• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শিমের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

  বাঁশখালী প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

২৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:০৮
শিম
শিম (ছবি : দৈনিক অধিকার)

এ বছরও বাঁশখালীতে শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকায় শিমের আবাদ করা হচ্ছে ব্যাপকভাবে। শীতকালীন শিমের পাশাপাশি আগাম চাষাবাদ হওয়ায় শিমের কদর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে কৃষকদের শিম চাষে আগ্রহ বাড়ছে বলে জানা যায়। ভৌগলিক কারণে বাঁশখালীর আবাদি জমিসহ পাহাড়ি এলাকা চাষাবাদের উপযোগী থাকায় বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ হয় এই এলাকাতে। এবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শিমের চাষ করা হয়েছে। খালি জমি-রাস্তার আশপাশে হতে শুরু করে পাহাড়েও শিমের আবাদ করা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন উঁচু এলাকায় শিমের চাষাবাদ হয়ে থাকে। উপজেলার পুঁইছড়ি, নাপোড়া, চাম্বলের পাহাড়ি জমি, শিলকুপের পাহাড়ি ও আবাদি জমি, জঙ্গল জলদী, পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালীপুর, বৈলছড়ি, সরল, খানখানাবাদ ও গন্ডামারা এলাকায় প্রচুর পরিমাণ শিম উৎপাদিত হয়েছে। প্রতিদিন চাষিরা ক্ষেত থেকে শিমগুলো তুলে এনে বিভিন্ন স্থানীয় বাজারে পাইকারি দরে বিক্রি করছেন।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালীতে এবার ২৫০ হেক্টর জমিতে দেশি শিম, ৬০ হেক্টর জমিতে ফরাস শিম চাষ হয়েছে। বাঁশখালী শিম চাষের উর্বর জমি হওয়ায় চাষিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাষাবাদে উদ্বুদ্ধকরণ করা হচ্ছে বলেও জানান কৃষি অফিস। আগাম শিম চাষাবাদে কৃষকরা প্রচুর লাভবান হচ্ছে। শীতকালীন শিম বাজারে আসায় ভোক্তাদের মধ্যে বেশ চাহিদা রয়েছে।

উপজেলার শিলকুপ, পুঁইছড়ি, জঙ্গল চাম্বল, জঙ্গল জলদী, কালীপুর এলাকায় এই শিমের আবাদ হয়েছে প্রচুর। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাঁশখালীর বিভিন্ন হাট বাজারগুলোতে ভিড় করছে। পাইকারি এই সকল শিম বিভিন্ন দামে কিনে নিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায়।

এবার বাঁশখালীতে ২০০ হেক্টর জমিতে টমেটো, যা সরল, গন্ডামারা, বৈলছড়ি, চাম্বল, পুইছড়ি ও শীলকূপে বেশির ভাগ হয়ে থাকে। ২০ হেক্টর জমিতে বাঁধা কপি, ২০০ হেক্টর জমিতে বেগুন, যা শীলকূপ, সাধনপুর, সরল, বৈলছড়ি, চাম্বল, পুঁইছড়িতে বেশি উৎপাদন হয়। ২০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি, ১২০ হেক্টর জমিতে মূলা, ৫০ হেক্টর জমিতে মূলা শাক, ৫০ হেক্টর জমিতে লাল শাক, ১৫০ হেক্টর জমিতে বরবটি, ২৫০ হেক্টর জমিতে দেশি শিম, ৬০ হেক্টর জমিতে ফরাস শিম, ১২০ হেক্টর জমিতে লাউ এবং ৮০ হেক্টর জমিতে করলা, ৩৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া মিলে শীতকালীন সবজি, ২৫০ হেক্টর জমিতে মসলা ফসলও ৩৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ ও বাঙ্গি উৎপাদন হচ্ছে বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিস।

শীতের আগাম সবজিতে ভরপুর বাঁশখালীর হাটবাজারগুলো। শহুরে পাইকারের ভিড় জমতে দেখা যায় শীতকালীন সবজির বাজারগুলোতে। বর্তমানে বাঁশখালীর প্রতিটি হাটবাজারে শীতের সবজি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেলেও এবার কিন্তু সবজির দাম চড়া হওয়ায় আগের মতো সহজে সকল ধরনের সবজি কিনতে পারছে না সাধারণ ক্রেতারা। বাঁশখালীর প্রধান সড়কের সাহেবের হাট, গুনাগরী, বৈলছড়ি বাজার, শিলকুপের টাইম বাজার, নাপোড়া বাজার ও চাম্বল বাজার এলাকায় প্রতিদিন সকালে প্রচুর পরিমাণ শীতের সবজি বিক্রি হয় পাইকারিভাবে। পাইকারি ক্রেতারা তা চাষিদের কাছ থেকে কিনে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিপুল মুনাফার মাধ্যমে রপ্তানি করে থাকে।

শিলকুপের পূর্ব-মনকিচর এলাকার কৃষক মো. হোছেন বলেন, ‘আমি ১ কানি মতো শিমের চাষ করেছি। আমার ক্ষেতে এবার প্রচুর পরিমাণ শিম উৎপাদন হয়েছে। আমরা পাইকারিভাবে প্রতি কেজি ৫০/৬০ টাকা বিক্রি করলেও ব্যবসায়ীরা তা আরও চড়া দামে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে। আমরা পাইকারিভাবে বিক্রি করতে গিয়ে সেই দাম পাই না। অথচ হাতবদলের পর নানাভাবে দাম বাড়তে থাকে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু ছালেহ বলেন, এবার বাঁশখালীতে প্রচুর পরিমাণ শীতকালীন সবজি উৎপাদিত হয়েছে। সাধারণ চাষিরা আগাম সবজির চাষ করে সন্তোষজনক দাম পেয়ে খুশি। তিনি আরও বলেন- চট্টগ্রামের অধিকাংশ সবজির চাহিদা যোগান দেয় বাঁশখালী। বাঁশখালী থেকে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক বোঝাই সবজি শহরের বিভিন্ন বাজারগুলোতে যায়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিমের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাঁশখালীর কৃষকদের শিমের আবাদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে বলেও জানান তিনি।

ওডি/এসজেএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড