• বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আজ কৃষিবিদ দিবস

  আকাশ বাসফোর

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:৫০
কৃষিবিদ দিবস
কৃষিবিদ দিবস উদযাপন (ছবি : সংগৃহীত)

আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি। কৃষিবিদ দিবস। আজকের দিনে কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদায় উন্নীত করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কৃষি শিক্ষা ও কৃষিবিদদের যথাযথ মূল্যায়নের ঐতিহাসিক ঘোষণাটি তিনি ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে দিয়েছিলেন। এ ঘোষণার ফলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ দেশের অর্থনীতিতে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়েছে দেশের কৃষিবিদরা।

বঙ্গবন্ধুর এই স্বীকৃতিস্বরূপ পর থেকে কৃষিবিদরা প্রত্যেক বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারিকে ‘কৃষিবিদ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। বঙ্গবন্ধু খুব ভালো করেই জানতেন যে, কৃষিপ্রধান দেশে বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন ছাড়া কিছুতেই সোনার বাংলা গড়া সম্ভব নয়। তাই তিনি তার শাসনামলে কৃষি খাতকে সচল ও মজবুত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে গ্রহণ করেছিলেন বিপুল কাঠামোগত ও নীতিগত সংস্কারের উদ্যোগ।

স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গেই বিধ্বস্ত অর্থনীতির মধ্যে বঙ্গবন্ধু গ্রামের লাখ লাখ চাষি পরিবারকে পুনর্বাসনের কাজে হাত দেন। তাদের বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক ও আনুষঙ্গিক উপকরণ সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার কারিগর হিসেবে কৃষিবিদদের ভূমিকার তাৎপর্য অনুধাবন করে কৃষিবিদদের যথোপযুক্ত মর্যাদা প্রদান করে দেশ গড়ার কাজে উৎসাহিত করেছিলেন।

জাতির জনক প্রদত্ত সেই মর্যাদা এ দেশের কৃষিবিদ সমাজে আজও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে প্রবলভাবে অনুপ্রাণিত করে। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের নীতি ও বিনিয়োগের কারণে আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। শাকসবজি ও ফলমূলের সঙ্গে সম্প্রতি আলু রপ্তানি বাংলাদেশের কৃষির উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।

স্নাতক শেষ করে চাকরিতে যোগদানের সময় কৃষিবিদদের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হতো। ফলে চিকিৎসক এবং প্রকৌশলীদের মতো কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার মর্যাদা দেওয়ার দাবি ওঠতে থাকে স্বাধীনতার আগে থেকেই। স্বাধীনতার পরও তাদের এ দাবি অব্যাহত থাকে।

১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় কৃষিবিদদের দাবি মেনে নেন। ওই দিনই কৃষিবিদদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার পদমর্যাদায় উন্নীত করেন। কালের পরিক্রমায় কৃষি গ্রাজুয়েটরা তাদের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা মোতাবেক দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। যদিও কৃষি গ্রাজুয়েটদের ১৯৭৭ সালে তদানীন্তন সরকার একধাপ নিচে নামিয়ে দিয়েছিল, যা তীব্র আন্দোলনের ফলে বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল।

কৃষিবিদরা তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও দেশ ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারেনি। কারণ লোকসংখ্যা সাড়ে সাত কোটি থেকে ১৩ কোটিতে উন্নীত হয়েছিল। এ সমস্যা সমাধানে কৃষিবিদ ও কৃষকদের প্রয়োজনীয় সার, বীজ, তেল ও অন্যান্য সুবিধা না দেওয়ায় কাঙিক্ষত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়নি। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর কৃষি উন্নয়নে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত হয়।

সার, বীজ, সেচ ব্যবস্থা উন্নয়ন, খাদ্য মজুদ বৃদ্ধি, কৃষি পণ্যের সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাসহ কৃষি উন্নয়নে বিভিন্ন যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত হয়। ফলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর যারা ক্ষমতায় আসে, তারা আবার কৃষিবিদদের অবমূল্যায়ন করার চেষ্টা করে। এরপর বিভিন্ন ধারার রাজনীতির ডামাডোলে এই বিশেষ দিনটিকে মনে করার কোনো ব্যবস্থা করা যায়নি। অবশেষে ‘কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ’ এর তৎকালীন মহাসচিব ও বর্তমান সভাপতি কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের একান্ত চেষ্টায় এই দিনটিকে ‘কৃষিবিদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

লেখক : শিক্ষার্থী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড