অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
রমজানের মাঝামাঝি সময়ে এসে হুট করেই বেড়েছে বেগুণ,আদা ও রসুনের দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি কেজি বেগুন দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে যেখানে বেগুণের দাম ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চলতি সপ্তাহে তা ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আদা ও রসুনের দাম ১০ টাকা বেড়ে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা।
তবে কমেছে মুরগির মাংসের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে সেটি ১০ টাকা কমে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে, বাজারের বেশিরভাগ সবজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।তবে বরাবরের মতোই চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে ছোলা,ডাল,পেঁয়াজ,চিনি,মাছ,গরু ও খাসির মাংস। কিছু কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় মুদিপণ্যের দাম অপরিবর্তীত রয়েছে।
হঠাৎ করেই পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, বাজারে হঠাৎ কি এমন ঘটলো যে, সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুণের দাম দ্বিগুণ হলো। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে তাহলে লাভ কী? সপ্তাহ ব্যবধানে একটি পণ্যের দাম কমলে দাম বাড়ে কয়েকটি পণ্যের। এমন দাম আমরা চাই না।
মঙ্গলবার (২১ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও, সেগুনবাগিচাসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুণ বাজার ও মানভেদে ভালোমানের ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর গত সপ্তাহে আদা ও রসুনের দাম ছিল ১২০ টাকা, এখন তার দাম বেড়ে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। গত সপ্তাহে যার দাম ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। এছাড়া লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে ১৮০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতি পিস কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। আর দেশি মুরগির দামও ৩০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। বর্তমানে প্রতি পিস দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়।
পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত আছে।প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। আর আমদানি করা ভারতিয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি দরে।
এছাড়া বেশিরভাগ সবজির দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। বেগুন বাদে সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। মান ও বাজার ভেদে প্রতি কেজি আলু ২০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, কচুরলতি ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, বরবটি ৫০, কাঁকরোল ৫০ টাকা, ঝিঙা, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, শশা ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, লেবু হালি মান ভেদে ২০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর কাঁচা মরিচ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা দরে।
এছাড়া লাউ প্রতি পিস ৫০ টাকা, সজনে ডাটা ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি আঁটি লাল শাক, পালং শাক ১০ থেকে ২০ টাকা, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পুঁই শাক ও ডাটা শাক ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে নতুন নির্ধারিত দাম অনুযায়ী বাজারগুলোতে দেশি গরুর মাংস প্রতিকেজি ৫২৫ টাকা, বিদেশি বা বোল্ডার গরুর মাংস প্রতিকেজি ৫০০ টাকা, মহিষের মাংস প্রতিকেজি ৪৮০ টাকা, খাসির মাংস প্রতিকেজি ৭৫০ টাকা এবং ভেড়ার মাংস প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা ধরে বিক্রির জন্য দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম রমজান থেকে ২৬ রমজান পর্যন্ত মাংসের এ দাম নির্ধারণ করা হয়।
বাস্তবে অভিযানের ভয়ে সকালে নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি হলেও বিকালে ২০ থেকে ৭৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এ দিকে চাল ও অন্যান্য মুদিপণ্য আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি নাজির ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫২ টাকা, স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, বিআর ২৮- নম্বর ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া খোলা আটা ২৬ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, লবণ ৩০ থেকে ৩৫, পোলাওয়ের চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি ছোলা ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, খেসারি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, বুট ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে।গত সপ্তাহের মতো এই সপ্তাহে ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়।আর মুদি দোকানে ও খুচরা বিক্রেতারা প্রতি পিস ডিম বিক্রি করছেন ৭-৮ টাকায়।
বিভিন্ন ধরনের মাছের দামও অপরিবর্তিত আছে। প্রতিকেজি তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৮০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ টাকা, রুই-কাতলা প্রতিকেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, আইড় ৮০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০, বেলে মাছ প্রকার ভেদে ৭০০ টাকা, বাইন মাছ ৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, পুঁটি ২৫০ টাকা, পোয়া মাছ ৬০০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, পাবদা ৬০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং ৮০০, দেশি মাগুর ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ইলিশ মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে মনিটরিংসেল খুলেছে। দেশের যে কোনো স্থানের মূল্য বৃদ্ধির তথ্য সেলকে জানাতে ৯৫৪৯১৩৩, ০১৭১২-১৬৮৯১৭, ৯৫১৫৩৪৪ ও ০১৯৮৭-৭৮৭২০৯ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাভুক্ত বাজারগুলোতে ডিজিটাল মূল্য তালিকার বোর্ড বসানো হবে।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড