের ক্রয়াদেশও অন্য দেশগুলোতে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশও এর কিছুটা ফায়দা লুটছে।
তবে বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক মনে করেন, রপ্তানি বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত দর পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে ভবিষ্যতে অনেক উদ্যোক্তার পক্ষেই ব্যবসায় টিকে থাকা কঠিন হবে।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত অর্থবছর ৩ হাজার ৪১৩ কোটি ডলারের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আর এর আগের অর্থবছরে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬১ কোটি ডলার।
তবে দেশের অন্যান্য রপ্তানি খাত যেমন- হিমায়িত মাছ, চামড়াজাত পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্য ও হোম টেক্সটাইলসহ বেশ কিছু খাতের রপ্তানি কমে গেছে।
বিদায়ী অর্থবছরে কেমিক্যাল পণ্য ৩৬ শতাংশ, বিশেষায়িত টেক্সটাইল ৩১ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্য ২১ দশমিক ৬৫ শতাংশ, টেরিটাওয়েল ২০ শতাংশ, হস্তশিল্প ১৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ফার্নিচার ১৯ শতাংশের রপ্তানি বেড়েছে।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড