• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বৈশাখের পোশাক তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে কারিগরদের

  চৌহালী প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ

০৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৫৫
সিরাজগঞ্জ
বৈশাখী পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর (ছবি : দৈনিক অধিকার)

বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। এ উৎসবকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ এনায়েতপুরের তাঁতিরা বাহারি ডিজাইনের বৈশাখী পোশাক উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছে।

শ্রমিক-কর্মচারীদের পাশাপাশি বাড়ির সবাই এখন ব্যস্ত এ কাজে। পহেলা বৈশাখে সিরাজগঞ্জের শাড়ির ব্যাপক সুনাম ও চাহিদা থাকায় শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, ফতুয়াসহ অন্যান্য বৈশাখী পোশাক তৈরিতে তাঁত পল্লীর পাশাপাশি প্রিন্টিং কারখানার শ্রমিকদের বিশ্রামের সুযোগ নেই।

তারা দিনরাত নতুন নতুন ডিজাইনের বিভিন্ন সাইজের শাড়ি ও লুঙ্গিসহ পোশাক প্রিন্ট করছে। এনায়েতপুরের খামারগ্রাম, বেতিল গোপালপুর, গোপরেখী, গোপিনাথপুর ও শিবপুর, রুপনাইন, খুকনীসহ এলাকার প্রায় ৬৫টি কারখানায় চলছে বৈশাখী শাড়ি তৈরির কাজ। এছাড়া লাল পাইড় সাদা শাড়িতে বাংলার ঐতিহ্য ঢোল, ডুগি-তবলা, একতারা, দোতারা, হাতি-ঘোড়া, পলো, ইলিশ, নৌকা, ধানের শীষ, লাঙল, হাত পাখা, ঘুড়িসহ নানা ধরনের আলপনা আঁকা হচ্ছে। লুঙ্গি, থ্রি-পিছ ও ফতুয়া প্রিন্টের কাজে এবং রঙতুলির আচরে তুলে ধরা হচ্ছে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐহিত্য ও সংস্কৃতি।

এনায়েতপুরের খুকনীতে অবস্থিত ফিরোজ ইউভিং ফ্যাক্টরি লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী হাজী ফিরোজ হাসান অনিক জানান, সারা বছর কাজ চললেও পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে তাদের দম ফেলানোর সুযোগ নেই। অতিরিক্ত চাহিদা অনুযায়ী ঢাকা ও গাজীপুরে কাপড় সরবরাহ করেছি। অন্য বছরের তুলনায় এবার ব্যবসা ভালো পাচ্ছি। কারণ এখানকার উৎপাদিত শাড়ি ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান দখল করে নিয়েছে। প্রকারভেদে বৈশাখী শাড়ি ৩শ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিনে ফিরোজ ইউভিং ফ্যাক্টরি শাড়ি প্রিন্ট কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, শ্রমিকরা কাপড়ে লাল, নীল, হলুদ রঙের কাজ করছে, অন্যরা রোদে কাপড় শুকাচ্ছেন।

কারখানার শ্রমিক জাহিদ হাসান, দুলাল মিয়া ও মোস্তফার সাথে কথা হলে বলে জানা গেছে, পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে মহাজনদের কাপড়ের অতিরিক্ত অর্ডার থাকায় ভোর থেকে রাত অবধি কাজ করতে হয়। পহেলা বৈশাখের ২ সপ্তাহ আগে থেকে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন রঙের মিক্সিার করে আলপনা প্রিন্টিংসহ শুধু কাজ আর কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয়ে। এতে একটু কষ্ট হলেও রোজগার বেশি হওয়ায় আমরা খুশি।

এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের সর্ববৃহৎ এনায়েতপুর কাপড়ের হাট ছিল বৈশাখী শাড়ির দখলে। চারিদিকে শুধু বৈশাখী শাড়ি আর শাড়ি। প্রিন্ট করা শাড়ির গায়ে নানা রং-বে- রঙের গ্রামীণ বৈচিত্রময় বিভিন্ন ধরণের চিত্র স্থান পায়।

এনায়েতপুর কাপড়ের হাটে আসা শাড়ি কুঠিরের মালিক সোহেল রানা জানান, তিন সপ্তাহ আগেই বৈশাখী শাড়ি বিক্রি শুরু হয়েছে। সারা দেশে থেকে পাইকাররা এ হাটে শাড়ি কিনতে আসে। এ বছর সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে প্রায় শতকোটি টাকার বৈশাখী শাড়ি-লুঙ্গি বিক্রি হবে বলে আশা করছি।

তিনি আরও জানান, এনায়েতপুর-বেলকুচিতে তৈরি বৈশাখী শাড়ি দেশের চাহিদা পূরণ করে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ইতোমধ্যে বিদেশি পাইকারি ক্রেতারা বৈশাখী শাড়ি লুঙ্গি কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

ওডি/এমবি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড