• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বৈশ্বিক উষ্ণতায় বাংলাদেশ জিডিপি হারাবে ৪.৯ শতাংশ

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

০৪ জুলাই ২০১৯, ১১:৫৮
আইএলও

এশিয়ার অর্থনীতিতে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। আর প্রযুক্তির উন্নয়ন ও তারুণ্যের শক্তির ওপর ভর করেই তা এগিয়ে যাচ্ছে। তবে উন্নতির এই পথে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাধার সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘের শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মানুষ বৈশ্বিক উষ্ণতায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি বিপুল কর্মঘণ্টা হারাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এ অঞ্চলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে।

‘ওয়ার্কিং অন অ্যা ওয়ার্মার প্লানেট : দি ইমপ্যাক্ট অব হিট স্ট্রেস অন লেবার প্রডাক্টিভিটি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক উষ্ণতায় বাংলাদেশের কৃষি, শিল্প, নির্মাণ ও সেবা খাতে কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। কৃষি খাতে ১৯৯৫ সালে এ দেশে ৬.২৮ শতাংশ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। আর ২০৩০ সাল পর্যন্ত তা ৯.৫৮ শতাংশ বেড়ে হবে। ১৯৯৫ সালে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে কর্মঘণ্টার অপচয় হয় ২.৫৯ শতাংশ, ২০৩০ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৪.৯৬ শতাংশ। আর ১৯৯৫ সালে নির্মাণ খাতে যেখানে কর্মঘণ্টার অপচয় ৬.২৮ শতাংশ,২০৩০ সালে তা বেড়ে হবে ৯.৫৮ শতাংশ। সেবা খাতে কর্মঘণ্টার অপচয় ০.৩০ শতাংশ থেকে বেড়ে হবে ০.৭২ শতাংশ।

সম্প্রতি প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এসব খাতে ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশে মোট ৪.২৪ শতাংশ কর্মঘণ্টা নষ্ট হত, ২০৩০ সাল নাগাদ তা ৪.৮৪ শতাংশ বেড়ে হবে। সেখানে আরও বলা হয়, ১৯৯৫ সালে এ ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২২ লাখ ৭৪ হাজার পূর্ণকালীন চাকরির উৎপাদনশীলতা কমার সমান। ২০৩০ সাল নাগাদ এ ক্ষতি বেড়ে ৩৮ লাখ ৩৩ হাজার পূর্ণকালীন চাকরির উৎপাদনশীলতা কমার সমান হবে।

বাংলাদেশ, ভারত, কম্বোডিয়া ও নেপালের ৯০ শতাংশ শ্রমিকই অনানুষ্ঠানিক খাতের উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয় বিশেষ করে কৃষি, নির্মাণ, খুচরা খাতে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক রয়েছে। গরমের তীব্রতার কারণে এরা কর্মঘণ্টা হারাচ্ছে।উপসাগরীয় দেশগুলোতে ও বৈশ্বিক উত্তাপ বাড়ছে। এই উষ্ণতার ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, ফিলিপাইনসহ এশিয়া থেকে যাওয়া বিপুলসংখ্যক প্রবাসী শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ আরবদেশগুলোর নির্মাণ খাতের ৯৫ শতাংশ শ্রমিকই এ অঞ্চলের।

এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের যেসকল দেশ এই উষ্ণতায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত, সেই ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশসহ রয়েছে—থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, লাও, পাপুয়া নিউগিনি, মিয়ানমার ও ইন্দোনেশিয়া।

বৈশ্বিক উষ্ণতায় এ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার জিডিপির অল্প অংশ হারাবে। শিল্প ও সেবা খাতে অর্থনৈতিক রূপান্তরের জন্য ২০৩০ সালে এই জিডিপির পরিমাণ ৪.৯ শতাংশ কমবে। তবে কৃষি ছেড়ে শিল্প ও সেবায় আসায় বিপুলসংখ্যক শ্রমিক উষ্ণতায় তুলনামূলক কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রতিবেদনটির সহ-রচয়িতা ক্যাথেরিন সাজেট বলেন, নিয়োগদাতা ও কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রচণ্ড গরম নাটকীয় পরিণতিও বয়ে আনতে পারে। শুধু তাই নয়, এটি স্থানীয় অর্থনীতি এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও পরিবর্তন আনতে পারে। আর অতিরিক্ত গরম মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এটি কর্মীদের শারীরিক সক্ষমতা ও উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয়। এমনকি প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোকে মানুষ মারাও যেতে পারে।

সেখানে আরও বলা হয়, ২০৩০ সাল নাগাদ অসহ্য গরমে বিশ্বে কৃষিসহ অন্যান্য অনেক খাতে কর্মীদের যে উৎপাদনশীলতা কমবে তা হবে আট কোটি পূর্ণকালীন চাকরি কমার সমান। আর বৈশ্বিক মোট কর্মঘণ্টার ২.২ শতাংশ কমে যাবে। ফলে বৈশ্বিক জিডিপির ১.৪ শতাংশ বা ২.৪ ট্রিলিয়ন ডলার (২.১ ট্রিলিয়ন ইউরো হারাবে। এ ক্ষতি প্রায় যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির সমতুল্য বলে ক্যাথেরিন সাজেট উল্লেখ করেন।

আইএলওর মতে, এটি খুবই সংযত হিসাব। বৈশ্বিক উষ্ণতা স্বাভাবিক হিসাবের চেয়ে আরও বেশি হতে পারে। গরমের প্রচণ্ডতায় কৃষি ও নির্মাণ খাতে কাজ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে।

এদিকে আইএলও অর্থনীতিবিদ নিকোলাস মায়েট্রে বলেন, যদিও এশিয়ার দক্ষিণাঞ্চল ও পশ্চিম আফ্রিকা উষ্ণতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তবে ইউরোপও এর হাত থেকে রক্ষা পাবে না।

ওডি/টিএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড