অধিকার ডেস্ক
প্রতিবছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবারে ঘটা করে বিশ্ব ডিম দিবস পালন করে বাংলাদেশ। গতবারের বিশ্ব ডিম দিবসের স্লোগান ছিল ‘সুস্থ সবল জাতি চাই, সব বয়সে ডিম খাই’। তবে বাজারে ডিমের দাম যেভাবে লাফিয়ে বাড়ছে, তাতে ডিম খেয়ে কতটা সুস্থ-সবল থাকা যাবে; এ ব্যাপারে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। খবর লন্ডন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলা।
ঢাকার শাহজাদপুরের বাসিন্দা ও ব্যাংক কর্মকর্তা মুরাদ সালাউদ্দিন বলেন, আমি বাসার কাছের দোকান থেকে সপ্তাহখানেক আগে ১০০ টাকা দিয়ে এক ডজন ডিম কিনেছি। আজ (৭ জুলাই) ওই দোকানিই এক ডজন ডিমের দাম চেয়েছেন ১২৫ টাকা।
অথচ গত বছর বিশ্ব ডিম দিবসে মানুষকে ডিম খেতে উদ্বুদ্ধ করতে রাজধানীর খামারবাড়িতে ৩ টাকা পিস ধরে ডিম বিক্রির আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল ও সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের হিসাব মতে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে এক হাজার ৫৫০ কোটি পিস ডিম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে এক হাজার ৫৫১ কোটি ৬৬ লাখ পিস। সরকারি-বেসরকারি খামারগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় আড়াই কোটি ডিম উৎপাদন হয়। অথচ ডিমের দাম বাড়তে বাড়তে এখন প্রতি পিস ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকার নিকেতনের বাসিন্দা দিলশাদ হোসেন বলেন, শনিবার (৬ জুলাই) দোকান থেকে এক ডজন ডিম কিনেছি ১২০ টাকা দিয়ে। পাঁচ দিন আগে ওই দোকানিই এক ডজন ডিমের দাম রেখেছিলেন ১০৫ টাকা। ডিমের দাম মনিটরিংয়ের কেউ আছে বলে মনে হয় না। ইচ্ছা মতো দাম রাখা হচ্ছে। আমাদেরও কিছু করার উপায় নেই।
তিনি বলেন, পুষ্টির বিবেচনায় ডিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পাওয়া সত্যিই সমস্যা।
কেন বাড়ছে ডিমের দাম
গাজীপুরের খামার মালিক ও পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মো. মহসিন বলেন, দুই কারণে এবার ডিম উৎপাদন ৪০ ভাগ কমেছে। এবার বেশ কিছু জেলায় অস্বাভাবিক গরমে অনেক লেয়ার মুরগি মারা গেছে। তাছাড়া এভিয়েন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছে অনেক খামারের মুরগি। মুরগির খাবারের কিছু উপকরণ আমদানিতে কিছু পরিবর্তন এসেছে। এ কারণেও খামারগুলোকে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ডিমের দাম কমবে।
খামার পর্যায়ে দাম কেমন?
রাজধানীর পুরনো রমনা থানার কাছের দোকানি লিটন জানান, এখন তিনি প্রতি ডজন ডিমের দাম ১১৫ থেকে ১২০ টাকা রাখছেন।
তিনি বলেন, ডিমের পাইকারদের থেকে বেশি দাম কিনতে হয়। বাজারে নাকি সাপ্লাই কম, এ কারণে বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হয় বলেই দাম বেড়েছে।
কিন্তু খামারিরা ডিম কত দরে বিক্রি করছেন- জবাবে খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মো. মহসিন বলছেন, রবিবার নাগাদ খামার পর্যায়ে লাল ডিম ৮ টাকা ত্রিশ পয়সা আর সাদা ডিম ৮ টাকা পাঁচ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে অঞ্চল হিসেবে ডিমের দামে কিছুটা কম-বেশির তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ (বিপিকেআরজেপি) ও পোল্ট্রি প্রফেশনালস বাংলাদেশ (পিপিবি।
তাদের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী রাজধানীতে সাদা ডিম শনিবারে পাইকারি বাজারে ৮ টাকা ষাট পয়সা, চট্টগ্রামে পাওয়া গেছে এর চেয়ে ১০ পয়সা কম দামে। এ দিকে যশোরে ছিল ৮ টাকা ৮০ পয়সা।
ওডি/এমআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড