অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
টানা নয়দিন বন্ধ থাকার পর আগামীকাল রবিবার (১৭ আগস্ট) থেকে শুরু হচ্ছে শেয়ারবাজারে লেনদেন। দেশের শেয়ারবাজারে কয়েক মাস ধরে মন্দাভাব থাকলেও ঈদের আগের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থান ঘটে। তাই ঈদের পরও শেয়ারবাজারের এই ঊর্ধ্বমুখীতার ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন বিনিয়োগকারীরা।
বিনিয়োগকারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরেই শেয়ারবাজারে মন্দাভাব বিরাজ করছে। টানা দরপতনের ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে গেছে। ফলে শেয়ারবাজারের প্রায় সব ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী লোকসানের মধ্যে রয়েছেন। এরূপ অবস্থায় শেয়ারবাজার ঘুরে না দাঁড়ালে বিনিয়োগকারীদের পথে বসতে হবে বলেও জানান তারা।
গত ৯ আগস্ট থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের শেয়ারবাজারে টানা ৯ দিন লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদের সভা।
ডিএসই সূত্রে তখন জানানো হয়, আগামী ১২ আগস্ট পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হবে। এজন্য ১১, ১২ ও ১৩ আগস্ট অর্থাৎ রবি, সোম ও মঙ্গলবার সরকারিভাবে ছুটি থাকবে। আর শুক্র ও শনিবার (৯ ও ১০ আগস্ট) দুইদিন সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে ৮ আগস্টের পর ঈদের আগে আর শেয়ারবাজারে লেনদেন হবে না।
এছাড়া ঈদের সাধারণ ছুটি শেষ হওয়ার পর ১৪ আগস্ট (বুধবার) অফিস খোলা থাকলেও ডিএসইর পর্ষদ এ দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন না করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর এর পরের দিন ১৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) জাতীয় শোক দিবসের ছুটি। আর এই ছুটির পর ১৬ ও ১৭ (শুক্র ও শনিবার) দুইদিন সাপ্তাহিক ছুটি। এজন্য টানা ৯ দিন বন্ধ থাকছে দেশের শেয়ারবাজার।
টানা নয়দিন ধরে শেয়ারবাজার বন্ধ থাকার পর এখন তাদের প্রত্যাশা সম্পর্কে এক বিনিয়োগকারী বলেন, কয়েক মাস ধরেই শেয়াবাজারে মন্দাভাব বিরাজ করছে। কিন্তু এই মন্দাভাবের কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। দেশে কোনো হরতাল, অবরোধ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা নেই। অর্থনীতেও মন্দা নেই। তাহলে শেয়ারবাজারে কেন মন্দা থাকবে? কোনো চক্র পরিকল্পিতভাবে শেয়ারবাজার নিয়ে খেলছে কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত।
সম্প্রতি এই বাজারে যে নীরব দরপতন হয়েছে তা ২০১০ সালের মহাধসের থেকে কোনো অংশ কম না উল্লেখ করে আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, শেয়ারবাজারে এমন ভয়াবহ দরপতনের কোন যুক্তি সংগত কারণ নেই। আমাদের প্রত্যাশা সামনে বাজার ভালো হবে। এই বাজার ভালো হতেই হবে। তা না হলে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে যাবে।
শেয়ারবাজারে টানা দরপতনের প্রতিবাদে ঈদের আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ করেন। পাশাপাশি গণফোরামের পক্ষে থেকেও মানববন্ধন ও প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
গণফোরামের পক্ষে থেকে ওই মানববন্ধন ও প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজদের অবিলম্বে বহিষ্কার ও গ্রেফতার দাবি জানিয়ে অভিযোগ করা হয়।
এদিকে তাদের এই মানববন্ধনের বিপরীতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে শেয়ারবাজারে দরপতনের প্রতিবাদে ব্যানার, ফেস্টুন এবং প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ বন্ধের দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে পুঁজিবাজারের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও সহায়তা চাওয়া হয়।
ডিএসইর পক্ষ থেকে বলা হয়, স্বল্প সংখ্যক বিনিয়োগকারী ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে ব্যানার,ফেস্টুন এবং প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধন করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছেন। এ বিক্ষোভের ফলে দেশ ও বিদেশে আমাদের পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। পুঁজিবাজারের ধর্মই হলো উত্থান ও পতন। পুঁজিবাজারের ব্যাপ্তি বেড়েছে। যে কেউ ইচ্ছে করলেই এ বাজারকে প্রভাবিত করতে পারবে সে ধারণাও সঠিক নয়।
সেখানে আরও বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের উন্নত স্টক এক্সচেঞ্জের সাথে তাল মিলিয়ে চলার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এ উদীয়মান পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হোক তা আমাদের কাম্য নয়। এ ধরনের বিক্ষোভের ফলে নতুন বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে আসার উৎসাহ হারিয়ে ফেলে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগে অনুৎসাহিত হয়।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড