• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ সুবিধার ফলে মুনাফায় ১২ ব্যাংক

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

২৬ মে ২০১৯, ১৫:২৭
কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ছবি : সংগৃহীত

বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংককে ২০১৮ সালের আর্থিক হিসাব চূড়ান্ত করার সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২ হাজার ৭০২ কোটি টাকা নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশনিং) রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ব্যাংকটি ১ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা রাখতে পেরেছিল। বাকি ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা সঞ্চিতি সংরক্ষণে ২০২২ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটি সময় নিয়েছে।এছাড়া ব্যাংকটি নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে বিশেষ সুবিধা পাওয়ায় ২০১৮ সালে ৪১০ কোটি টাকা মুনাফা দেখাতে পেরেছে। যেহেতু তাদের প্রভিশনিং’র ঘাটতি রয়েছে, তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে ব্যাংকটি শেয়ারধারীদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারেনি।

একইভাবে ওয়ান ব্যাংককে ২০১৮ সালের জন্য ৯৯৮ কোটি টাকা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে বলেছিল। তবে তারা ৭৫৮ কোটি টাকা রাখতে পেরেছিল। ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালে ধাপে ধাপে বাকি ২৪০ কোটি টাকা সংরক্ষণের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ব্যাংকটি গত বছর ১৪০ কোটি টাকা মুনাফা দেখাতে পেরেছে। একইভাবে তারা শেয়ারধারীদের নগদ লভ্যাংশ দিতে পারেনি। এজন্য চলতি বছর শেষে ব্যাংকটি শেয়ারধারীদের জন্য ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে।

তবে এই অবস্থায় ওয়ান ও ন্যাশনাল ব্যাংক ছাড়াও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কমপক্ষে আরও ১০টি ব্যাংক প্রভিশনিং এর একই ধরনের সুযোগ নিয়েছে। ফলে ২০১৮ সালে আর্থিক হিসাবে লোকসানের পরিবর্তে ব্যাংকগুলো মুনাফা দেখাতে পেরেছে। যেহেতু এসব ব্যাংকের সঞ্চিতির ঘাটতি রয়ে গেছে, এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৮ সালে নগদের পরিবর্তে শেয়ারধারীদের জন্য বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে ব্যাংকগুলো। এছাড়া আর্থিকভাবে খারাপ অবস্থায় থাকা বেসরকারি খাতের এবি, পদ্মা বাংলাদেশ কমার্সসহ কয়েকটি ব্যাংককে কোনো ধরনের মুনাফা বিতরণের অনুমোদন দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।

সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সব ব্যাংকই বিশেষ সুবিধা পেয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রমালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক শেয়ারধারীদের জন্য নগদের পরিবর্তে বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে মিউচুয়াল ট্রাস্ট, মার্কেন্টাইল, ওয়ান, ন্যাশনাল, স্ট্যান্ডার্ড প্রিমিয়ার, ট্রাস্ট ব্যাংক, সাউথইস্ট একই সুবিধা নেওয়ার কারণে নগদ লভ্যাংশ দিতে পারেনি। আর ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর মধ্যে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক,ফার্স্ট সিকিউরিটি ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকও একই সুবিধা নিয়েছে। এরাও শেয়ারধারীদের নগদের পরিবর্তে বোনাস দিয়ে সন্তুষ্ট করেছে।

এ সকল ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ব্যাংকের মোট ঋণ ও অগ্রিম, অন্যান্য সম্পদ, আন্ত:শাখা লেনদেন হিসাব, বিনিয়োগ হিসাব, আদালতের আদেশে নিয়মিত দেখানো ঋণ ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক খেলাপি করে দেওয়া ঋণের বিপরীতে চাহিদা অনুযায়ী নিরাপত্তা সঞ্চিতি রেখে ২০১৮ সালের আর্থিক হিসাব চূড়ান্ত করতে হবে। আর এই নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে যে ঘাটতি রয়েছে, তা ২০১৯, ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে পূরণ করতে হবে।

বিশেষ এ সুবিধা নিয়ে ব্যাংকগুলোর মধ্যে কেউ মুনাফা বাড়িয়ে দেখিয়েছে, আবার কেউ লোকসান কমিয়ে দেখিয়েছে। ফলে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর প্রকৃত মুনাফা সম্পর্কে শেয়ারধারীরা অনেকটাই বিভ্রান্তিকর তথ্য পেয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে ২০১৮ সালে শেয়ারধারীদের জন্য এসব ব্যাংক নগদ লভ্যাংশও ঘোষণা করতে পারেনি।

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের পরও বেশ কয়েকটি ব্যাংককে আর্থিক অবস্থা ভালো থাকায় বিশেষ সুবিধা নিতে হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে ডাচ্‌-বাংলা, ব্র্যাক, ইস্টার্ণ, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা, এক্সিম, ইসলামী, যমুনা, এনসিসি, দি সিটি, ইউসিবি, আল-আরাফাহ্‌, প্রাইম, পূবালী ও উত্তরা ব্যাংক।

ওডি/টিএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড