দিনাজপুরে রসুনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

দেশের সর্বাধিক রসুন উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে এবারও কৃষকরা ব্যাপক হারে রসুনের চাষ করেছেন। বিগত বছরগুলোতে নিজেদের উদ্ভাবিত বিনা হালে রসুন চাষ পদ্ধতিতে ব্যাপক সফলতা ও ভালো দাম পাওয়ায় এ মৌসুমেও তারা রসুন চাষে ঝুঁকেছেন।

সেচ ও সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় এবং অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় এবার উপজেলায় রসুনের বাম্পার ফলনের মাধ্যমে কৃষক লাভবান হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে চিরিরবন্দর উপজেলায় ৪৮০ হেক্টর জমিতে রসুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আকস্মিক কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এমনটাই আশা করছে কৃষি বিভাগ।

উপজেলার সাতনালা, বিন্যাকুড়ি, নশরতপুর, ফতেজংপুর, সাইতাড়া, আলোকডিহি তেঁতুলিয়া ও ভিয়েল গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মৌসুমের শুরুতে রসুনের ভালো দাম ছিল না। তবে মৌসুমের শেষ সময়ে এসে রসুনের ভালো দাম পেয়েছে কৃষকরা। ভালো দাম পাওয়ায় এ বছরও এলাকার কৃষকরা ব্যাপকহারে রসুন চাষ করেছেন।

তারা বলেন, অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় এবং প্রয়োজনীয় সেচ ও সার পাওয়ায় রসুনের চারা এখন দ্রুত গতিতে বেড়ে উঠছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রসুনের বাম্পার ফলন হবে এমন আশা চাষিদের। আর তাই রসুন চাষিরা সকাল-সন্ধ্যা দিনমজুর ও স্ত্রী-ছেলেদের সঙ্গে নিয়ে রসুন পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

উপজেলার সাতনালা গ্রামের রসুন চাষি জাকির হোসেন ও আলোকডিহি গ্রামের বেলাল হোসেন জানান, প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে প্রায় ৩০ জন শ্রমিক লাগছে। তাদের শ্রমমূল্য ও খাবার খরচ বাবদ খরচ হয় প্রায় ১০ হাজার টাকা। এছাড়া বীজ, রাসায়নিক সার ও সেচ দিতে আরও প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। ভালো ফলন হলে প্রতি বিঘা জমিতে ২৫ থেকে ৩০ মণ রসুন পাওয়া যাবে। মৌসুমের শুরুতে দাম কিছুটা কম হলেও পরবর্তীকালে প্রতিমণ রসুন দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা দরে বিক্রি করা যাবে। এতে বিঘা প্রতি সব খরচ বাদ দিয়ে ৬০ হাজার টাকা লাভ থাকবে বলে আশা করছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহমুদুল হাসান জানান, বর্তমানে কৃষকদের কাছে রসুন প্রধান অর্থকরী ফসল হয়ে উঠেছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। তাই এবার রসুনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।

ওডি/এএসএল