• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে বৈদেশিক বাণিজ্যের তিন খাত 

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

১৭ জুলাই ২০১৯, ০৯:০৫
বাংলাদেশ ব্যাংক

আগের চেয়ে দেশের রপ্তানি আয় কমেছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে আমদানি ব্যয়ও কমেছে। পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের প্রবাহও সন্তোষজনক নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বৈদেশিক বাণিজ্যের তিন খাতেই নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত অর্থবছরের জুনে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়ায় ৫.২৭ শতাংশে এবং রেমিটেন্সের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়ায় ১.১৭ শতাংশে। আর মে মাসে আমদানিতেও প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে ৮.৪৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ড. জায়েদ বখত এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সামনে কোরবানি, তাই হতো প্রবাসীরা এখন একটু কম টাকা পাঠাচ্ছেন। এজন্য রেমিটেন্সের প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় শিপমেন্ট কমে গেলে রপ্তানি তার প্রভাব পড়ে। তবে খাদ্য উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার কারণে খাদ্যশস্য আমদানি কমেছে, ফলে আমদানি ব্যয় কমে গেছে। বড় বড় প্রকল্পের জন্য সরকারের আগের মতো আমদানি করতে হচ্ছে না। আবার টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানিতে বেশি অর্থ খরচ হচ্ছে। ফলে অনেকেই আমদানিতে অনুৎসাহিত হচ্ছেন। তাই আমদানি ব্যয় কমে গেছে।’

গত জুনে ৩৬০ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি আয় হয়েছে ২৭৮ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। ফলে জুনে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় কমেছে ২২.৬৫ শতাংশ। আর গত বছরের জুনে রপ্তানি আয় হয়েছিল ২৯৩ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, পণ্য রপ্তানি করে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ডলার আয় হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তার পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৬৬৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার। এ সময়ে মোট রপ্তানি আয়ে পোশাকের অবদান ছিল ৮৪ শতাংশের বেশি। তবে হোমটেক্স, টেরিটাওয়েলসহ এ খাতের অন্যান্য রপ্তানির উপখাত হিসাব করলে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮৯ শতাংশেরও বেশি হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আরও জানা গেছে, ২০১৯ সালের জুনে রেমিটেন্সের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাইনাস ১.১৭ শতাংশ। আর ২০১৮ সালের জুনে প্রবাসীরা ১৩৮ কোটি ৪৩ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিল। আর এই জুনে প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন ১৩৬ কোটি ৮২ লাখ ডলার।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্সকে অন্যতম চালিকাশক্তি মনে করা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রবাসীরা এই জুন শেষে এক হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন, গত অর্থবছরের চেয়ে যা ৯.৬০ শতাংশ বেশি। রেমিটেন্স থেকে গত অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি কোটি ১৬ লাখ ডলার আয় হয়েছিল।

সেখানে আরও বলা হয়েছে, আমদানি বাণিজ্যে মে মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাইনাস ৮.৪৫ শতাংশ। আর এপ্রিলে আমদানি বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাইনাস ৬.১২ শতাংশ।

এছাড়া ২০১৮ সালের মে মাসে আমদানিতে ৫৫৯ কোটি ৭৩ লাখ ডলার ব্যয় হয়েছিল। ২০১৯ সালের একই সময়ে এই ব্যয়ের পরিমাণ ৫১২ কোটি ৪৪ লাখ ডলার।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর মার্চে আমদানি ব্যয় হয়েছিল ৪৮৯ কোটি ৩৬ লাখ ডলার । ২০১৮ সালের একই সময়ে আমদানি ব্যয় হয়েছে ৪৮৪ কোটি ২০ লাখ ডলার।

বর্তমানে দেশের ভেতরের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে চাল ও গম আমদানি কমেছে। জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে চাল ও গম আমদানির জন্য লেটার অব ক্রেডিট বা এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ৬২.৫৯ শতাংশ। এলসি নিষ্পত্তি কমেছে ৫৩.৭১ শতাংশ। আর শিল্পের জন্য ক্যাপিটাল মেশিনারির এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ৩০.২৫ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এ সময়ে সার্বিক এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ১৭.৫০ শতাংশ। তবে সার্বিক এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে ৫.৮৩ শতাংশ।

ওডি/টিএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড