• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তায় চলতি বছরই চালু হচ্ছে শস্যবীমা  

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

১৮ জুলাই ২০১৯, ১১:২৯
শস্যবীমা
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য চালু হচ্ছে ‘শস্যবীমা’।(ছবি: সংগৃহীত)

বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চালু হচ্ছে ‘শস্যবীমা’। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের এ বীমার আওতায় নিয়ে আসা হবে। চলতি বছর থেকেই এটি চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

হাওর বেষ্টিত সাত জেলায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রাথমিকভাবে শস্যবীমা চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে সারা দেশের কৃষকদের এর আওতায় আনা হবে। সরকার ভতুর্কি হিসেবে শস্যবীমার প্রিমিয়ামের অর্ধেক প্রদান করবে। আর বাকি অর্ধেক কৃষকদের কাছ থেকে নেওয়া হবে। জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয় এ বীমা চালু করার পুরো প্রস্তুতি শুরু করেছে।

সাধারণ বীমা করপোরেশন অর্থ মন্ত্রণালয়ে শস্যবীমার ব্যাপারে একটি ধারণাপত্র জমা দিয়েছে। ধারণাপত্রে ২০০৪, ২০১০, ২০১৩, ২০১৬ এবং ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির বিভিন্ন বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়, ২০১৭ সালে বোরো ধান তোলার ১৫-২০ দিন আগে আকস্মিক বন্যায় হাওর এলাকার সম্পূর্ণ ফসল তলিয়ে যায়। ২০১৭ সালের বন্যায় হাওর এলাকার সাতটি জেলার মোট উৎপাদিত ৫২.৫ লাখ টন ফসলে ক্ষতি হয় ৩৪৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। সাধারণ বীমা করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে শস্যবীমার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করলে সুফল পাওয়া যাবে বেশি। এজন্য তারা বেসরকারি নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোকেও এর সাথে যুক্ত করার সুপারিশ করেছে।

এদিকে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় সাধারণ বীমা করপোরেশনের ‘আবহাওয়া সূচকভিত্তিক শস্যবীমা’ শীর্ষক একটি পাইলট প্রকল্প রয়েছে। এ পাইলট প্রকল্পের মতোই শস্যবীমা চালু করা হতে পারে। প্রথম দিকে দেশের নির্দিষ্ট কয়েকটি হাওর এলাকায় এটি চালু করা হবে।

সরকার এডিবির পাইলট প্রকল্পটিতে কৃষকদের ক্ষতিপূরণের এক-তৃতীয়াংশ ভতুর্কি হিসেবে দিয়েছে।‘পাইলট প্রজেক্ট অন ওয়েদার ইনডেক্স বেইসড ক্রপ ইন্স্যুরেন্স বা (ডব্লিউআইবিসিআই) প্রকল্পের আওতায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তিন জেলার ৯ হাজার ৬৪১ জনকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৬৭ লাখ টাকার বীমাদাবি পরিশোধ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মেয়াদকালীন প্রিমিয়ামের টাকা আদায়ের পরিমাণ প্রায় ৪৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

এই শস্যবীমা প্রকল্পেও সরকার প্রিমিয়ামের একটি অংশ পরিশোধ করবে । আর বাকি অংশ বীমাগ্রহীতা বা কৃষক দেবে। ভারতেও এ ধরনের বীমা রয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক সরকার যৌথভাবে শস্যবীমার ৮০ শতাংশ প্রিমিয়াম ভতুর্কি হিসেবে দিয়ে থাকে। নদীভাঙন কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের পুনর্বাসনের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ বীমা চালু হলে এ খাত থেকে ভতুর্কির টাকা দেওয়া হতে পারে।

অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তার সাথে এ প্রসঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশের বীমাসংক্রান্ত যত আইন, বিধিবিধান রয়েছে তা অগ্নি, নৌ, মোটর ও জীবনবীমা পরিচালনার জন্য করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত শস্যবীমার জন্য কোনো পৃথক আইন নেই। এ ক্ষেত্রে একটি পৃথক আইন করা হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, কৃষকদের বীমার প্রতি আস্থা তৈরিতে কৃষি ব্যাংক, এনজিও, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে সম্পৃক্ত করা হতে পারে। এরা কৃষকদের ঋণের শর্তে শস্যবীমার প্রিমিয়াম আদায় করবে। যেখানে ঋণ ফেরত পাবার নিশ্চয়তার পাশাপাশি কৃষকদের কাছ থেকে প্রিমিয়াম আদায় সহজ হবে। তবে যেসব কৃষক এসব সংস্থা কিংবা ব্যাংকের সাথে জড়িত নন তাদেরও শস্যবীমার আওতায় আনা হবে। এছাড়া হাওরে বন্যায় কৃষকদের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে পরামর্শকও নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।

ওডি/টিএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড