অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
ঈদের দিনে নতুন জামা-কাপড়ের পাশাপাশি সবার কাছে বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে নতুন টাকার সেলামি। পরিবারের বড়দের কাছে ছোটদের এই সেলামি নেওয়ার ঐতিহ্য দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। তাই নতুন টাকার চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। তবে ভোক্তার চাহিদা বিবেচনা করে ব্যাংকগুলো নতুন নোট বিনিময় করলেও সবার ভাগ্যে তা জোটে না। এজন্য ঈদের আগমুহূর্তে গুলিস্তানের মোড় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে নতুন নোটের বাজার বেশ জমজমাট থাকে।
সরেজমিনে গুলিস্তান মোড়ের নতুন নোটের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে বেশ কয়েকটি দোকানে ফুটপাতে টুলের উপর নতুন নতুন নোট সাজিয়ে বেচাকেনা চলছে। মুহূর্তের মধ্যে চাহিদার উপর নির্ভর করে নোটের দাম ওঠানামা করছে।
গুলিস্তানের মোড়ে নতুন টাকা কিনতে আসা এক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, যখনই ক্রেতাদের আগমন বেশি হচ্ছে, বিক্রেতারা তখনই নোটের বিনিময় মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন।১০ টাকার ১০০টি নোটের একটি বান্ডিল ১ হাজার ১৭০ টাকা দিয়ে কিনেছেন এই ক্রেতা। অথচ অল্প কিছুক্ষণ আগেও আরেক ক্রেতা ১০ টাকার ১০০টি নোটের একটি বান্ডিল ১ হাজার ১৫০ টাকা দিয়ে কিনেছেন।
অন্যদিকে বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা কোনো খরিদ্দারের কাছ থেকে দাম বেশি নিচ্ছেন না। তারা যে দরে টাকা কিনেছেন, তার সঙ্গে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে। আর ১০০ টাকার নোটের বান্ডিলে সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি নেওয়া হয়।
কিন্তু ক্রেতাদের অভিযোগ, তারা অনেক বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন। এক ক্রেতার অভিযোগ, তার কাছ থেকে ৫০ টাকার নোটের ১০০টির একটি বান্ডিল ৫ হাজার ১৫০ টাকা নেওয়া হয়েছে। আর ২০ টাকার নোটের ১০০টির একটি বান্ডিল ২ হাজার ২শ টাকা দিয়ে কিনেছেন।
ঈদের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ কয়েকটি সরকারি বেসরকারি ব্যাংকের শাখা থেকে নতুন নোট বিনিময় করা হলেও কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নতুন টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বের করে গুলিস্তানের মোড় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের বটতলায় বিক্রি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পুলিশ বক্সের সামনেও একই দামে বিক্রি হচ্ছে নতুন নোট। তবে মাঝে মধ্যে পুলিশ এসে উঠিয়ে দিলেও কিছুক্ষণ পরে আবারও পসরা সাজিয়ে বসে যাচ্ছেন বিক্রেতারা।
বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২ ও ৫ টাকার নোট চাহিদার শীর্ষে থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক সেটি না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তা বিক্রি বন্ধ রয়েছে। ঈদের আর মাত্র একদিন বাকি থাকলেও এ বছর নতুন টাকা আশানুরূপ বিক্রি হয়নি।
জানা গেছে, গুলিস্তান মোড় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে গড়ে ১০ টাকার ১০০টি নোটের একটি বান্ডিল ১ হাজার ১শ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায়, ২০ টাকার নোটের ১০০টির একটি বান্ডিল ২ হাজার ১শ থেকে ২ হাজার ১২০-১৩০ টাকায়, ৫০ টাকার নোটের ১০০টির একটি বান্ডিল সর্বোচ্চ ৫ হাজার ১০০ টাকায় এবং ১০০ টাকার নোটের ১০০টির একটি বান্ডিল ১০ হাজার ১২০ থেকে ১০ হাজার ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে ঈদ উপলক্ষে গ্রাহকদের নতুন টাকা দেওয়া হলেও সেখানে কেবল ৫শ ও ১ হাজার টাকার নোট দেওয়া হয়। আর নতুন ক্রেতাদের অধিকাংশের চাহিদা রয়েছে ১০ থেকে ১০০ টাকার নোটের। তাই ঈদের আগে নতুন নোট প্রত্যাশীদের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বটতলা ও গুলিস্তানের মোড়ই একমাত্র ভরসা।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড