প্রিতম পাল, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
শুরু হয়েছে কমলার মৌসুম। আর মৌসুমের শুরুতেই কমলার ফলন ভালো হওয়ায় মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার কমলা চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে চাষিদের অভিযোগ মৌসুমের শুরুতে ভারতীয় কমলা বাজারে চলে আসায় তাদের লোকসান পোহাতে হয়। বিষয়টি একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তারা জানিয়েছে বলেও জানান।
জুড়ী উপজেলার লালছড়া চা বাগানের কমলা চাষি জয়নুল ইসলাম জানান, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর তার বাগানে কমলার ফলন ভালো হয়েছে। তার বাগানে প্রায় ১২শ কমলা গাছ রয়েছে। এ বছর প্রায় ২ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছেন তিনি। ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রির আশা করছেন তিনি।
জুড়ি উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের রূপাছড়া, লালছড়া, হায়াছড়া, শুকনাছড়াসহ পাহাড়ি এলাকার কমলা চাষিরা জানান, গাছ ভর্তি ফলন না হলেও কোনো গাছই খালি নেই। কমবেশি সব গাছেই রয়েছে ফল। এ দিকে বানরের উৎপাতে কমলা ঝরছে। জুড়ীতে দুই ধরনের কমলার চাষ বেশি হয়। এর মধ্যে নাগপুরী ও খাসি অন্যতম। তবে খাসি কমলার চাষ এখানে বেশি।
কমলা চাষিরা জানান, তারা স্থানীয়ভাবে পাইকারের কাছে ১০০ কমলা ৫০০ টাকা থেকে ১৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় কমলা বাগানের সংখ্যা ১৪৬টি। জেলা জুড়ে ১৭৮ হেক্টর জমিতে কমলার চাষ হয়েছে। তার মধ্যে জুড়ী উপজেলায় ৯২ হেক্টর, বড়লেখায় ৬০ হেক্টর, কুলাউড়ায় ২০ হেক্টর জমিতে এই কমলা চাষ হয়। এর মধ্যে কমলা চাষি রয়েছেন ১৪৬ জন। গত বছর প্রতি হেক্টরে কমলার উৎপাদন ছিল চার থেকে সাড়ে চার টন। এ বছর প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ৬ মেট্রিকটন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, মৌসুমের শুরুতে ভারতীয় কমলা বাজারে চলে আসায় অনেক চাষি আগাম কমলা বাজারে তুলেন। যার জন্য কমলা টক হয়। বিষয়টি মাথায় রেখে কিভাবে আগাম কমলা চাষ করা যায় সেটি দেখা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, আগে চাষিরা বাগান বিক্রি করে দিত পাইকারের কাছে। যার ফলে চাষি ও পাইকার সঠিকভাবে বাগানের পরিচর্যা করত না। আমরা চাষিদের বিষয়টি বুঝিয়েছি যে এভাবে বাগান বিক্রি করে দিলে তাদের লোকসান হবে। আমরা তাদের ল্যাপটপ নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। যাতে কমলার ফলন বাড়ানো যায়। কমলার উৎপাদন নিশ্চিত করতে বর্ষার পর পর গাছের ডাল ছাঁটাই এবং খরার সময় সেচ দেওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত যে প্রকল্পটি চালু ছিল সেটি শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণে ৫ (২০১৯-২০২৪ ) বছর মেয়াদী একটি প্রকল্প চালু হবে।
এ দিকে কমলা চাষিরা বলছেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কমলা ও আনারস চাষ উন্নয়ন প্রকল্প চালু ছিল। প্রকল্পের সময় প্রশিক্ষণ ও তাৎক্ষণিক পরামর্শে কমলা চাষিরা উপকৃত হতেন। বর্তমানে এই প্রকল্পটি বন্ধ রয়েছে। সেই প্রকল্প আবার চালুর দাবি তাদের।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড