• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রাষ্ট্রীয় ৩০ প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাংকের পাওনা ৪০ হাজার কোটি টাকা!

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

১৭ জুন ২০১৯, ১৩:৩৩
বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষায় সম্প্রতি দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন সংস্থার কাছে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণ এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ৩০টি সংস্থার কাছে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণ ৩৯ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা; যার মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১১১ কোটি টাকা। আর দেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে সরকারি মালিকানাধীন জনতা, সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক ঋণ দিয়ে বিপাকে পড়েছে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ব্যাংকের সবচেয়ে বেশি পাওনা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে ঋণের পরিমাণ ১১ হাজার ৪২০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আর এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন। এদের কাছে ব্যাংকের পাওনা ৬ হাজার ৫২ কোটি টাকা।

বিভিন্ন অর্থনীতিবিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি কর্পোরেশনগুলো ঋণ নিয়ে ঠিক জায়গায় তা ব্যবহার করেনি। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো এই ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে প্রতিবছর লোকসান দিচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় ট্রেড ইউনিয়নের অযাচিত হস্তক্ষেপ, রাজনৈতিক প্রভাব, প্রয়োজনের তুলনায় অধিক জনবল নিয়োগ, অদক্ষতা, মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে ব্যর্থতা ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যয়সহ বেশ কিছু কারণে ব্যাংকের টাকা শোধ দিতে পারছে না।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর অনিয়ম-দুর্নীতি কমানো গেলে সমস্যার সমাধান হবে। কারণ, এই প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু ব্যাংকের টাকা আটকিয়ে রাখছে না, রাষ্ট্রীয় করপোরেশনগুলো এখন দায়-দেনা ও লোকসানে জর্জরিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুশাসন না থাকায় নিজেরা লোকসান থেকে বের হতে পারছে না। ব্যাংকগুলোর টাকাও ফেরত দিতে পারছে না। ফলে তারা ব্যাংকগুলোকেও বিপদে ফেলে দিয়েছে।’

তথ্য অনুযায়ী, গত একবছরে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের কাছে ব্যাংকের পাওনা বেড়েছে এক হাজার কোটি টাকা। এক বছর আগে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক ঋণ ছিল ৫ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। আর এখন সেই ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫২ কোটি টাকা। ২০০৩-০৪ অর্থবছরে বেসরকারি খাতের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এই ঋণ নেওয়া হয়, যা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে এই ঋণের বড় অংশই নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কাছে ব্যাংকের পাওনা রয়েছে ৪ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) কাছে ৫ হাজার ১২৯ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কাছে ৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা, বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) কাছে ২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা, বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (বিওজিএমসি) কাছে ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) কাছে ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা, বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) কাছে ৮৮৪ কোটি টাকা যার মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৭ কোটি টাকা, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিডব্লিউডিবি) কাছে ৫৭২ কোটি টাকা, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের কাছে ৪৮৫ কোটি টাকা এবং ঢাকা ওয়াসার কাছে ব্যাংকের পাওনা রয়েছে ২৪৬ কোটি টাকা।

এছাড়া অর্থনৈতিক সমীক্ষার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের কাছে ব্যাংকের পাওনা আছে ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যার মধ্যে খেলাপি ঋণ ২১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। অন্যদিকে বিএডিসির খেলাপি ঋণ ২১ কোটি ২৭ লাখ টাকা, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর খেলাপি ঋণ ১০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

ওডি/টিএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড