অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিরা যে পরিমাণ টাকা রেখেছেন, তার ৯৭ শতাংশই বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। আর বাকি ৩ শতাংশ ব্যক্তি পর্যায়ের বিভিন্ন গ্রাহকের যাদের মধ্যে অনিবাসী বাংলাদেশিও রয়েছেন। বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কর্মকর্তারা সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদন-২০১৮ পর্যালোচনায় এ তথ্য পেয়েছেন।
তবে সুইস ব্যাংকে এককভাবে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কত টাকা জমা আছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। এমনকি বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডে সরাসরি কোনো টাকা পাঠানো হয়েছে কি না সে বিষয়েও অন্ধকারে বিএফআইইউ।
বিএফআইইউয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সুইস ব্যাংকে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা বাড়ছে। তবে ব্যক্তি খাতের আমানত কমছে। গ্রাহকের তথ্য জানানোর ক্ষেত্রে আগের চেয়ে গোপনীয়তা কমায় ব্যক্তি আমানত কমতে পারে।
সম্প্রতি দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বিভিন্ন দেশের আমানতের পরিমাণ নিয়ে ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে ২০১৮ সালে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। আগের বছর যার পরিমাণ ছিল চার হাজার ৬৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে জমা বেড়েছে এক হাজার ২৭৪ কোটি টাকা।
সুইস ব্যাংকের ঘোষণা অনুযায়ী, কোনো বাংলাদেশি নাগরিকত্ব গোপন রেখে অর্থ জমা রেখে থাকলে, সে অর্থ এ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে প্রতিবেদনে গচ্ছিত রাখা স্বর্ণ বা মূল্যবান সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমানও হিসাব করা হয়নি ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশিদের আমানতের মধ্যে পাঁচ হাজার ১৮২ কোটি টাকাই বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। বাকি ১৬০ কোটি টাকা বাংলাদেশি নাগরিক ও অনিবাসী বাংলাদেশিদের। অনেক বাংলাদেশি আছেন যাঁদের বিদেশে বৈধ ব্যবসা রয়েছে, তাঁদের আয়ের একটি অংশও সুইস ব্যাংকে জমা থাকতে পারে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিএফআইইউ প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, বাংলাদেশিদের আমানত নিয়ে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে যে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, এর সব অর্থ কিন্তু পাচারের টাকা নয়। সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের অফিশিয়াল ও ব্যাংকিং চ্যানেল যত লেনদেন আছে, তাও এখানে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশিদের আমানত ফেরত আনার ব্যাপারে তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে কোনো কেস চলমান থাকলে বা কারো বিরুদ্ধে সন্দেহ হলে তা তদন্তের স্বার্থে আমরা তথ্য চেয়ে আবেদন করি। এগমন্ট গ্রুপের সদস্য হিসেবে সেটা সরবরাহ করার নিয়মও রয়েছে। কিন্তু ব্যক্তির পুরো পরিচয় ধরে তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। এর আগেও কয়েকটা কেসের ক্ষেত্রে তথ্য চেয়ে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু অসম্পূর্ণ তথ্য কিংবা তথ্য নেই এই বলে তারা তা সরবরাহ করেনি।
তিনি আরও বলেন, সুইজারল্যান্ড আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে তাঁর কাছে রক্ষিত তথ্যের ভিত্তিতেই কেবল তথ্য সরবরাহ করে থাকে, অন্য কারো কাছ থেকে তথ্য চেয়ে এনে দিতে পারে না। এজন্য সুইজারল্যান্ড আন্তর্জাতিক চাপে আছে। তাদের আইন সংশোধনের জন্য কিছু সময়ও তাদের দেওয়া আছে।
তবে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমার পরিমাণ বাড়লেও ভারতের এই অর্থের পরিমাণ কমেছে। ভারতের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের অর্থ পাচারসংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদান নিয়ে একটি এমওইউও রয়েছে।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড